Home / উপজেলা সংবাদ / চাঁদপুর সদর / চাঁদপুরে ক্রেতাদের কোটি টাকা নিয়ে ইটভাটার মালিক উধাও
চাঁদপুরে ক্রেতাদের কোটি টাকা নিয়ে ইটভাটার মালিক উধাও
প্রতীকী ছবি

চাঁদপুরে ক্রেতাদের কোটি টাকা নিয়ে ইটভাটার মালিক উধাও

‎Saturday, ‎May ‎09, ‎2015 09:45:12 PM

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট :

চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের পাইকদী খেয়াঘাট সংলগ্ন মেসার্স জননী ব্রিক কনস্ট্রাকশন-এর সত্ত্বাধিকারী কেফায়েত উল্যাহ ঢালী (সানু ঢালী) ক্রেতাদের কোটি টাকা নিয়ে এক মাসেরও অধিক সময় ধরে লাপাত্তা। ক্রেতাদের পাওনা দিতে না পেয়ে মোবাইল ফোনও বন্ধ রেখেছেন তিনি। নির্ধারিত সময়ে ক্রেতাগণ ইট না পাওয়ায় প্রতিদিন এসে ভীড় জমাচ্ছে ইটভাটায়। কিন্তু কোন দায়িত্বশীল লোক না পাওয়ায় প্রত্যেক ক্রেতাই ফিরে যেতে হচ্ছে খালি হাতে। না পাচ্ছে ইট না পাচ্ছে তাদের প্রদেয় লাখ লাখ টাকা।

সরেজমিনে ইটভাটার ব্যবস্থাপক দেলোয়ার হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ইট দেওয়ার জন্য সানু ঢালী মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তা সত্য। কিন্তু লেনদেন তিনি করেননি। চাঁদপুরে সানু ঢালীর বাসায় এইসব টাকার লেন দেন হয়েছে। তিনি শুধু ইট সরবরাহ করার দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বেশী কিছুই জানেন নি। বর্তমান এই পরিস্থিতির কারণে তিনি ইট ভাটায়ও তেমন যায় না।

ইটভাটার অপর এক সহকারী ব্যবস্থাপক মজিবুল হক মিজি চাঁদপুর টাইমসকে জানান, আমরা নামমাত্র দায়িত্ব পালন করছি। ক্রয়-বিক্রয় সকল লেন-দেনই করেছেন মালিক সানু ঢালী। তিনি অসুস্থ থাকায় এখন ঢাকায় রয়েছেন।

পাওনাদার কাজল তপাদার চাঁদপুর টাইমসকে জানান, সানু ঢালী যে হারে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, ইট উৎপাদন করতে পারলে এই সময় পর্যন্ত সকল পাওনাদার তাদের ইট বুঝে পেতেন। কিন্তু ২ রাউন্ড ইট পোড়ানোর পর হঠাৎ তার শ্রমিকরা চলে যায়। এরপর থেকে তিনিও আসেননি ইট ভাটায়। এই অবস্থায় পাওনাদার লোকজন প্রতিদিনই ইট ভাটায় আসছেন। এক পাওনাদার চাঁদপুর গোয়েন্দা পুলিশে অভিযোগ দিয়ে সরেজমিন এসে পরিস্থিতি দেখে ফিরে যান।

এদিকে মালিকের অনপুস্থিতিতে স্থানীয় কয়েকজন পাওনাদারকে সাথে নিয়ে একটি মহল রাতের আঁধারে ইটভাটায় সংরক্ষিত প্রায় পৌনে ২ লাখ ইট নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। লাভের আশা করে অনেকেই সানু ঢালীকে ১০/২০ লাখ করে টাকা দিয়েছেন। ইটভাটায় থাকা ইটগুলো জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হলে সাধারণ পাওনাদাররা ইট ও টাকা সব কিছু থেকেই বঞ্চিত হবে।

ক’জন পাওনাদারদের তথ্যমতে, পাইকদী গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা আলীম পাটওয়ারী পাবেন ১৬ লাখ টাকা, মিলন পাটওয়ারী পাবে ৬০ হাজার ইট, আহসান হাবীব পাবে ১ লাখ ইট, বাবর পাটওয়ারী পাবে ৭০ হাজার ইট, শরীফ পাটওয়ারী পাবে ৭০ হাজার ইট, আবদুল হক পাটওয়ারী পাবে ৭০ হাজার ইট।

এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ বিভিন্ন অংকে ইটের জন্য অগ্রিম টাকা দিয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সানু ঢালী।

জননী ব্রিক কনস্ট্রাকশনের ব্যবস্থাপক দেলোয়ার চাঁদপুর টাইমসকে আরো জানায়, স্থানীয়দের টাকা পয়সার লেনদেন করেছেন সানু ঢালীর ভাগিনা মনির হোসেন (কুটু)। সে বর্তমানে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে গত ক’মাস পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

এই বিষয়ে কথা বলতে বহুবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায় নি।

এদিকে ভুক্তভোগী সকল পাওনাদারদের দাবি মেসার্স জননী ব্রিক কনস্ট্রাকশন এর সত্ত্বাধিকারী সানু ঢালীকে এলাকায় ফিরিয়ে এনে তাদের সকল পাওনা বুঝে পেতে সেই সাথে ইটভাটায় থাকা সকল ইট সংরক্ষণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি।

চাঁদপুর টাইমস- এএস/এমআরআর/ডিএইচ- ২০১৫

নিয়মিত ফেসবুকে নিউজ পেতে লাইক দিন : www.facebook.com/chandpurtimesonline/likes