Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে ছাদ থেকে লাফিয়ে নববধু’র আত্মহত্যার ঘটনায় ধুম্রজাল
sucide Style
প্রতীকী ছবি

চাঁদপুরে ছাদ থেকে লাফিয়ে নববধু’র আত্মহত্যার ঘটনায় ধুম্রজাল

চাঁদপুর শহরের ট্রাকরোড বটতলা এলাকায় নববধু রাহি আক্তার (২২) এর মৃত্যু নিয়ে ধু¤্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। ১৩ সেপ্টেম্বর বুধবার রাতে ওই এলাকার নববধুর শশুরালয় তাহের পাটওয়ারীর বাড়ির চারতলা ভবন থেকে সে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রথমে জানা গেলেও এ ঘটনাকে হত্যাকান্ড বলে দাবি করেছে তার পরিবার।

বিষয়টি পরিকল্পিত হত্যা কান্ড বলে রাহি আক্তারের পরিবার দাবি করে জানায়, যৌতুকের দশ লাখ টাকার জন্য তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হছে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছিলো। তবে এই ঘটনায় রাহির পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো থানায় মামলা করা হয়নি বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মহাবুবুর রহমান মোল্লা। এই ঘটনায় পুলিশ নববধু রাহি’র শাশু জিজ্ঞোসাবাদের জন্য ওর রাতেই চাঁদপুর মডেল থানায় নিয়ে যায়।

উভয় পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২৮ জুলাই হাজীগঞ্জ উপজেলার টোরাঘর গ্রামের মোহাইমেন ভূঁইয়ার কন্যা রাহি আক্তারের সাথে চাঁদপুর শহরের ট্রাকরোড় বটতলা এলাকার তাহের পাটওয়ারীর ছেলে মামুন পাটওয়ারীর সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। রাহি আক্তার চাঁদপুর সরকারি কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী। অপর দিকে তার স্বামী মামুন পাটওয়ারী ঢাকার একটি ট্রাবেল এজেন্সিতে কাজ করেন। ঘটনার দিন বুধবার সকালে মামুন পাটওয়ারী ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকা চলে যা।

এ বিষয়ে রাহির পিতা মোহাইমেন ভূঁইয়া, মামা মনির হোসেন ভূঁইয়া, খালু জাহাঙ্গীর আলম, চাচা মিজান ও চাচী তাসলিমা বেগম জানায়, বিয়ের পর থেকে বৌ-ভাতের অনুষ্ঠান করবে বলে মামুন, মামুনের পিতা তাহের পাটওয়ারী, বোন মুনমুনসহ পরিবারের লোকজন ১০ লক্ষ টাকার জন্য রাহিকে বেশকিছু দিন যাবত শারিরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করত। ছেলেকে মেয়ের সুখের জন্য বিয়ের সময় নগদ আড়াই লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। তারপরও ১০ লক্ষ টাকার জন্য রাহির উপর উপর অত্যাচার করত।
তারা আরোও জানায়, ঘটনার দিন সকালে মামুন ও পরিবারের অন্যান্যরা রাহিকে হত্যা করে বাড়ির সিড়ির নিচে ফেলে রাখে। পরে রাহির স্বামী মামুন নিজ কর্মস্থল ঢাকায় চলে যায়। রাহি আত্মহত্যা করেছে কিনা তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা জানায়, রাহি চাঁদপুর সরকারি কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী। রাহিকে শ্বশুড় বাড়ির লোকজন হত্যা করে এ আত্মহত্যার নাটক সাজানো হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান রাহির পরিবার।

রাহি আক্তারের শশুর আবু তাহের পাটওয়ারী জানায়, বুধবার রাত দশটার সময় তিনি মসজিদ থেকে এশা’র নামাজ আদায় শেষে বাড়ি ফিরছিলেন। বাড়ির কাছাকাছি আসতেই গেটের সামনের রাস্তায় মানুষের জটলা দেখতে পান। কাছে গিয়ে তিনি দেখতে পান তার নববিবাহিতা পুত্রবধুর রক্তাক্ত অবস্থায় বাড়ির সামনের রাস্তায় পড়ে আছে। খবর নিয়ে জানেন তার ছেলের বউ ছাদ লাফ দিয়েছেন। তাৎক্ষনাত তিনি অতিদ্রুত স্থানীয়দের সহায়তা পুত্রবধুকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতে নিয়ে যান। সেখানে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক রাহি আক্তারকে মৃত বলে জানায়।

তিনি আরো জানান, ঘটনার দিন সকালে মামুন ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরেছেন। নিজ বাড়ির ৪র্থ তলায় তিনি এবং তার বৃদ্ধা স্ত্রী ছাড়া অন্য কেউ থাকেন না।

কি কারণে চার তলা ভবন থেকে তার পুত্রবধু লাফিয়ে আত্মাহত্যা করেছে এ বিষয়ে তিনি কিছুই ধারণা করতে পারছেন না।

চাঁদপুর সদর মডেল থানা ওসি (তদন্ত) মাহাবুবুর রহমান মোল্লা জানায়, এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কোনো পক্ষই থানায় মামলা দায়ের করেনি। তাছাড়া কাউকে আটকও করা হয়নি। তবে ঘটনার রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাহির শশুর তাহের পাটওয়ীকে থানা আনা হয়েছিলো।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতারের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. নূরে আলম জানিয়েছেন, রাহীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তার নাকে ও মুখে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। ছাদ থেকে পড়ে হয়তো শরীরের ভেতরের অংশ থেঁতলে গেছে।

রাহি’র লাশ ময়না তদন্তের জন্য থানায় নিয়ে আসা চাঁদপুর সদর মডেল থানা উপ-পরিদর্শক (আসআই) মামুন খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে লাশ নিয়ে আসা হয়েছে, ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। ।

প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
: আপডেট, বাংলাদেশ ১১: ৪০ পিএম, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ বৃহস্পতিবার
ডিএইচ

Leave a Reply