Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে সম্রাট আওরঙ্গজেব আমলের মসজিদের সন্ধান লাভ
প্রাচীন মসজিদের

চাঁদপুরে সম্রাট আওরঙ্গজেব আমলের মসজিদের সন্ধান লাভ

চাঁদপুরে জঙ্গল পরিষ্কার করার সময় সম্রাট আওরঙ্গজেব আমলের প্রাচীন একটি মসজিদের সন্ধান পাওয়া গেছে । চাঁদপুর সদরের রামপুর ইউনিয়নে ছোটসুন্দর গ্রামের তালুকদার বাড়ি এলাকায় মসজিদটির অবস্থান রয়েছে। বুধবার (২৯ আগস্ট)বিকেলে মসজিদটির দৃশ্যমান হয়। বৃহস্পতিবার (৩০আগস্ট) শ্রমিকরা সেখানে কাজ করেন।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আল মামুন বলেন, ‘তথ্য পেয়ে আমি মসজিদটি দৃশ্যমান করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। পরে ভেতরে ঢুকে দেখি, এটি এক গম্বুজ বিশিষ্ট। দেয়াল ঘেঁষে চারপাশে চারটি ছোট মিনার রয়েছে। বাহিরের দৈর্ঘ্য ১৬ ফুট এবং প্রস্থ ১৫ ফুট। মসজিদটির ভেতরের দৈর্ঘ্য আট ফুট ১০ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৭ ফুট তিন ইঞ্চি। মসজিদটির একটি মেহরাব রয়েছে এবং দেয়ালে ছোট ছোট কয়েকটি খোঁপ রয়েছে। দেয়ালের পুরুত্ব ৩৩ ইঞ্চি। পোড়া ইট, বালি, চুনা এবং সুরকি দিয়ে মসজিদটি নির্মিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘এলাকার প্রয়াত মুরব্বিরা জানিয়েছিলেন সেখানে একটি পুরনো স্থাপনা আছে। কিন্তু কেউই সেখানে যেতেন না। কারণ, মসজিদটির ওপরে একটি বিশাল জীন গাছ ও তার শেকড়, বাঁশঝাড়, অন্যান্য বনলতা যা ভবনটির বাইরের অংশকে ঢেকে রেখেছিল। পরে আজিজ তালুকদার নামে এক ব্যক্তি ১০-১২ বছর আগে জীন গাছটি কেটে সেটি দৃশ্যমান করার উদ্যোগ নেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তা করতে পারেননি ।

কারণ, এটি এতোই ভেতরে ছিল যে; সম্পূর্ণ দৃশ্যমান করা তার একার পক্ষে সম্ভব ছিল না। তিনি অবশ্য স্থানীয় লোকজনকে স্থাপনাটি সম্পর্কে জানান। কিন্তু ভয়ে কেউ মসজিদটিকে দৃশ্যমান ও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন নি। সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও চাঁদপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ডা. দীপু মনি বিষয়টি জানার পর এটিকে দৃশ্যমান করার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।’

মসজিদটি নির্মাণের পরে পাকৃতিক দুর্যেোগ কিংবা অন্য কোনো কারণে স্থানীয়রা এলাকা ত্যাগ করায় এটি পরিত্যক্ত হয়ে জঙ্গলে রূপ নেয় বলে স্থানীয়দের ধারণা।

চাঁদপুর-৩ আসনের সাংসদ ডা. দীপু মনি বলেন, ‘৪-৫ বছর আগে কোনো একটি বইতে মসজিদটির বিষয়ে তথ্য পেয়েছিলাম। কিন্তু কোথায় তার অবস্থান সেটি ঠিক করতে পারিনি। মসজিদটি সংরক্ষণের বিষয়ে প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের সঙ্গে কথা বলবো।’

স্থানীয়রা জানান, ২০-২৫ বছর আগে এ মসজিদের পাঁচ কি.মি. দূরে উলিপুর গ্রামে একই রকম দু’টি মসজিদের সন্ধান পাওয়া যায়। নতুন মসজিদের গায়ে কোনো লেখা না পাওয়া গেলেও ওই দু’টি মসজিদের শিলালিপিতে সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলের কথা বলা হয়েছে। নতুন দৃশ্যমান মসজিদটি তিন শ’ বছর আগের বলে ধারণা স্থানীয়দের।

প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের ঢাকা জোনের পরিচালক রাখি রায় ওই গ্রামের সন্তান। তিনি জানান, জঙ্গল পরিষ্কারের আগে মঙ্গলবার(২৮ আগস্ট) স্থানীয় চেয়ারম্যান তাকে মসজিদ এলাকায় নিয়ে যান। মসজিদটি সুলতানি আমলের বলে ধারণা করছেন তিনি। স্থানীয় সংসদ সদস্য আবেদন করলে মসজিদটি সংরক্ষণ করা হবে বলেও জানান রাখি রায়।

এ ব্যাপারে চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো. শওকত ওসমান বলেন, ‘মসজিদটি সম্পর্কে আমরা অবহিত হয়েছি। শুক্রবার (৩১আগস্ট)এটি দেখতে যাবো। মসজিদটি রক্ষায় যা যা করণীয় তা করবো।’

বার্তা কক্ষ
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৮: ০০ পিএম,৩০ আগস্ট ২০১৮, বৃহস্পতিবার
এজি

Leave a Reply