মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে জনজীবন যখন অতিষ্ঠ, সেই মুহূর্তে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) সংকটের মধ্যেই রোগীর সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চাঁদপুরের অ্যাম্বুলেন্স চালকরা। রোগী বহনে ফোন এলেই দ্রুত ছুটে যান রোগী আনতে। চালকদের প্রধান সমস্যা হচ্ছে সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাব। তবে সুরক্ষা সরঞ্জামের অভাব থাকলেও মানবসেবা থেকে বিরত রাখতে পারেনি অনেক চালককে। অসুস্থদের বাড়ি থেকে হাসপাতালে পৌঁছানোর সেবা দিচ্ছেন তারা।
চাঁদপুর সদরে প্রায় ৫০টি’বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। এরমধ্যে চাঁদপুর সদর হাসাপতালের চত্বরে বেসরকারী প্রায় ৩০ টি অ্যাম্বুলেন্স রোগী বহন করে।
চাঁদপুর সদর হাসপাতালের বেসরকারী অ্যাম্বুলেন্স চালকরা জানান,আমরা দীর্ঘদিন ধরে অ্যাম্বুলেন্স চালাই। আমাদের পরিবারে স্ত্রী, সন্তান সবাই আমাদের নিয়ে আতঙ্কে দিন পাড় করছে। বিশজুড়ে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় পরিবারের লোকজন সব সময়ই আতঙ্কের মধ্যে থাকে। আমরা অ্যাম্বুলেন্সে বিভিন্ন হাসপাতালের রোগী বহনের পর রাতে যখন বাসায় ফিরি তখন আমাদের পরিবারের সদস্যরা কাছে আসতে ভয় পায়।
খুব কষ্ট হয় তখন। তারপরও আমরা রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছি। ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেও সরকার থেকে কোন সুরক্ষা সরঞ্জাম পাইনি”। আমারদের মত সদর হাসপাতালের সম্মুখে অন্য ড্রাইভারদেরও একই অবস্থা।
একাধিক চালকরা আরো বলেন, দেশে প্রতিদিনই করোনায় আক্রান্তর সংখ্যা বেড়েই চলছে। এর মধ্যে আক্রান্ত সংখ্যা বেশি হলো ঢাকায়। বেশি অসুস্থ এবং বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়া রোগীদের এখান থেকে চিকিৎসকরা ঢাকায় প্রেরন করেন তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য। রোগীদের ঢাকায় নিতে হলে আমাদের এখান থেকে এ্যাম্বুলেন্সে করে নিয়ে যেতে হয়। আর আমরা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই মুমুর্ষ রোগীদের ঢাকায় দিয়ে আসি। তারা আরো বলেন আমাদের এখানে মালিক সমিতি রয়েছে মাত্র নামে। তারা খুজে শুধু টাকা। আমাদের কথা কখনও চিন্তা করে না। তাদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত দেয়নি কোন পিপি অথবা সুরক্ষা সরঞ্জাম। শুধু তাই নয় এখন পর্যন্ত আমরা পায়নি কোন ত্রান।
এ ব্যাপারে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সদর হাসপাতালের সম্মুখে থাকা চাঁদপুর অ্যাম্বুলেন্স মালিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি মোঃ মাসুদ হোসেন সাগর বলেন, দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে অ্যাম্বুলেন্স চালকরা নিজেদের জীবন ঝুঁকিতে রেখে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে নিরলস ভাবে। সরকার, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি অথবা বিত্তশালী রাজনীতিবিদরা যদি আমাদের অ্যাম্বুলেন্স চালকদের সুবিধার জন্য সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই), মাস্ক, গ্লোপস, হ্যান্ডসেনিটাইজার দিতো তবে নিরাপদ থেকে রোগীদের সেবা দিতে পারতো তারা।
তিনি আরো বলেন, আমাদের ছোট সংগঠন। আমাদের দিকে একটু নজর দেওয়া উচিত, তিনি শিক্ষামন্ত্রী, চাঁদপুরের কৃতি সন্তান, ডাঃ দীপু মনি এমপি’র দৃষ্টি কামনা করছেন।
প্রতিবেদক:শরীফুল ইসলাম,১২ মে ২০২০