চাঁদপুর

চাঁদপুরে করোনা মোকাবেলায় মানবতার ফেরিওলার ন্যায় কাজ করছে ব্র্যাক

করোনা পরিস্থিতির কারনে কর্মহীন মানুষকে সহায়তার পাশাপাশি করোনা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে নানামুখী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। বিভিন্ন কর্মসূচী নিয়ে চাঁদপুরের জনগণের পাশে নিরলসভাবে কাজ করছে ব্র্যাকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- করোনা সম্পর্কে জনসচেতনতা সৃষ্টি।বিভিন্ন স্থানে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা, দোকানে দোকানে সামাজিক দূরত্ব চিহ্ন স্থাপন, কর্মহীন অসহায় এবং নিন্ম আয়ের মানুষের মাঝে মোবাইল ব্যাংকিং ( বিকাশ) ও নগদএর মাধ্যমে সঞ্চয় প্রদান। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায় ৩০ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে এবং গ্রাহকদের সঞ্চয় ফেরত দেওয়া হচ্ছে।ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের মধ্যে ঋণ বিতরণ, গ্রাহকদের মধ্যে সাবান, হারপিক বিতরণ, ও সচেতনতামূলক প্রচারণা।

ব্র্যাকের কর্মকর্তা ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শুরুর পর থেকে৷ ব্র্যাক চাঁদপুর জেলার প্রত্যেক উপজেলর জনসাধারণকে
সচেতন করা, সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখতে সবাইকে উদ্বুদ্ধ করাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চালিয়ে আসছে ব্যসরকারী এ সংস্থাটি। আঞলিক ব্যবস্থাপক মোঃ জহিরুল হক বলেন বলেন, আমরা করোনা পরিস্থিতির শুরু থেকেই সরকারের সহযোগিতামূলক সকল কার্যক্রম অব্যাহত রাখছি। ব্র্যাক চাঁদপুর ব্র্যাক মাইক্রোফাইন্যান্স (দাবি ও প্রগতি), স্বাস্থ্য পুষ্টি ও জনসংখ্যা কর্মসূচী, মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসূচী, সামাজিক ক্ষমতায়ন ও মাইগ্রেশন কর্মসূচী এবং ব্র্যাক শিক্ষা কর্মসুচীর মাধ্যমে কর্মীরা জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ অব্যাহত রেখেছে। মাইকে জারি শিল্পী কুদ্দুস বয়াতির গান প্রচার করা হচ্ছে। এছাড়া এই সময়ে আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে সদস্যদের সঞ্চয় ফেরত দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।

আতংকিত না হয়ে স্বাস্থ্য সচেতন ভাবে চলাচল করার বিষয়ে সতর্কতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচীর কথা উল্লেখ করে ব্র্যাকের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক আবুল হোসেন খান বলেন, মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে কাজের অভাবে মানুষের আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মাইক্রোফাইন্যন্সের সদস্যদের মোবাইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করে তাদের চাহিদা অনুযায়ী সঞ্চয় ফেরত দেওয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে ঋণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। এছাড়া অফিসে প্রবেশের ক্ষেত্রে মাস্ক  সকলের জন্য বাধ্যতামুল করা হয়েছে।

এর বাইরে ব্র্যাক মাইক্রোফাইনান্স কর্মসূচি দাবি থেকে ঋণগ্রহীতা সদস্য যাদের কৃষি, মৎস্য ও গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্প রয়েছে,মূলধনের অভাবে যাদের প্রকল্প সমূহ সচল রাখতে পারছেনা সে সকল সদস্যদের ৬ মাস মেয়াদী মৌসুমী ঋণ প্রদানের মাধ্যমে কৃষি, মৎস্য ও গরু মোটাতাজাকরণ প্রকল্পসমূহে সহজ শর্তে সদস্যদের চাহিদা অনুযায়ী ঋণ প্রদান করছে।

মতলব দক্ষিণ উপজেলার মোবারকদী গ্রামের বিজলী, ঢাকির গাঁও গ্রামের মাহফুজা আক্তার,চরমুকুন্দী গ্রামের কদরজান ও নলুয়া গ্রামের আসমা বলেন, লকডাউনের সময় কোন কাজ কর্ম না থাকায় পরিবারের ভরণপোষণে কষ্ট হচ্ছিলো। ঠিক তখনি ব্র্যাকের সহায়তায় আমাদের সঞ্চয় থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা ফেরত পাই। ব্র্যাক অফিস থেকে স্বাস্থ্য সম্পর্কে বোঝানো হয়েছে। এছাড়া সাবান ও হারাপিক দেওয়া হয়েছে। যা আমাদের পরিবারের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করবে।

এ বিষয়ে ব্র্যাক মতলবের আঞলিক ব্যাবস্থাপক জয়নাল আবেদীন বলেন, দিঘলদী গ্রামের লিপি ও উপাদী গ্রামের পারুল বেগমের মতো সকলেই একই সুযোগ পাচ্ছেন। মানুষের কথা বিবেচনা করে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের সাথে সাথে সঞ্চয় ফেরত ও ঋণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছি। চাৃদপুর জেলার ৭ টি উপজেলায় ব্র্যাকের কার্যক্রম পরিচালিত হয় বলেও তিনি জানান। মতলব সদর বিসিইউপি শাখা ব্যবস্থাপক মোঃ রমিজ উদ্দিন বলেন, দেশের এ ক্লান্তিলগ্নে প্রান্তিক কৃষকের কথা চিন্তা করে কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখার লক্ষে কৃষকদের সহজ শর্তে ঋন বিতরণ বিকাশ ও নগদ এর মাধ্যমে সঞয় ফেরত প্রদান অব্যাহত রয়েছে। এর পাশাপাশি চলমান ঋনের বকেয়া কিস্তি আদায় ৩০ জুন পর্যন্ত বন্ধ রাখা হয়েছে ।

প্রতিবেদক:মাহফুজ মল্লিক,২৩ জুন ২০২০

Share