শীর্ষ সংবাদ

ক্ষতিগ্রস্ত হয়েও চাঁদপুরে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন

চাঁদপুরের ৮ উপজেলায় ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে এবার আলু চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল ২ লাখ ৪৩ হাজার ৭শ’৬০ মে.টন। এতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১২ হাজার ১শ’ ৮৮ মে.টন।

চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, এবার চাষাবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ২ শ’ ৯০ হেক্টর। মৌসুমী বায়ূর প্রভাবে অনবরত ২-৩ দফায় প্রবল বৃষ্টিপাত হওয়ায় ৪ শ’ ৮৮ হেক্টর জমির উৎপাদিত প্রায় ৯ হাজার ৭শ’ মে.টন আলু ক্ষতিগ্রস্থ হয়েও ১২ হাজার ১শ’ ৮৮ হেক্টর জমিতে এবার উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৫৬ হাজার মে.টন।

চাঁদপুরের আলু চাষিরা বিভিন্ন জাতের আলু চাষাবাদ করে থাকে। কম-বেশি সব উপজেলাই আলুর ফলন ও চাষাবাদ হয়ে। বিগত ক’বছর ধরেই চাঁদপুরে ব্যাপক আলু উৎপাদন হচ্ছে ।

বিশেষ করে আলু উৎপাদনকারী অঞ্চল গুলোর মধ্যে হচ্ছে সফরমালী, মুন্সীরহাট, মতলব, নারায়ণপুর, কুমারডুগি, শাহাতলী, কেতুয়া, মতলব উত্তরও দক্ষিণ এলাকা।

চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে, চলতি বছরে চাঁদপুর জেলায় ব্যাপক আলু চাষাবাদ করা হয়েছে।

কয়েক জন কৃষকদের সাথে কাথা বলে তারা চাঁদপুর টাইমসকে জানা যায়, বর্তমানে কৃষকরা লাঙ্গলের পরিবর্তে ট্রাক্টর, হোচার পরিবর্তে বিদ্যুৎ চালিত স্যালো সেচ ব্যবস্থায়, কোনো কোনো চাষির গোবরের সারের পরিবর্তে বিভিন্ন প্রকার উন্নত রাসায়নিক সার ব্যবহার, উন্নত বীজ,পরিমিত কীটনাশকের ব্যবহার, নতুন নতুন জাতের উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির ব্যবহার ও আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ থাকলে আলুর বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষিবিদরা জানান।

এ ছাড়া চাঁদপুর জেলা একটি নদীবিধৌত কৃষি ভিক্তিক অঞ্চল বিধায় কৃষকরা সময়মত চাষাবাদ, বীজবপন ও সঠিক পরিচর্যায় পারদর্শী। জেলার ব্যাংকগুলো যথারীতি ফসল ঋণ প্রদান করে কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যাপক সহায়তা দিচ্ছে। এ দিকে চাঁদপুরের সাথে নৌ, সড়ক ও রেলপথের
উত্তম যোগাযোগ থাকায় দেশের সর্বত্র কৃষিপণ্য পরিবহন অন্যান্য জেলার চেয়ে খুবই সহজ ও নিরাপদ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষি বিভাগের এক কর্মকর্তা চাঁদপুর টাইমসকে জানান, দুর্ভাগ্য হলেও সত্য, কৃষকরা ঘরে আলু তোলবার সময়েই মৌসুমি বায়ূর প্রভাবে দফায় দফায় ৩-৪ দিন বৃষ্টিপাত ঘটায় কোনো কোনো এলাকায় আলু ক্ষেতে পানি জমে কিছু পরিমাণ আলু ক্ষতিগ্রস্ত হয় ।

এদিকে ক্ষেত থেকে আলু বস্তাভর্তি করে রাস্তায় ৩-৪ দিন পর্যন্ত রাখতে হযেছে। ট্রলি বা ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ রাখায় সময়মত ও প্রতিদিনের উঠানো আলু কোল্ডস্টোরে পাঠানো যায় নি বলে ওইসব বস্তার আলু রাস্তায় বৃষ্টিতে ভিজে কিছু পরিমাণ আলু পঁচে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে স্থানীয় আলু চাষিগণ দাবি করেছে। কৃষি বিভাগ ট্রলি চলাচলের জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেও অনুরোধ করেছেন বলে জনৈক ট্রলি চালক জানান। এতে তাদের আলু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অপর দিকে উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে।

প্রসঙ্গত, আলু বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরি সবজি। চাঁদপুর আলু উৎপাদনে দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন জেলা। মুন্সীগঞ্জের পরেই চাঁদপুরের স্থান। ফলে চাঁদপুরে বেসরকারিভাবে ১২ টি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে। এ গুলোর ধারণক্ষমতা মাত্র ৫৪ হাজার মে.টন।

বাকি প্রায় ২ লাখ মে.টন আলু কৃষকদের নিজ দায়িত্বে মাচায় বা কৃত্রিম উপায়ে সংরক্ষণ করার ফলে জেলার কৃষকগণ প্রতি বছরই তারা অর্থনৈতিকভাবে মার খাচ্ছে। এতে আলুর মৌসুমেই তাদের আলু ফড়িয়া বা খুচরাভাবে বিক্রি করতে বাধ্য করে।

প্রতিবেদক-আবদুল গনি
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৯: ১৫ পিএম, ২৭ মার্চ ২০১৭, সোমবার
এইউ

Share