চাঁদপুরে এবার ( ২০১৮-২০১৯ ) আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা দু লাখ ২৪ হাজার ৫ শ’ মে.টন নির্ধারণ করা হয়েছে। ৮ উপজেলায় এবার এ আলু চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। বিভিন্ন জাতের আলু চাষাবাদ করে থাকে চাঁদপুরের কৃষকরা। কম-বেশি সব উপজেলাই আলুর ফলন ও চাষাবাদ হয়ে থাকে ।
বিশেষ করে আলু উৎপাদনকারী অঞ্চল গুলোর মধ্যে হচ্ছে সফরমালী,রালদিয়া মুন্সীরহাট, মতলব দক্ষিণ, নারায়ণপুর ,কুমারডুগি, শাহাতলী, কেতুয়া এলাকা।
চলতি শীত মৌসুমে চাঁদপুরে আলু চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১০ হাজার ৬শ ৯০ হেক্টর এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ লাখ ২৪ হাজার ৫ শ’মে.টন চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান।
চাঁদপুর খামার বাড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র মতে,চলতি বছরে চাঁদপুর জেলায় ব্যাপক আলু চাষাবাদ করা হয়েছে। এবার ২/৩ দিন বৃষ্টিপাত হওয়ায় প্রাথমিক ভাবে চাষাবাদকৃত আলু রোপণের সময় কিছুটা নষ্ট হয়েছে। আলুর আবাদি জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয় নি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জানান , চাঁদপুর সদরে এবার ১ হাজার ৮শ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৭ হাজার ৮ শ’ মে.টন। মতলব উত্তরে ৮ শ’ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ হাজার ৭ শ মে.টন ।
মতলব দক্ষিণে ৩ হাজার ৫ শ’ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৩ হাজার ৫ শ’ মে.টন ।
হাজীগঞ্জে ৯শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৯ হাজার ৯ শ’ ৫০ মে.টন । শাহারাস্তিতে ২৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৫শ ২৫ মে. টন।
কচুয়ায় ৩ হাজার ৪শ ৫০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭২ হাজার ৫ শ’ মে.টন।
ফরিদগঞ্জে ১শ’ ৪০ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৯ শ’ ৪০ মে.টন। হাইমচরে ১শ’২৫ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ ও উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৬ শ’ ২৫ মে.টন।
কয়েক জন কৃষকদের সাথে কাথা বলে জানা যায়, বর্তমানে কৃষকরা লাঙ্গলের পরিবতের্ ট্রাক্টর, হোচার পরিবর্তে বিদ্যুৎ চালিত স্যালো সেচ ব্যবস্থায়, গোবরের সারের পরিবর্তে বিভিন্ন প্রকার উন্নত রাসায়নিক সার ব্যবহার, উন্নত বীজ,পরিমিত কীটনাশকের ব্যবহার, নতুন নতুন জাতের উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির ব্যবহার ও আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ থাকলে আলুর বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে কৃষিবিদরা জানান।
চাঁদপুর জেলা একটি নদীবিধৌত কৃষি ভিক্তিক অঞ্চল বিধায় কৃষকরা সময়মত চাষাবাদ, বীজবপন ও সঠিক পরিচর্যায় পারদর্শী।
জেলার ব্যাংকগুলো যথারীতি ফসল ঋণ প্রদান করে কৃষিপণ্য উৎপাদনে ব্যাপক সহায়তা দিচ্ছে। এ দিকে চাঁদপুরের সাথে নৌ,সড়ক ও রেলপথের উত্তম যোগাযোগ থাকায় দেশের সর্বত্র কৃষিপণ্য পরিবহন অন্যান্য জেলার চেয়ে খুবই সহজ ও নিরাপদ।
প্রসঙ্গত, আলু বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরি সবজি। চাঁদপুর আলু উৎপাদনে দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন জেলা। মুন্সীগঞ্জের পরেই চাঁদপুরের স্থান। ফলে চাঁদপুরে বেসরকারিভাবে ১২ টি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে।
এগুলোর ধারণক্ষমতা মাত্র ৫৩ হাজার মে.টন। বাকি প্রায় ২ লাখ মে.টন আলু কৃষকদের নিজ দায়িত্বে মাচায় বা কৃত্রিম উপায়ে সংরক্ষণ করার ফলে জেলার কৃষকগণ প্রতি বছরই তারা অর্থনৈতিকভাবে মার খাচ্ছে । বিগত ক’বছর ধরেই চাঁদপুরে ব্যাপক আলু উৎপাদন হচ্ছে ।
প্রতিবেদক-আবদুল গনি
১৩ নভেম্বর,২০১৮ মঙ্গলবার
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur