চাঁদপুরে প্রচন্ড তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরম অব্যাহত থাকায় জনজীবন একেবারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। প্রচন্ড তাপদাহে শুধু মানুষ নয়, প্রাণীকুল পর্যন্ত অস্থির হয়ে পড়েছে।
এমনকি মেঘের আনাগোনা থাকলেও বৃষ্টির লক্ষণ নেই। বিশেষ করে চরাঞ্চলে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি কষ্ট পাচ্ছে।
জ্যৈষ্ঠ মাস পড়লেও বৃষ্টি একেবারে না থাকায় প্রখর তাপ এবং ভ্যাপসা গরমে সকাল থেকে প্রয়োজন ছাড়া মানুষ কাজ ছাড়া বাইরে বের হচ্ছে না।
এমনকি কম সংখ্যক শ্রমিক কাজে যাচ্ছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে শহরের রাস্তাঘাট একেবারে ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে এবং মানুষ একেবারে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে।
অসহনীয় গরমে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্থবিরতা দেখা হয়েছে। চাঁদপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৮.৬ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
মানুষ তৃষ্ণা নিবারণে ডাব, শরবত, খাবার স্যালাইন, আইসক্রিম, শসা ও কলা কেনার দিকে ঝুঁকে পড়েছে। প্রচন্ড গরমে বিকেলে অনেকেই নদীতে ঘন্টার পর ঘন্টা গোসল করে। এছাড়া গরমে বেড়েছে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ। জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টজনি রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বৃদ্ধসহ শিশুরা।
সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে চরাঞ্চল বেষ্টিত রাজরাজেস্বর, ইব্রাহীমপুর, হানারচর, ঈশানবালা, আলুড়বাজারসহ বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলে। এসব ইউনিয়নে সকাল থেকে প্রখর সূর্যের তাপ এবং গরম-হাওয়া বয়ে যাওয়ায় খেটে খাওয়া মানুষরা পড়েছে বিপাকে।
চাঁদপুর সদরে প্রচন্ড তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে এখানকার জনজীবন। গরমের বিরূপ প্রভাব পড়েছে কর্মক্ষেত্রেও। দেখা দিয়েছে ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত নানা রোগের প্রাদুর্ভাব।
চাঁদপুর শহরে গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে লোড শেডিং চরম পর্যায়ে। প্রতিদিনই বেশ কয়েকবার করে বিদ্যুৎ চলে যায়। কখনো কখনো ২/৩ ঘন্টা পর্যন্ত বিদ্যুতের দেখা পাওয়া যায়না।
এতে চাঁদপুরের পুরাণবাজারসহ বিভিন্ন স্থানের শিল্পাঞ্চলে উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। অন্যদিকে প্রচন্ড খরতাপে কৃষি কাজে কৃষকদের মাঠে কাজ করা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। প্রচন্ড গরম আর বৃষ্টিপাত তুলনামুলক ভাবে না থাকায় সাধারণ মানুষের পাশাপাশি অতিষ্ঠ প্রাণিকুলও।
ভ্যাপসা গরমে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে। মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে দিনের স্বাভাবিক কাজ কর্ম। কর্মজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। হাট বাজারে টিনশেডের দোকানে বসে থাকা হয়েছে দুরূহ। তার ওপর লোড শেডিং সাধারণ মানুষকে অস্থির করে তুলেছে।
অনেক স্কুল, প্রাইভেট স্কুল ও কিন্ডার গার্ডেনে ফ্যান না থাকায় ছাত্র/ছাত্রীরা বিদ্যালয়ের বাইরে স্কুল ঘরের ছায়ায় অথবা গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে একটু স্বস্তি বোধ করছে।
পৌর শহর ও আশ পাশের দোকান গুলেতে ফ্রিজজাত বিভিন্ন জুস, আইসক্রীম ও পানীয় বিক্রি বেড়েছে আর এতে করে ইতিমধ্যেই ডায়রিয়ার পকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে উদ্বেগজনক হারে।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক গুলোতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে মানুষ ডায়রিয়ায় ও নিওমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।
অপর দিকে প্রচন্ড তাপদাহ চলতে থাকায় এলাকায় পানির লেয়ার নীচে নেমে যাওয়ায় অনেক টিউবওয়েলে অল্প অল্প করে পানি উঠছে। কোথাও কোথাও টিউবওয়েল একেবারেই অকেজো হয়ে পড়েছে।
সাধারণ মানুষের মধ্যে হাহাকার করতে শুরু করেছে।
আবহাওয়া বিভাগ বলছে এ তাপদাহ আগামি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত থাকতে পারে।
প্রতিবেদক- শরীফুল ইসলাম
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৯ : ১২ পিএম, ২৩ মে ২০১৭, মঙ্গলবার
ডিএইচ