সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া মহামারী করোনার ভাইরাসের তৃতীয় ধাপে চাঁদপুরে ফের বাড়তে শুরু করেছে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি। প্রতিদিনই স্যাম্পল জমা পড়ছে এবং শনাক্ত হচ্ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।
আড়াই,শ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে (করোনা ওয়ার্ডে) ২০ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দিন পর্যন্ত বর্তমানে ১৮ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। এরমধ্যে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৩ জন, সন্দেহজনক করুনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৫ জন। বৃহস্পতিবার দিন ছুটি নিয়েছে ১২ জন।
জানা যায়, চাঁদপুরে নতুন করে আবারো করোনা সংক্রমন দেখা দিয়েছে। শুরু থেকে এবারের তৃতীয় ধাপেও করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে শত শত স্যাম্পল জমা দিচ্ছেন রোগীরা এবং তারমধ্য থেকে সনাক্ত হচ্ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এদিকে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি কমাতে প্রতিদিন করোনার ভ্যাকসিন গ্রহন করছে সচেতন মানুষ। তবুও বাড়ছে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি গত কয়েকদিনে চাঁদপুর নার্সিং ইনস্টিটিউটের ৫২ জন শিক্ষার্থী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলেও জানা গেছে।
করোনায় আক্রান্ত শিক্ষার্থীদেরকে নার্সিং ইনস্টিউটের একটি হলে রুমে পৃথকভাবে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার চাঁদপুরে একদিনে ৯৮জনের করোনার শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলার ৬০জন, ফরিদগঞ্জের ৭জন, মতলব উত্তরের ৪জন, হাজীগঞ্জের ২জন, কচুয়ার ২জন, হাইমচরের ৪জন, মতলব দক্ষিণের ৭জন ও শাহরাস্তির ১২জন রয়েছেন।
একই দিনে ২২জনকে সুস্থ ঘোষণা করা হয়েছে। এ দিন মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয় ২৯৪টি। নমুনা পরীক্ষা অনুযায়ী শনাক্তের হার ৩৩.৩৩%।
চাঁদপুর সিভিল সার্জন অফিস সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার দিনভর এসব নমুনা সংগৃহীত হয়। রাতে রিপোর্ট পাওয়া গেছে।
জেলায় বর্তমানে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৫৫৬২জন। এর মধ্যে মৃতের সংখ্যা ২৪১জন। এ পর্যন্ত সুস্থ ঘোষণা করা হয়েছে ১৫০২২জনকে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ২৯৯জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৩জন হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ও বাকীরা হোম আইসোলেশনে আছেন।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ভারপ্রাপ্ত (আরএমও) ডাঃ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, বর্তমানে হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ১৮ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে ৩ জন রোগী করোনা পজেটিভ। আর বাকি ১৫ জন সন্দেহজনকভাবে করোনা উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ছুটি নিয়েছেন ১২ জন।
তিনি জানান তৃতীয় ধাপেও চাঁদপুরে করোনার সংক্রমনের ভয়াবহতা রয়েছে। বৃহস্পতিবার দিন শুধুমাত্র হাসপাতালের আওতায় আরটিপিসিআর ১৩০ এবং রেপিটেন্টিতে ৯৮টি নমুনা পরীক্ষার জন্য স্যাম্পল জমা পড়েছে। একদিনেই হাসপাতালে সর্বমোট ২২৮ টি স্যাম্পল পরীক্ষার জন্য জমা পড়েছে।
এখনই যদি জনসচেতনতা বৃদ্ধি না পায় তাহলে এর ভয়াবহতা আরো বেশী বাড়তে থাকবে। এর জন্য করোনার টিকা নিতে হবে। জনসাধারণকে অবশ্যই মাস্ক পরিধান করতে হবে, জনসমাগম এড়িয়ে চলা সহ সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। করোনা প্রতিরোধে নিজে মাস্ক পরিধান করতে হবে এবং অন্যকেও মাস্ক পরিদানে উৎসাহ করতে হবে।
প্রতিবেদকঃ কবির হোসেন মিজি, ২১ জানুয়ারি ২০২২