চাঁদপুরে ডাকাতিয়া নদীতে ভাঙন, কবরস্থান বসতবাড়ি বিলীন

চাঁদপুর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড রঘুনাথপুর থেকে ঢালিঘাট পর্যন্ত নদীর তীরবর্তী বসতঘর কবরস্থান কৃষি জমি ভেঙ্গে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গনের কবলে পড়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে এলাকার শত শত মানুষ। যেকোনো মুহূর্তে বেরিবাঁধের রাস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ভাঙ্গন রক্ষায় এলাকার শতশত মানুষ নদীর পাড়ে এসে অবস্থান করে মানববন্ধনের পর বিক্ষোভ করেন।

দ্রুত ভাঙ্গন রক্ষায় প্রতিকার চেয়ে এলাকাবাসী চাঁদপুর জেলা প্রশাসক পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডব্লিউটির বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন।

পৌরসভার পাঁচ নং ওয়ার্ড ঢালীরঘাট কেশা গাজী, পাটোয়ারী বাড়ি, খেয়াঘাট, রঘুনাথপুর হাই স্কুল ও কাশেম পাটোয়ারী বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার মিটার এলাকায় মানুষের ভিটা বাড়ি কবরস্থান নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ডাকাতিয়া নদীর ভাঙনে ভয়াবহ রূপ নেওয়ায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে নদীর তীরবর্তী মানুষ। গত কয়েক দিনে ডাকাতিয়ার করালগ্রাসে তলিয়ে গেছে প্রায় ১০০০ মিটার এলাকা। ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে প্রায় ২০০০ হাজার পরিবার। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ভাগন থেকে রক্ষা পায়নি কবরস্থান কিছুদিন পূর্বে এক ব্যক্তিকে কবর দেওয়া হলেও নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় তার অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। চারটি কবরস্থান নদী করবে বিলীন হয়ে গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হঠাৎ ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়েছে এলাকাটি। ডাকাতিয়া নদী প্রতিবছর অল্প অল্প করে ভাঙে। গত এক দশকে শুধু রঘুনাথপুর ও ঢালীর ঘাট ডাকাতিয়া নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে প্রায় ২ কিলোমিটার এলাকার অসংখ্য বাড়িঘর ও ফসলি জমি। এত ক্ষতির পরও বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজর এড়িয়ে যায়। অচিরেই নদী ভাঙনরোধে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ভিটেমাটি হারিয়ে রাস্তায় ছিন্নমূল হয়ে পড়বে ঐ এলাকার নদীর পাশে বসবাসকারী হাজারো পরিবারকে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ‘প্রতি বছর নদী আমাদের জমি একটু একটু করে ভেঙে নিয়ে যায়। নদী ভাঙ্গনের বিষয়টি পানি উন্নয়ন ভোটকে অবগত করার পরেও তারা পদক্ষেপ নেয়নি। এর পূর্বে চাঁদপুরের সাবেক এমপি দীপু মনি ভাঙ্গন রক্ষায় আশ্বাস দিয়ে গেলও কার্যকর হয়নি। অল্প অল্প করে ভাঙে, তাই কেউ আমাদের দিকে নজর দেন না। গত ১০ বছরে আমাদের এলাকার প্রায় এক কিলোমিটারের মতো জমি নদীতে তলিয়ে গেছে। ছিন্নমুল হয়ে গেছে প্রায় শতাধিক পরিবার। এখন আমাদের ভিটেবাড়ি নদীতে তলিয়ে যাচ্ছে। বাড়িটা নদীতে তলিয়ে গেলে থাকবে কোথায় জানেনা কেউ। রাস্তায় এসে দাঁড়াতে হবে।’

এদিকে ডাকাতিয়া নদীর পাশেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, বাজারসহ অসংখ্য মানুষের ঘরবাড়ি। নদী ভাঙন রোধ না হলে হুমকির মুখে পড়বে এসব প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। তাই ক্ষতিগ্রস্তরা নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।

পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, চাঁদপুর পৌর এলাকার রঘুনাথপুর ও ঢালি ঘাট ডাকাতিয়া নদীর বেশ কয়েকটি এলাকা ভাঙনরোধে একটি ডিপিপি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। এটি পাশ হলেই ভাঙন রক্ষায় কাজ শুরু করা হবে।

প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

Share