চাঁদপুর সদর

চাঁদপুরে ডাকাতিয়া নদীর ভাঙ্গনে বিলিন হচ্ছে ঘর বাড়ি

চাঁদপুর সদর উপজেলার ৮নং বাগাদী ইউনিয়নের সাহেব বাজারস্থ হাজরা গ্রামে ডাকাতিয়া নদীতে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে ভাঙ্গনের রূপ এখন ভয়াবহ আকার ধারন করেছে। ওই গ্রামের কয়েকটি বাড়ি ঘর নদীর গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।

জানাযায়, গত কদিন ধরে নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এখন ওই গ্রামের হাজরা মিজি বাড়ির কাছে প্রায় ১ হাজার ফুট জায়গা জুড়ে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। তাই ওই বাড়ির অসহায় মানুষজন ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পেতে ধীরে ধীরে তাদের বাড়িঘর সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয় এলাকার আলী আহম্মদ মিজি, মহসিন মিজি, মানিক মিজি, রফিক মিজি, বিউটি বেগম, পেয়ারা বেগম ও তাসলিমা বেগমসহ একাধিক ব্যাক্তি জানান, কয়েক বছর আগে থেকে সাহেব বাজার এলাকার হাজরা গ্রামে ডাকাতিয়া নদীর ভাঙ্গন শুরু হয়। সেই থেকে আস্তে আস্তে নদীর ভাঙ্গনে ওই এলাকার মিনহাজ উদ্দিন গাজী বাড়ি, ফজর আলী গাজী বাড়ি এবং গাজী বাড়িসহ কয়েকটি বাড়ি নদীর ভাঙ্গনে বিলিন হয়ে গেছে। আর নদীর এমন ভাঙ্গনের মূল কারন , নানুপুর সুইচ গেটের কারনে বলে তারা জানিয়েছেন। এলাকাবাসি জানান, হাজরা গ্রাম ও তাদের বাড়িটি সুইচ গেটের সোজাসুজি হওয়ায় যখন সুইচ গেটের পানি ছাড়া হয় তখন ওই পানির স্রোত সেখানে গিয়ে সংযত হয়। সুইচ গেটের পানির স্রোতের কারনেই তাদের এলাকায় এমন ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

বর্তমানে যেভাবে ভাঙ্গন শুরু হয়েছে মানুষজন বসতঘর কোনো রকমে সরিয়ে নিতে পারছে। ভাঙ্গনে গ্রামটি যে কোনো মুহূর্তে বিলীন হয়ে যেতে পারে। পূর্বে ডাকাতিয়ার ভাঙ্গনে গ্রামের বহু ফসলি জমি, বসতঘর, রান্নাঘর ও গোয়ালঘর ডাকাতিয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। অনেক পরিবার সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে তারা সম্পত্তি হারিয়ে খেয়ে না-খেয়ে কোনো রকম জীবনযাপন করে বেঁচে আছে।
এদিকে সাহেব বাজারস্থ হাজরা গ্রামে ডাকাতিয়ার এমন ভাঙ্গন রক্ষায় মানববন্ধন ও গনসাক্ষর গ্রহন করেছে এলাকাবাসি। ১৯ জুলাই বৃহস্পতিবার দুপুরে ভাঙ্গন কবলিতস্থানে ওই এলাকার নারী-পুরুষ মিলে মানববন্ধন ও একাধিক গনসাক্ষর গ্রহন করেন ।

স্থানীয়রা আরো জানান, প্রায় ৩ বছর পূর্বে হাজরা গ্রামের এই ভাঙ্গনের স্থানটি বাঁধাই করার জন্য চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোডে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্ধ হয়। কিন্তু কোন কারনে ওই সময় চাঁদপুরের অন্যন্যা বাজেটের সাথে বরাদ্ধকৃত ওই ২৫ লাখ টাকাও ফেরত চলে যায়। যার কারনে ভাঙ্গনের স্থানটি রক্ষার জন্য আজো কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

ইউপি সদস্য মোঃ মুনছুর খান বলেন, হাজরা গ্রামবাসী খেটে খাওয়া মানুষ। গ্রামবাসীর পক্ষে এ ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা সম্ভব না। সরকারি সহযোগিতা পেলেই নিরীহ গ্রামবাসী নদী ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে।

এ ব্যাপারে পাউবো নির্বাহী উপ সহকারী প্রকৌশলী ও শাখা কর্মকর্তা মোঃ ওয়াহিদুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, নদী ভাঙ্গনের বিষয়টি এলাকাবাসি আমাদেরকে জানিয়েছেন। তা প্রতিরক্ষা মূলক কাজ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ও দরপত্র, প্রশাসনিক অনুমোদন প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহা পরিচালক বরাবর যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে লিখিত আবেদন করবো।

প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি

Share