চাঁদপুর

চাঁদপুরে থানায় লাশঘর, গাড়ি ও বডিব্যাগ সংকটে নষ্ট হচ্ছে আলামত

নানামুখী সংকটে রয়েছে চাঁদপুর মডেল থানাসহ জেলার সব থানা পুলিশ। জোড়াতালি দিয়ে চলছে চাঁদপুরের তানাগুলোর বিভিন্ন দৈনন্দিন কার্যক্রম। বিশেষ করে মরদেহ উদ্ধার, সংরক্ষণের জন্য লাশঘর এবং মর্গে পৌঁছানোর সর্বনি¤œ সুযোগ সুবিধাও নেই। চাঁদপুর জেলার কোন থানাতেই লাশবাহী গাড়ি নেই। নেই লাশের বডিব্যাগ এবং লাশঘর।

নেই কোন সরকারি নিয়োগকৃত ডোম। লাশবাহী গাড়ি, ডোম এবং বডিব্যাগের সংকটে রয়েছে থানাগুলো। একদিকে টানা-হেঁচড়ায় মরদেহ বিকৃত হচ্ছে। অন্যদিকে লাশঘর না থাকায় অরক্ষিত ভাবে পগে থাকে মরদেহ। আর এতে করে লাশ বিকৃত হওয়ায় নষ্ট হচ্ছে ঘটনার আলামত। এসব তথ্য থানার সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

চাঁদপুর শহরসহ অন্য উপজেলার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে পেরে উঠছে না পুলিশ। চাঁদপুরে পুলিশের যে জনবল রয়েছে তা দিয়ে পুরো কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। চাঁদপুর ছাড়া অন্য কিছু জেলায় বেশকিছু লাশবাহী গাড়ি এবং ডোম ও বডিব্যাগ কেনা হয়েছে। তবে চাঁদপুর জেলায় এখনো পর্যন্ত ডোম, লাশের গাড়ি ও বডিব্যাগ সংকট রয়েছে বলে জানা গেছে। অন্যসব থানা থেকে চাঁদপুর মডেল থানা পরিবেশ উন্নত হলেও কিছু কিছু স্থানে সংকট থাকার কারনে সেবার মান পরিপূর্ণ হচ্ছে না।

জানা গেছে, চাঁদপুরের কোথাও না কোথাও প্রতিদিনই অঘটন ঘটছে। খুন, দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও আত্মহত্যার ঘটনায় পুলিশকে লাশ টানতে হলেও এ জন্য পুলিশের নিজস্ব বাহন ও ডোম নেই ।

ঘটনাস্থল থেকে থানা হয়ে মর্গ পর্যন্ত রিক্যুইজিশন করা গাড়ি কিংবা পুরনো একটি ভ্যান এখনো পুলিশের শেষ ভরসা।

জেলার থানাগুলোয় লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠাতে তদন্তকারী কর্মকর্তা অনেক সময় গাড়ি ভাড়া করলেও শহরের মধ্যে বিভিন্ন ঘটনার লাশ থানায় আনা হয় ভাড়া করা রিক্সা বা ভ্যান দিয়ে। অপরদিকে বডিব্যাগ না থাকায় মরদেহটি কোন ভাবে হোগলা বা কাপড় পেচিয়ে থানায় আনা হয়। এরপর অরক্ষিত ভাবে পড়ে থাকে মরদেহ।

থানার দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক (এসআইরা) জানান, দেশের প্রায় থানাতেই লাশবাহী গাড়ি, ডোম ও বডিব্যাগ সংকটের একই অবস্থা বিরাজ করছে।

এ নিয়ে আমরা বেকায়দায় পড়তে হয়। গাড়ির অভাবে ঠিকভাবে লাশ থানায় বা মর্গে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। ভাড়া করা রিকশা ও ভ্যানে করে লাশ বহন করতে হচ্ছে পুলিশকে। অযতœ-অবহেলায় ও টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হয় লাশ। থানায় লাশ ঘর না থাকার কারনে অনেক সময় টানা-হেঁচড়ার কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে লাশের আলামত।

আলামত সংরক্ষণের অভাবে মামলায় রায় চলে যাচ্ছে ভিন্ন খাতে। চাঁদপুর সবগুলোর থানার ওসিরা বলেছেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে প্রতিটি থানায় একটি করে লাশবাহী গাড়ি, বিডব্যাগ এবং লাশ ঘরের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ওয়ালী উল্লাহ অলী বলেন, চাঁদপুরে খুন, দুর্ঘটনায় মৃত্যু ও আত্মহত্যার ঘটনায় পুলিশ যে লাশটি থানায় নিয়ে আসবে তার জন্য লাশবাহী গাড়ি, ডোম, বডিব্যাগ এবং সবশেষ থানায় নেই লাশ ঘর। মামলা প্রক্রিয়ার কারনে লাশ ময়না তদন্ত করতে সময় লাগছে। এজন্য লাশ হেফাজতে রাখার জন্য একটি লাশ ঘর প্রয়োজন। থানায় বেসরকারি ভাবে একজন ডোম কাজ করছে কিন্তু সে শুধু লাশ বহন করে অন্যসব কাজ তাকে দিয়ে করানো যায় না।

তিনি আরো বলেন, লাশের বডিব্যাগ ও থানায় লাশঘর না থাকার কারনে ঝড়-বৃষ্ঠি কারনে লাশ অরক্ষিত থাকে। শীত এবং গরমের চাপে অনেক সময় লাশ বিকৃত হয়ে যায়। যার ফলে লাশের আলামত নষ্ট হয়ে যায়। এ জন্য চাঁদপুর মডেল থানাসহ জেলার সব থানাগুলোতে লাশবাহী গাড়ি, ডোম, বডিব্যাগ এবং লাশ ঘর প্রয়োজন। সবার আগে একটি লাশ কর। এটি থাকলে লাশটি হেফাজতে রাখা যায়।

প্রতিবেদক- শরীফুল ইসলাম

Share