চাঁদপুর সরকারি কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের ছাত্রী ট্রাক রোর্ডের গৃহবধূ সায়েলা উম্মে রাহীকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন হত্যা করেছে বলে অভিযোগ এনে হত্যকান্ডের সঠিক তদন্ত ও বিচারের দাবিতে রাহীর সহপাঠীরা সংবাদ সম্মেলন করেছে।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে চাঁদপুর প্রেসক্লাবে তাঁরা এ সংবাদ সম্মেলন করেন।
সভাপতি শরীফ চৌধুরীর সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহীন এর পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, তাঁর সহপাঠি ও চাঁদপুর সরকারি কলেজের অনার্স ৪র্থ বর্ষের অধ্যয়নরত ছাত্র মেহেদী হাসান। এ সময় তার সহকর্মী ১৫ জন ছাত্র-ছাত্রী উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মেহেদী হাসান বলেন, বিয়ের ৪৪ দিনের মাথায় গত ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ রাহিকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেন। পরে তাঁরা রাহির মৃতদেহ বাড়ির ৪র্থ তলার ছাদ থেকে ফেলে দিয়ে এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলে প্রচার চালান। এ ঘটনায় চাঁদপুর সদর থানায় রাহির পরিবার মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে রাজি হয়নি। পরে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) শামসুন্নাহারের নির্দেশে সদর থানায় মামলা দায়ের হয়। পুলিশ রাহির হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত লোহার রড, রক্তমাখা তোষক, কাপড়, টিস্যু পেপার ও রক্তমাখা তেরপাল তাঁর শ্বশুর বাড়ি থেকে আলামত হিসেবে জব্দ করেন।
নিহত রাহীর লাশের ময়না তদন্তের রিপোর্ট এবং তার শ্বশুর বাড়ি থেকে জব্দকৃত আলামত থেকে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, রাহীকে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে এটিকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করছে।
মেহেদী হাসান বলেন, রাহি হত্যার পরে তাঁর শ্বশুর বাড়ির ৭ জনকে আসামী করে রাহির বাবা মোহাইমেন ভূইয়া বাদী হয়ে চাঁদপুর সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পরে পুলিশ রাহির স্বামী মামলার ১নং আসামী জিয়াউল হক মামুন ও শ্বশুর আবু তাহের পাটওয়ারীকে গ্রেপ্তার করেন। কিন্তু এক মাসের মাথায় তাঁরা চিকিৎসকের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনের অপব্যাখ্যা করে আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হয়ে আসেন। বর্তমানে জিয়াউল হকের মা, বোন ও বোন জামাই জেলহাজতে রয়েছেন। রাহির পরিবার মামলার সুষ্ঠ বিচার নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে দাবি করা হয়, প্রথমে মামলাটি চাঁদপুর সদর থানায় এসআই মামুন মিয়া তদন্ত করেন। তিনি প্রভাবশালী মহলের চাপ, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অসহযোহিতা ও আসামিদের তথ্য পাচার করার কারণে বাদীকে মামলাটি চাঁদপুর পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) স্থানান্তর করা হয়। মেহেদী হাসান আরো বলেন, জিয়াউল হকের সাথে তাঁর বাড়ির এক ভাড়াটিয়া মহিলার পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক ও যৌতুকের টাকার জন্য রাহিকে হত্যা করা হয়েছে বলে তারা জানতে পেরেছে ।
মেহেদী ও তাঁর সহপাঠিরা রাহি হত্যার সুষ্ঠ বিচার ও জামিন প্রাপ্ত আসামীদের জামিন বাতিল করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। অন্যথায় ভবিষ্যতে বিচারের দাবিতে মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ ও গণ অনশনের কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়।
রাহি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার টোরাগড় গ্রামের বাসিন্দা মোহাইমেন ভূইয়ার মেয়ে। আর জিয়াউল হক চাঁদপুর শহরের ট্রাক রোড এলাকার বাসিন্দা আবু তাহের পাটওয়ারীর একমাত্র ছেলে।
সংক্ষিত পরিসরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় দৈনিক পত্রিকার দায়িত্বশীলগণ উপস্থিত ছিলেন।
এ সংক্রান্ত আগের প্রতিবেদন…
করেসপন্ডেন্ট
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০:০০ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০১৭, রোববার
ডিএইচ