চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ নেতা আলোচিত আজিজুর রহমান খান ভুট্টু হত্যা মামলা তুলে নিতে বাদী নিলিমা আক্তার লিমাকে চাপ প্রয়োগ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। চার্জশীটভুক্ত কতিপয় আসামিরা নিজেদের বাঁচাতে এবং মামলা ধামাচাপা দিতে তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার বরাবর মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়েছে। মামলা তুলে নিতে বাদী ও তার ছেলেকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে।
জানা যায়,আলোচিত ভুট্টু হত্যা মামলার চার্জশীটভুক্ত আসামী সুমন খান ও মোস্তফা খান কালু সম্প্রতি পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমানের নিকট তদন্তকারী কর্মকর্তা চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক রাশেদুজ্জমানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করেছে।
আরও পড়ুন…চাঁদপুরে ইউনিয়ন আ’লীগ নেতাকে হত্যার দায়ে ৩ আসামী আটক
চার্জশীটভুক্ত এ দু’আসামি মামলার এজহারনামীয় আসামী। বাদী তাদের নাম এজহারে অন্তভুক্ত করেছে। ঘটনার ৫ মাস পর মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্যাপক তদন্ত ও সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আলোচিত এ মামলার এজহারভুক্ত ৫ জনসহ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী আলোকে মোট ৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে তদন্তকারী কর্মকর্তা রাশেদ। উক্ত চার্জশীটকে স্বাগত জানান বাদী ও এলাকাবাসী।
মামলার শুরু থেকে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করকে বিভিন্ন তদবির ও চেষ্টা চালায় এ দু আসামি। তদন্ত কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করতে না পেরে এখন তারা পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন মহলে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। যাতে তদন্তকারী কর্মকর্তাকে অভিযোগ দিয়ে এখান থেকে মামলা ধামাচাপা দিতে সুবিধা হবে।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি এ ধরনের একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। যা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন…চাঁদপুরে আওয়ামী লীগ নেতা ভুট্টু হত্যা মামলায় প্রধান আসামী আটক
বাদী নিলিমা আক্তার লিমা জানান, মামলা তদন্ত কর্মকর্তা যে চার্জশীট দিয়ে তাতে আমরা সন্তুষ্ট। মামলা তুলে নিতে আমাকে ও ছেলেকে প্রতিনিয়ত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তারা চাঁদপুর জেলা পুলিশের এক উর্ধ্বতন কর্মকর্তার যোগসাজসে বিষটিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। হত্যা মামলার এজহারভুক্ত আসামিদের যেখানে আটক করা হয়েছে। ভূট্টো বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি ও সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর ভাগিনা। তাহলে আসামিরা কিভাবে ঘটনা অন্যদিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে। আসামিদের দ্রুত বিচার সম্পন্ন করার দাবী জানাই।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক রাশেদুজ্জমান জানান, ঘটনার ৫ মাস পর মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্যাপক তদন্ত ও সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আলোচিত এ মামলার এজহারভুক্ত ৫ জনসহ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী আলোকে মোট ৮ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করি। আসামি সুমন খান ও মোস্তফা খান কালু এজহারনামীয় আসামি। বাদী নিজে তাদের নাম এজহারে দিয়েছে। এখন যা করার আদালত করবে। মামলার তদন্ত নিয়ে কোন প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। আইন মোতাবেক তদন্ত করেছি। আসামি পক্ষ সব সময় তদন্তকারী কর্মকর্তা ব্যাপারে অসন্তোষ থাকে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৮ মে দিনগত রাতে কুমারডুগি নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে আজিজুর রহমান ভুট্টোকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় পরদিন ১৯ মে ভুট্টোর স্ত্রী চাঁদপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।
২ জুন মঙ্গলবার বিকেলে সোহাগ খানকে শহরের চেয়ারম্যান ঘাট এলাকা থেকে আটক করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রাশেদুজ্জামান। অন্যদিকে এই মামলায় এজহার নামীয় আসামিদের মধ্যে মো. মুনসুর খান, মোস্তফা খান কালু ও মো. সুমন খানকে গত ২০ মে ভোরে চাঁদপুর মডেল থানা ও গোয়েন্দা পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করে।
পরে তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তাদের জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়। মামলা নং-১৬/২০ এবং ভার্চুয়াল মামলা নং-২৬৮/২০। এরপর মঙ্গলবার (২ জুন) তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্তকারী কর্মকর্তা ৭ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
স্টাফ করেসপন্ডেট,২২ নভেম্বর ২০২০