প্রতিবছরের ন্যায় এবারও চাঁদপুরে ঘটা করে কৃষি ও প্রযুক্তি মেলা আয়োজন করা হয়। অন্যান্য বছরের মতো এবছরও মেলা আয়োজনে কোনো ত্রুটি না থাকলেও শুধুমাত্র স্থান নির্ধারণে সঠিক সিদ্ধান্ত না নেয়ায় সপ্তাহব্যাপি এ মেলা থেকে এক বুক ‘চাপা কষ্ট’ আর লোকসান গুণে স্টল নিয়ে ফিরে যেতে হলো চারা গাছ নার্সারি মালিকদের।
‘গত বছর যে মেলায় অংশ নিয়ে প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার হাজার হাজার চাড়া গাছ বিক্রি করা হয়েছিলো, এবছর সেখানে তারা মাত্র দেড় থেকে দুই হাজার টাকায় এক থেকে দেড়শ’ গাছ বিক্রি করেছে’।
ক্ষোভের সাথে এমনটাই জানালেন মেলায় আসা এক নার্সারি মালিক। তার সাথে সুর মিলিয়ে আরেক নার্সারি মালিক জানায় গত ৭ দিনে তিনি মাত্র ২৫ থেকে ৩০ গাছ বিক্রি করেছেন।
অন্যান্য বছরের ন্যায় এবছরও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষ স্কুল মাঠে মেলার আয়োজনের জন্য প্যান্ডেলের প্রায় ৫০ ভাগ কাজ সম্পন্ন করে।
কিন্তু সম্প্রতিক সময়ে দেশের দুটি স্থানে সন্ত্রাস ও জঙ্গি হামলার ঘটনায় জেলার আইনশৃঙ্খলার কথা বিবেচনায় রেখে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন মেলাটি চাঁদপুর স্টেডিয়াম মাঠে করার নির্দেশ প্রদান করে।
পরে বরাবরের মতো গত ১ আগস্ট অত্যন্ত ঝাঁকজমকপূর্ণ আয়োজনের মাধ্যমে মেলার উদ্বোধন করা হয়।
কিন্তু চাঁদপুর স্টেডিয়াম মাঠটি শহরের মূল প্রাণকেন্দ্র থেকে অনেক দূরে হওয়ায় সাধারণ মানুষ মেলা মাঠ খুব একটা মাড়ায়নি। এতে করে মেলায় অংশ নেয়া মাত্র ৫টি নার্সারীর ১টি ২য় দিনেই ব্যবসা গুটিয়ে চলে যায়।
মেলায় অংশ নেয়া মায়ের দোয়া নার্সারি মালিক মো. শাহালম জানায়, ‘যেখানে কৃষি মেলা হওয়ার কথা না সেখানে মেলার আয়োজন করায় যা হওয়ার তাই হয়েছে। এখানে স্টেড়িয়ামের বাউন্ডারি আর পুলিশের নিরাপত্তায় সব শ্রেণির ক্রেতারা আসতে চায়না। স্টেড়িয়ামের মূল গেইটের সামনে চিত্র প্রদর্শনীর গেইট ও ব্যানারের কারণে কৃষি মেলা অনেকটাই আড়ালে পড়ে গেছে।’
তিনি জানান, গত বছর হাসান আলী স্কুল মাঠের মেলায় তিনি প্রায় ২ লাখ টাকার হাজার হাজার চাড়া গাছ বিক্রি করেছেন। এর এবছর এখানে মাত্র ১শ’ থেকে ২শ’ গাছ বিক্রি করেছেন। এতে এবার তার প্রতিষ্ঠানের অনেক টাকা লোকসান গুনতে হবে।
বনলতা নার্সারি মালিক মো. মোস্তফা জানায়, গত বছর তিনি দেড় লক্ষ টাকার গাছ বিক্রি করলেও এবার মাত্র ১ হাজার টাকার গাছ বিক্রি করেছেন। মেলার স্টেড়িয়াম মাঠের ভিতরে হওয়ায় ক্রেতাদের ক্রয় করা চাড়া গাছ রাস্তায় নিয়ে দিয়ে আসতে হয়।
তিনি ক্ষোভের সাথে জানান, ‘এবছর আমাদের মেলায় আসার কোনো ইচ্ছেই না থাকলেও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের নির্দেশকে সম্মান জানিয়ে দোকান নিয়েছি। কিন্তু ফল সরুপ আমাদের আজ মোটা অংকের টাকা লোকসান গুনতে হলো।’
জেলা সহকারী কৃষি অফিসার আ. মান্নান চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, ‘মেলা আয়োজনের জন্য স্থান নির্ধারণে আমাদের ভুল ছিলো। এখানে ক্রেতারা স্বাচ্ছন্দে এসে গাছ কিনতে পারেনি। এতে নার্সারি মালিকদের অনেক লোকসান হয়েছে।’
তিনি আরো জানান, ‘এবছর কৃষি মেলায় ৫টি নার্সারি অংশ নিলেও মেলার ২য় দিনে একটি নার্সারি স্টল গুটিয়ে নেয়। এছাড়া প্রযুক্তি মেলায় সর্বমোট ১২টি স্টল অংশ নেয়।