চাঁদপুরে জ্বর, সর্দি, কাশি রোগীর সংখ্যা বেশি হলেও করোনা ভাইরাস সনাক্তে একজন ব্যতীত কারোই রোগ নির্নয়ের নমুনা পরীক্ষা করা হয় নি। বর্তমানে সৌদি ফেরত দু’জন রোগী আইসোলেসন ওয়ার্ডে ভর্তি থাকলেও তারাও রয়েছেন নমুনা পরীক্ষার বাহিরে।তাদের নাম ঠিকানাসহ বিস্তারিত তথ্য জানাতেও অপরাগতা জানালেন চাঁদপুর সিভিল সার্জন কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, ১৪ মার্চ থেকে চাঁদপুরের মহলব উত্তর উপজেলার ৪৫ বছর বয়সী সৌদি ফেরত এক নারী ও ১৬ বছর বয়সী তার কন্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তারা সৌদি থেকে ফেরার পর জ্বর, সর্দি, কাশি জনিত রোগে আক্রান্ত হলে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে তাদেরকে ওই আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি রাখা হয়।
যাতে করে করোনায় আক্রান্ত হলে অন্যদের মাঝে এ মরণঘাতী ভাইরাস ছড়াতে না পারে। ১৪ মার্চ তাদেরকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। আগামি ২৫ মার্চ তাদের ১৪ দিন অতিবাহিত হবে বলে জানিয়েছেন চাঁদপুর সিভিল সার্জন।
খবর নিয়ে জানা গেছে, ৯ ই মার্চ মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আলাদা ভবনে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ইতালি ফেরত দুধ মিয়া (৬০) নামের যে ব্যক্তিকে ভর্তি করানো হয়। ওই সময়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে ব্যক্তি দুধ মিয়ার নমুনা সংগ্রহ করতে বাংলাদেশ রোগ তত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট কেন্দ্রের লোকজন এসে তার নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন। কিন্তু দুধ মিয়ার পরীক্ষার রির্পোট নেকেটিভ বলে চাঁদপুর সিভিল সার্জন সূত্রে জানা গেছে।
এছাড়া মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ওয়ার্ডে যে দু’জন নারী চিকিৎসাধীন রয়েছে তারা সহ বিদেশ ফেরত হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা কোন ব্যাক্তিরই নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি। যার ফলে চাঁদপুর এখনো সনাক্ত হয়নি ভালো মন্দ রোগীর সংখ্যা। তাই রোগ নির্ণয় ছাড়াই হোম ভাইরাস ছড়ানো আক্রান্ত সন্দেহে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে একাধিক বিদেশ ফেরত ব্যাক্তিকে।
জানা যায়, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত চাঁদপুরে ২ হাজার ১শ ৭১ জন বিভিন্ন দেশ থেকে চাঁদপুরে এসেছেন। তার মধ্যে সর্তকতা অবলম্বনে সচেতনতায় হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে ৮শ ১৯ জন প্রবাসী। এসব প্রবাসীরা নিজ গৃহে থাকলেও তাদের মধ্যে কারোই কোনো প্রকার নমুনা বা স্বাস্থসেবার জন্য কোনো পরীক্ষা করা হয়নি।
এ বিষয়ে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্ল্যাহ জানান, মতলব উত্তর উপজেলার ইতালি ফেরত ব্যাক্তি ছাড়া এখনো পর্যন্ত কোনো ব্যক্তির নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি। যার নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ওই ব্যাক্তির পরীক্ষার রির্পোট নেকেটিভ বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রোগ তত্ত্ব ও গবেষণা কেন্দ্র।
এছাড়া বর্তমানে মতলব উত্তর উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশন ওয়ার্ডে সৌদি ফেরত যে দু,জন নারী ভর্তি রয়েছে। তাদরে নমুনা পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ রোগ তত্ত্ব ও গবেষণা কেন্দ্রে জানানো হয়েছে। কিন্তু সেখানকার লোকজন আসতে পারবেনা বলে জানিয়েছেন। আরো কয়েকদিন দেখার পর যদি তারা সুস্থ না হন তাহলে তাদের নমুনা সংগ্রহ করতে লোকজন আসবেন।
আমরা খবর নিয়েছি বর্তমানে তারা উভয়ই ভালো আছে। তারা মা মেয়ে দু,জন সৌদি থেকে ফেরার পর জ্বর,সর্দি, কাশিতে অসুস্থ হলে নিরাপত্তার জন্য তাদেরকে অন্তত ১৪ দিন আইসোলেশন ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
১৪ মার্চ তাদেরকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করানো হয়। আগামি ২৫ মার্চ তাদের ১৪ দিন অতিবাহিত হবে। তিনি আরো জানান, আমাদের কাছে চাঁদপুরের বিদেশ ফেরত লোকদের তালিকা রয়েছে।
সেই তালিকা অনুযায়ী আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা ফোন করে তাদের খোঁজ খবর নিবেন। এতে যদি কোনো ব্যক্তি সে রকম ভাবে অসুস্থ হন তাহলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।
কবির হোসেন মিজি , ২৪ মার্চ ২০২০