চাঁদপুর

চাঁদপুরে ইঞ্জি.রুহুল আমীন আখন্দের ইন্তেকাল

চাঁদপুরের সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও গরীবের শিক্ষক নামে পরিচিত ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমীন আখন্দ আর বেঁচে নেই। ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা ১৫ মিনিটে তার নিজ বাড়ীতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না…রাজিউন)।

তিনি দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল (৭৯) বছর। তিনি রত্নগর্ভা স্ত্রী, ৫ ছেলে ও ১ মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন।

মঙ্গলবার বাদ জোহর পুরাণবাজার পশ্চিম শ্রীরামদি ডা. আব্দুল হাই আখন্দ বাড়ির বাইতুল আমান জামে মসজিদ প্রঙ্গনে যানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাযার নামাজে ইমামতি করেন, মরহুমের বড় ছেলে চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশলাল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক মাওঃ হারুনুর রশিদ।

জানাজাপূর্বক বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব নাছির উদ্দিন আহমেদ, চাঁদপুর চেম্বাব অব কমার্সের সভাপতি আলহাজ্ব জাহাঙ্গির আখন্দ সেলিম, জেলা দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তাক হায়দার চৌধুরী, ডা. আব্দুল হাই ও মরহুমের ছোটভাই খায়রুল আমিন খোকন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন,চাঁদপুর চেম্বাব অব কমার্সের সহ-সভাপতি তমাল কুমার ঘোষ, পুরাণবাজার একুশ উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি ফয়েজ আহমেদ মন্টু, মহাসচিব মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব মমতাজ উদ্দিন মন্টু গাজী, স্থানীয় কাউন্সিলর লতিফ গাজী, এলাকার মুরব্বী মফিজ বেপারী, দেলোয়ার শেখ, মোজাম্মেল হক খান, ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান খান ও মজিবুর রহমান খানসহ এলাকার সর্বস্তরের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিগণ।

প্রসঙ্গত, স্থানীয়ভাবে অসহায়, হতদরিদ্র ও গরীবের শিক্ষক হিসেবে খ্যাত ইঞ্জিনিয়ার রুহুল আমীন আখন্দ চাঁদপুর শহরের পুরাণবাজার পশ্চিম শ্রীরামদী ডাঃ আব্দুল হাই আখন্দ বাড়ীর কৃতিসন্তান। সদা হাস্যজ্জল সাদা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত এই মানুষটা ঢাকা তেজগাঁও পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট কলেজে ক্যামিকেল বিভাগের সাবেক ইন্সটেক্টর হিসেবে কমর্রত ছিলেন।

চাকরী থেকে অবসর গ্রহনের পর তিনি নিজ এলাকায় বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পরেন এবং খুব অল্প সময়ের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেন। বিশেষ করে অসহায়, হতদরিদ্র, গরীব ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীর খোঁজ পেলেই তাদের পাশে দাড়াতেন এবং নিজ খরচে প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরন কিনে দিতেন। শুধু তাই নয় মেধাবী গরীব শিক্ষার্থীদেরকে বছর জুরে বিনা খরচে প্রাইভেট পড়াতেন, বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে সহযোগীতা করার পাশা-পাশি পড়া-লেখা শেষে ভালো চাকুরী পেতে সহযোগীতা করতেন।তার হাতে গড়া অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী প্রশাসন ক্যাডারে বেশ সুনামের সাথে চাকুরি করেছেন।

ইঞ্জিনিয়র রুহুল আমিন আখন্দ ব্যাক্তি জীবনেও সফল একজন মানুষ ছিলেন। তার বড় ছেলে মাওঃ হারুনুর রশিদ চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশলাল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করছেন, দ্বিতীয় ছেলে ডা. ইসমাইল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অধ্যাপনা করছেন, মেজো ছেলে মোঃ ইউসুফ ঢাকা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট কলেজে কর্মরত, ছোট দুই ছেলের মধ্যে ইয়াকুব আমীন স্কলারসীপ নিয়ে আমেরিকায় ও ইলিয়াছ আমীন স্কলারসীপ নিয়ে জাপানে পড়া-লেখা শেষ করে সেখানেই স্ব-পরিবারে স্থায়ী ভাবে বসবাস করে আসছেন। তার স্ত্রী একজন রত্মগর্ভা। একমাত্র মেয়ে গৃহীনি। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায়জুরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

প্রতিবেদক: আশিক বিন রহিম
০৫ ফেব্রুয়ারি,২০১৯

Share