চাঁদপুর সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়নের তৈরি করা হয়েছে একাধিক আশ্রয়ণ প্রকল্প। একেকটি আশ্রয়ণ প্রকল্প (গুচ্ছ গ্রাম) এ বর্তমানে ৫শ’র অধিক লোক বাস করেন। সেমি পাকা ও পুরো পাকা ঘরে থাকেন ছিন্নমূল পরিবারগুলো।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা অনেকেই জানালেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণেই আমরা আশ্রয়ণ পেয়েছি। তিনিই আমাদের থাকার জন্য ব্যবস্থা করেছেন। যার কারণে আমাদের স্ত্রী সন্তানদের মুখে এখন হাসি ও আনন্দ।
লক্ষ্মীপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প ২০১২-২০১৬ অর্থ বছরে ৬.৬৯ একর জমিতে ৪৪টি ব্যারাক তৈরি করা হয়। এ প্রকল্পে ঘর সংখ্যা ২২০টি। এখানে বসবাস করেন ২২০ টি পরিবারের প্রায় ৫শতাধিক লোক। এই প্রকল্পের পশ্চিম পাশের সকল ঘর পাকা এবং পূর্ব পাশের ঘর গুলো সেমি পাকা। এ প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করেছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের সামনেই সাইনবোর্ড সাঁটানো রয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
এ ছাড়া আরো কয়েকটি ব্যারাক তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। সেখানে ও শতাদিক পরিবারের বাসস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।
সম্প্রতি আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দাদের সাথে কথা হয়। বাসিন্দা রেনু বেগম জানান, মেঘনা নদীতে তাদের বাড়ি ৩ বার তলিয়ে যায়। তাদের মূল বাড়ি ছিলো হাইমচর উপজেলার বাজাপ্তি গ্রামে। এখন ওই গ্রামের কোন চিহ্ন নেই। মেঘনা গর্ভে বিলীন হয়েগেছে। স্বামী ছেলে ও মেয়েদের নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন সেচ প্রকল্পের বাঁধের উপর।
আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার পর গত ২ বছর স্থানীয় লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের সহযোগিতায় একটি ঘর পেয়েছেন। স্বামী দিন মজুর। তিনি সংসার কাজের সাথে সাথে মাছ ধরার জাল বুনেন। দুইজনের রোজগার দিয়েই চলে সংসার। তবে আমরা এখন আল্লাহর রহমতে শেখ হাসিনার সহযোগিতায় ভালো আছি।
মেঘনা নদী গর্ভে বিলীন হওয়া ওই ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. আব্দুল কাদির বেপারী (৩৫) স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে থাকেন আশ্রয় প্রকল্পে। পেশায় সিএনজি চালক। ২ বছর ছিলেন বেড়িবাঁধের পাশে। গত ১বছর এ আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর পেয়ে এখন নিরাপদে আছেন।
কাদির জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের এ ঘরের ব্যবস্থা করায়, আমরা তার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। আশ্রয়ণ প্রকল্পে আমরা এখন বিদ্যুৎ পেয়েছি। পাশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণীতে মেয়ে পড়া-লেখা করেন। আশ্রয়ণ প্রকল্প হওয়ার কারণে বহু পরিবার এখন সুখ-শান্তিতে বসবাস করছেন।
১০ নং লক্ষ্মীপুর মডেল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম খান জানান, এ ইউনিয়নের বেশীরভাগ বাসিন্দা মেঘনার ভাঙনের শিকার হয়েছেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ছিন্নমূল মানুষের আশ্রয় দেয়ার জন্য লক্ষ্মীপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প, রামদাসদী আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ শেষে ২২০টি পরিবারকে ঘর বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এখানে আরো কয়েকটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের কাজ চলছে।
কুমিল্লা সেনানিবাসের সেনাবাহিনীর সদস্যদের তত্ত্বাবধানে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর গুলো তৈরি হচ্ছে। বাকী কাজ শেষ হলে মানুষ আর বেড়িবাঁধে থাকতে হবে না।
করেসপন্ডেট
৭ এপ্রিল,২০১৯