চাঁদপুরে ইলিশের দাম চড়া

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম ইলিশ অবতারণ কেন্দ্রে চাঁদপুর বড় স্টেশন মৎস্য আড়তে রূপালী ইলিশের দাম চড়া হওয়ার কারণে অনেকটা ক্রেতা শূন্য। পদ্মা-মেঘনার পাশাপাশি দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশের আমদানি কম থাকায় এক সময়কার সরগরম ইলিশের বাজারে এখন সুনশান নীরবতা।

অলস সময় কাটাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা, ব্যস্ততা নেই শ্রমিকদের মধ্যেও। শীত মৌসুমে ইলিশ কম থাকলেও স্থানীয় জেলেদের আহরিত দেশীয় প্রজাতির কিছু মাছ এখন কেনা-বেচা চলছে।

এদিকে জাতীয় মাছ ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে পদ্মা-মেঘনায় আগামী ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত দুই মাস দেওয়া হবে জাটকাসহ সব ধরনের মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা।

সরেজমিনে শুক্রবার সকালে বড় স্টেশন মাছঘাটে দেখা যায় বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ইলিশের পসরা সাজিয়ে বসে থাকলেও ক্রেতা নেই।

কিন্তু ইলিশ মৌসুমের চাইতে বর্তমান দাম অনেক বেশি। জাটকা সাইজের ইলিশের কেজি হচ্ছে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা।

এছাড়াও আড়তগুলোতে এখন পোয়া, চিংড়ি, রুই, পাঙ্গাস, কাতলসহ দেশীয় প্রজাতির মাছ স্থানীয়ভাবে খুচরা ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। সকাল থেকেই শুরু হয় পাইকারি ইলিশ ও অন্যান্য মাছের বিকিকিনি। তবে স্থানীয় আড়ৎদারদের মধ্যে অনেকেই পদ্মা-মেঘনার রূপালী ইলিশ ছাড়া আমদানিকৃত ইলিশ বিক্রি করেন না।

চাঁদপুর শহরের ওয়ারলেস বাজারের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, স্থানীয়ভাবে জেলেদের ধরা ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ গ্রাম থেকে ৪০০ গ্রাম আকারের প্রতিকেজি ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা; ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশ প্রতি কেজি ১ হাজার টাকা। বড় আকারের ইলিশ স্থানীয় জেলেরা এখন পান না।

মৎস্য আড়তের খুচরা ইলিশ বিক্রেতা সুমন খান বলেন, চাঁদপুরে স্থানীয় রূপালী ইলিশের সংখ্যা খুবই কম। কিন্তু স্থানীয় ইলিশের চাহিদা অনেক বেশি। দাম বেশি হওয়ায় অনেকেই না কিনে চলে যান। বর্তমানে চট্টগ্রাম ও হাতিয়া সাগর এলাকার কিছু মাছ আমাদের ঘাটে আমদানি হয়।

একই আড়তের ব্যবসায়ী আবদুল আজিজ বলেন, আজকের বাজারে দেড়কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ৭৫-৮০ হাজার টাকা। ৮০০ গ্রাম থেকে ১ কেজির বেশি সাইজের ইলিশ প্রতিমণ ৪৮ থেকে ৫০ হাজার টাকা। ৫০০ গ্রামের নিচে প্রতি মণ ২২-২৪ হাজার টাকা।

তিনি আরও জানান, মাছঘাটে প্রায় শতাধিক ইলিশের আড়ৎদার আছে। এসব আড়তে এখন প্রতিদিন গড়ে ৩০ মণ ইলিশ কেনা-বেচা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে ইলিশ কম বিক্রি হলেও রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাইকারী বিক্রি হয় এসব ইলিশ।

হাইমচর উপজেলা সহকারী মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রশিদ বলেন, এ বছর শীত মৌসুমে রূপালী ইলিশের চাইতে জাটকা বেশি ধরা পড়ছে। তবে আমরা কারেন্টজাল দিয়ে জাটকা না ধরার জন্য জেলেদেরকে অনুরোধ করছি এবং আমাদের উপজেলা টাস্কফোর্সের অভিযান অব্যাহত আছে।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, শীত মৌসুমে ইলিশ একটু কমই থাকে। তবে অন্য বছরের তুলনায় এ বছর জেলেরা পরিমাণে কিছুটা হলেও ইলিশ বেশি পাচ্ছে। ইলিশ কম পাওয়ার কারণ হচ্ছে এই সময়ে স্থানীয় নদীতে খাদ্য কম থাকে এবং উষ্ণতা কম। তাপ বাড়লে সাগর থেকে ইলিশ উজানের দিকে আসে।

স্টাফ করেসপন্ডেট, ২৮ জানুয়ারি ২০২৩

Share