চাঁদপুরে এ বছর শাক-সবজির চাষাবাদ ৫ হাজার ১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১ লাখ ৮ হাজার ২ শ’ ১৬ মে.টন। চাঁদপুর দেশের অন্যতমে একটি নদীবিধৌত কৃষি প্রধান অঞ্চল।
মেঘনা,পদ্মা,মেঘনা ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া নদী এ জেলা ওপর দিয়ে বয়ে যাওযায় রবি,আউস,আমন ও বোরোর মত কৃষি উৎপাদনে নদী অববাহিকায় ব্যাপক শাক-শবজি উৎপাদন হয়ে থাকে।
বিশেষ করে চাঁদপুরের ১১টি চরাঞ্চলে এ শাক-সবজি ব্যাপকভাবে চরবাসীরা চাষাবাদ করে থাকে। নারীরাই এসব শাক-সবজি উৎপাদনে প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে । গরু,ছাগল ,হাঁস ,মুরগি ইত্যাদি গবাদি পশু প্রতিপালনে মেঘনা অববাহিকায় ও চরাঞ্চলে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অগ্রণীভূমিকা পালন করে আসছে।
মেঘনা অববাহিকায় ও চরাঞ্চলে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও দিন রাত পরিশ্রম করেই তারা এ শাক-সবজি উৎপাদনে ব্যস্ত থাকে । কোনো কোনো এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে তারা ব্যাপক হারে শাক-সবজির চাষাবাদ করে আসছে । তাদের জীবিকার প্রধান বাহন কৃষি ,সবজি চাষাবাদ ও হাঁস ,মুরগি ইত্যাদি গবাদি পশু প্রতিপালন ।
চাঁদপুরে ধান, পাট, আলু, সয়াবিন, পেঁয়াজ, রসুন সরিষা, মরিচের পরেই শাক-সবজির স্থান। এটি এখন বেশ লাভজনক। এ বছর চাঁদপুরে ১ লাখ ৮ হাজার ২শ’ ১৬ মে. টন শাক-সবজির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৫ হাজার ১০ হেক্টর ।
আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ,পরিবহনে সুবিধা,কৃষকদের শাক-সবজি চাষে আগ্রহ, কৃষি বিভাগের উৎপাদনের প্রযুক্তি প্রদান,যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত, কৃষিউপকরণ পেতে সহজলভ্যতা, বীজ ,সার ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষিবিদদের পরামর্শ, ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ প্রদান ইত্যাদি কারণে চাঁদপুরের চাষীরা ব্যাপক হারে শাক-সবজির চাষ করছে।
বিশেষ করে চাঁদপুরের চরাঞ্চলগুলোতে ব্যাপক শাক-সবজির উৎপাদন করে থাকে চাষীরা। অতীব দু:খের বিষয়-নদী তীরবর্তী হওয়ায় চরাঞ্চলের চাষীদের কৃষিঋণ দিচ্ছে না ব্যাংকগুলো। চাষীরা ঋণসহায়তা পেলে শাক-সবজি চাষাবাদে আরোও উৎসাহী হতো।
চরাঞ্চলগুলি হলো-মতলবের চরইলিয়ট,চর কাসিম, ষষ্ট খন্ড বোরোচর, চাঁদপুর সদরের রাজরাজেস্বর, জাহাজমারা, লগ্নিমারা, বাঁশগাড়ি,চিড়ারচর,ফতেজংগপুর, হাইমচরের ঈশানবালা, চরগাজীপুর, মনিপুর, মধ্যচর, মাঝিরবাজার, সাহেব বাজার ও চরভৈরবির বাবুরচর ইত্যাদি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি চাঁদপুরের সূত্র মতে,চাঁদপুর সদরে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ৯শ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৪ শ’ ৪০ মে.টন।
মতলব উত্তরে চাষাবাদ ৯ শ’১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৬ শ’ ৫৬ মে.টন। মতলব দক্ষিণে চাষাবাদ ৩ শ’ ৬০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৭ শ’ ৭৬ মে.টন।
হাজীগঞ্জে চাষাবাদ ৬ শ’৬০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ হাজার ২ শ’ ৫৬ মে.টন। শাহরাস্তিতে চাষাবাদ ৩ শ’ ৯০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৪ শ’২৪ মে.টন।
কচুয়ায় চাষাবাদ ৪ শ’১০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮ হাজার ৮শ’ ৫৬ মে.টন। ফরিদগঞ্জে চাষাবাদ ৭ শ’৪০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৯ শ’ ৮৪ মে.টন। হাইমচরে চাষাবাদ ৬ শ’ ৪০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৮ শ’ ২৪ মে.টন।
শাক-সবজির মধ্যে রয়েছে–ফুলকপি, বাধাকপি, বেগুন, লালশাক, লাউ, কুমড়া, সিম, মুলা,গাঁজর, খিরা, টমেটো,করলা,পালং শাক,ধনিয়া, বরবটি প্রভৃতি।
চাঁদপুরের কুমারডুগি,মহামায়া ,দেবপুর, মাস্টার বাজার,সুন্দরদিয়া এলাকায় ব্যাপকহারে ও বাণিজ্যিকভাবে চাষিরা এসব শাক-সবজির চাষাবাদ করে থাকে ।
প্রতিবেদক : আবদুল গনি
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ৫:১৫ পিএম, ২২ নভেম্বর ২০১৯,শুক্রবার