চাঁদপুরে এ প্রথমবারের মতো মাদ্রাসা শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার জন্য ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাকা) আয়োজনে আরবি ভাষা ও ইসলামী জ্ঞান প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২৬ আগস্ট) চাঁদপুুর আহমাদিয়া ফাজিল মাদ্রাসায় দিনব্যাপি অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় জেলার ৫০টি ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসার ৫৬ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।
চাঁদপুুর আহমদিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতার পরিচালক অধ্যক্ষ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান খানের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ওসমান গনি পাটওয়ারী।
চান্দ্রা সামাদিয়া ফাযিল মাদ্রাসা অধ্যক্ষ ও জেলা পর্যায়ের প্রতিযোগিতার সহকারী পরিচালক মাও. আনম মহিব্বুল¬হ নোমান ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে সহকারী অধ্যাপক ইকবাল হোসেন পাটোয়ারীর পরিচালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চাঁদপুর আহমাদিয়া ফাজিল মাদ্রাসার সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পাটওয়ারী, ফরিদগঞ্জ কামিল মাদ্রাসা অধ্যক্ষ ডা. মাহবুবুর রহমান, হাজিগঞ্জ কামিলা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মাও. মোঃ হেফজুর রহমান, চাঁদপুুর প্রেসক্লাব সভাপতি শরীফ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক জিএম শাহীন প্রমুখ।
বক্তব্যে তিনি বলেন, আরবী শিক্ষার মানোন্নয়নে অতিতে বিভিন্ন সরকার শুধুই প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কিন্তু বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর আলেম-ওলামাদের দীর্ঘদিনের দাবি ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী নিজে একক সিদ্ধান্ত নিয়ে তা বাস্তবায়ন করেছেন। আমরা আশা করি ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় অতিদ্রুতি পূর্ণাঙ্গরুপ পবে।’
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, বর্তমানে শিক্ষার প্রতি মানুষ অনেক বেশি আকৃষ্ট, সরকার দেশের জনগণের মৌলিক অধিকারের অন্যতম এ শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়নে অনেক বেশি আন্তরিক। আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশে ইসলামীক ফাউন্ডেশন, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডসহ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি অনেক কিছু করেছেন। অথচ দুঃখের সাথে বলতে হয়, ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে সাধারণ মানুষকে ভুল ইতিহাস শিক্ষা দেয়া হয়েছে।’
আলহাজ্ব ওচমান গণি পাটওয়ারী আরো বলেন, ‘কোরআন হাদিসের বাইরে কেউ যদি ফতুয়া দেয় তবে দুনিয়া ও আখেরাতে তাকে শাস্তি পেতে হবে। একজন মুসলমান হিসেবে আরবি ভাষা শিক্ষা আমাদের জন্য অবশ্যক তবে এর পাশাপাশি নিজেদের প্রয়োজনেই অন্য ভাষাগুলো শিক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ অন্যা ভাষা না শিখলে আমরা ভিন্ন জাতিকে ইসলাম সম্পর্কে ধারণা দিতে পারবো না। আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠা করায় শিক্ষার্থীরা আজ আরবি ভাষা ও ইসলামি জ্ঞান প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়েছে। এ সরকার ইসলামি বান্ধব সরকার। যখনই ক্ষমতায় যায় তখনই ইসলামের খেদমতে কাজ করে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ পাটওয়ারী বলেন, ‘আরবি শিক্ষাকে যুগোপযোগী করার ক্ষেত্রে এ প্রতিযোগিতা বিশেষ ভূমিকা রাখবে। আমি আশা করবো এখানে অংশ নেয়া প্রতিযোগীরা আগামিতে জাতিয় পর্যায়ে অংশ নিয়ে চাঁদপুরের সুনাম বয়ে আনবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘প্রধানন্ত্রী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে বলেই আজকে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এমন একটি ফ্ল্যাটফর্ম পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছেন এসব বিষয়ে মাদ্রাসার শিক্ষকদের এগিয়ে আসতে হবে। আমরা সবাই মিলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদমুক্ত একটি উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।’
প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া জেলার ৫০টি কামিল ও ফাযিল মাদ্রাসার ৫৬ জন শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ১৪ জনকে বিভাগীয় পর্যায়ে মনোনিত করা হয়। এদের প্রত্যেককে নগদ টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ বিতরণ করা হয়।
প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্বে ছিলেন ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মাও. একেএম মাহবুবুর রহমান, হাজীগঞ্জ দারুল উলুম আহমাদিয়া কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. মাও. মোঃ হেফজুর রহমান, মতলব দক্ষিণ নওগাঁ রাশেদিয়া ফাযিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওঃ আবু ইয়াহিয়া মো. জাকারিয়া চৌধুরী।
পুরস্কার বিতরণ পর্বে শুরুতে কোরআন তিলাওয়াত করেন ফরিদগঞ্জ মজিদিয়া কামিল মাদ্রাসার ছাত্র আবুল হাছনাত বায়জিদ। হামদে বারি তা’য়ালা পরিবেশন করেন হাজীগঞ্জ নওহাটা ফাযিল মাদ্রাসার ছাত্র মোঃ ফয়সাল। নাতে রাসূল (সাঃ) পরিবেশন করেন চাঁদপুুর আহমদিয়া ফাযিল মাদ্রাসার ছাত্র হাফেজ মোঃ আব্দুল কাদের জিলানী।
এর আগে সকালে উদ্ধোধনীপর্বে শিক্ষার্থীরা একে একে প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেন। এই অনুষ্ঠানে ইসলমী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
আশিক বিন রহিম
: আপডেট, বাংলাদেশ ৭ : ৫০ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০১৭, শনিবার
ডিএইচ