চাঁদপুর

ফসল তলিয়ে যাওয়ায় চাঁদপুরে ৪ হাজার মে. টন ধান কম উৎপাদন

প্রবল বৃষ্টিপাতে জেলার ক’টি উপজেলায় ইরি-বোরোর পাকা ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় চাঁদপুরে এ বছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার মে. টন ধান কম উৎপাদন হয়েছে।

যদিও অন্যান্য বছর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নির্ধারণ করা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হতো। যার ফলে কোনো কোনো বছর বলা হতো বাম্পার ফলন।

২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ৮ উপজেলায় ইরি-বোরো চাষাবাদ হয়েছে ৬১ হাজার ৬ শ ৭২ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন হয়েছে ২ লাখ ৪০ হাজার মে. টন।

চাঁদপুরের কৃষকরা হাইব্রিড, স্থানীয় ও উন্নত ফলনশীল এ তিন জাতের ইরি-বোরোর চাষাবাদ করে থাকে । কম-বেশি সব উপজেলাই ইরি-বোরোর চাষাবাদ হয়।

কোনো কোনো উপজেলার প্রবল বৃষ্টিতে এ বছর ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিধায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪ হাজার মে.টন কম চাল উৎপাদন হয়েছে বলে চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে।

চাঁদপুর সেচ ও মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্প, মতলব দক্ষিণ ও হাজীগঞ্জে ব্যাপক ইরি -বোরোর চাষাবাদ হয়। জেলার তফসীলী ব্যাংকগুলি কৃষি উৎপাদনের জন্যে চলতি অর্থবছর ১ শ’ ৮ কোটি ৯১ লাখ ৪২ হাজার টাকা কৃষি ঋণ ও দারিদ্রবিমোচন খাতে বিতরণ করা হয়েছে।

চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের দেয়া সূত্রে মতে, চলতি বছর চাঁদপুর জেলায় ৬২ হাজার ৫শ’ ৯৬ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ৪৪ হাজার ৪শ’ ৮১ মে.টন। অথচ চলতি বছরে চাঁদপুরে ৬১ হাজার ৬শ’ ৭২ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয় এবং উৎপাদন ২ লাখ ৪০ হাজার মে.টন।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, চাঁদপুর সদরে ৫ হাজার ৬ শ’ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ২০ হাজার ৯শ’২৫ মে.টন। মতলব উত্তরে ৯ হাজার ১শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ৩৬ হাজার ৪শ’ ৫২ মে.টন।

মতলব দক্ষিণে ৪ হাজার ৭ শ’ ৭০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ১৯ হাজার ৫শ’ ২৬ মে.টন। হাজীগঞ্জে ৯ হাজার ৪ শ’ ৪৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ৩৮ হাজার ৬ শ’ ৫৫ মে.টন।

শাহারাস্তিতে ৯ হাজার ৬ শ’ ২ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ৩৭ হাজার ৮শ’ ৯২ মে.টন। কচুয়ায় ১২ হাজার ১শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ৪৪ হাজার ৯শ’ ৯৮ মে.টন।

ফরিদগঞ্জে ১০ হাজার ৯৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ৩৮ হাজার ৯ শ’ ৮৫ মে.টন এবং হাইমচরে ৬ শ’ ৬০হেক্টর জমিতে চাষাবাদ এবং উৎপাদন হয়েছে ২ হাজার ৫শ’ ৭১ মে.টন চাল।

কৃষকরা বর্তমানে লাঙ্গলের পরিবর্তে ট্রাক্টর, হোচার পরিবর্তে বিদ্যুৎ চালিত স্যালো বা ডিপ নলকূপ দিয়ে পানি সেচ, গোবরের সারের পরিবর্তে বিভিন্ন প্রকার উন্নত রাসায়নিক সার ব্যবহার,বোনার পরিবর্তে সারিবদ্ধ ভাবে ধান রোপণ,উন্নত বীজ,পরিমিত কীটনাশকের ব্যবহার,নতুন নতুন জাতের উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির ব্যবহার ইত্যাদি কারণে ইরি-বোরোর ফলন ভালো হয়েছে।

এ ছাড়াও চাঁদপুর জেলা একটি নদীবিধৌত কৃষি ভিক্তিক অঞ্চল বিধায় কৃষকরা সময়মত চাষাবাদ,বীজ রোপণ বা বীজবপন করে সঠিক পরিচর্যায় পারদর্শী।

কৃষি বিভাগের কৃষিবিদ আবদুল মান্নানস চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,‘ বৃষ্টিপাতের ফলে উৎপাদন কিছুটা কম হয়েছে। তবে ফলন ভালো হয়েছে । সরকার ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে চাঁদপুরের চাষীদের সার ও উন্নতমানের বীজ দিয়ে কৃষকদের সহায়তা দিয়েছে। বিদ্যুৎ তের ক্ষেত্রে ২০% ভর্তূকি দিয়েছে।’

তবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর কৃষকরা আগের প্রণোদনা ছাড়া অন্য কোনো সহায়তা পাননি।

প্রতিবেদক-আবদুল গনি
আপডটে,বাংলাদশে সময় ২:৩৫ পিএম,৪ জুন ২০১৭, রোববার

Share