‘পদক্ষেপ বাংলাদেশের’ আয়োজনে ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে আন্তর্জাতিক ইলিশ, পর্যটন ও উন্নয়ন উৎসব শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় চাঁদপুর জেলা প্রশসকের সম্মেলন কক্ষে এবং সার্কিট হাউসে দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রথম পর্বের সেমিনার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, উৎসবের আহ্বায়ক কবি আসাদ চৌধুরী এবং দ্বিতীয় পর্বের সমাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সিপিটিইউ’র মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও শিশু সাহিত্যিক ফারুক হোসেন।
প্রথমপর্বে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমন খান এবং দ্বিতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন উৎসব কমিটির আহ্বায়ক বাদল চৌধুরী।
দুটি পর্বে বিশেষ অতিথি ও আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মো. মঈনুল হাসান, ছড়াকার এমআর মঞ্জু, কথা সাাহিত্যিক ইসহাক খান, আসলাম সানী, একাত্তরের কলমযোদ্ধা মোহাম্মদ এমদাদুল হক, পশ্চিম বঙ্গের কবি সাকিল আহমেদ, চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকি, কোস্টগার্ড স্টেশন কমান্ডার এম এনায়েত উল্যাহ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান।
উৎসবের মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন দৈনিক চাঁদপুর কণ্ঠের প্রধান সম্পাদক কাজী শাহাদাত ও চাঁদপুর বিতর্ক একাডেমীর অধ্যক্ষ ডা. পীযূষ কান্তি বডুয়া। সবশেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তব্য রাখেন, উৎসবের সমন্বয়ক জান্নাতুল নিসা।
প্রথম পর্বের সেমিনার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও উৎসবের আহ্বায়ক কবি আসাদ চৌধুরী বলেন, আমরা বাঙালী। আমাদের গর্বের বিষয় হলো মুখের ভাষা ও স্বাধীনতা। আমাদের আগেও রাষ্ট্র ছিলো, রাষ্ট্র এখনো আছে। যুগে যুগে আমাদের দেশে অনেক মনিষী, কবি সাহিত্যিক, বিখ্যাত ব্যাক্তি জন্ম নিয়েছেন, তারা অনেক কবিতা, গান, লিখেছেন দেশ নিয়ে ভেবেছেন। কিন্তু কেউ আমাদের স্বাধীনতা এনে দিতে পারেনি। আজকে আমরা গর্ব নিয়ে বলতে পারি আমারা স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণ। বাংলাদেশের সবচেযে বড় পরাজয়টি হয়েছে ১৯৭৫ সনে। যেদিন স্বাধীন বাংলার স্থপতি বঙ্গবুন্ধুকে হত্যা করা হেয়ছে।
তিনি বলেন, সামনে নির্বাচন। মানুষ এখন দুশ্চিন্তায় আছেন কি হয়, কোন পরিস্থিতির সৃস্টি হয়। এখন যারা রাষ্ট্র চালায় তারা আমাদের মানুষ মনে করছে না, শুধু ভোটার মনে করেন। প্লিজ আমাদের ভোটার থেকে মানুষ ভাবুন। গোটা পৃথিবীর রাজনীতি এখন রাজনীতিবিদদের হাতে নেই। রাজনীতি হোক প্রত্যেকটা মানুষের সম্মান এবং মর্যাদাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য।
দ্বিতীয় পর্বের প্রধান অতিথি সিপিটিইউ এর মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) ও শিশু সাহিত্যিক ফারুক হোসেন বলেন, ইলিশ মাছ আমাদের জাতিয় সম্পদ। ইলিশ নিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে উৎসব করা হচ্ছে। আমি মনে করেছি এই উৎসবটি চাঁদপুরে করা না হলে একটি পূর্ণতা পাবে না। তাই ৩দিনের এই উৎসবের সমাপন চাঁদপুরে করা হয়েছে। আমার অহঙ্কারের সিমা নেই যে আমি চাঁদপুরের সন্তান। ইলিশ শুধু মাছ নয়, আমাদের প্রাণের স্পন্দন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান বলেন, ইলিশ নিজেই একটি কবিতা। তার যে সোন্দর্য, তার রুপ-লাবন্য রয়েছে তা দেখার মতো দৃষ্টি লাগে। ইলিশ আমাদেরকে নান্দনিকতা দেখিয়ে দিচ্ছে, আমাদের পথচলা সৃষ্টির সুন্দর নিদর্শন দেখিয়ে দিচ্ছে। আমরা মানুষরা হয়ে অনেক সময় সৃষ্টির যে রহস্য, যে সোন্দর্য রয়েছে তা দেখাতে ব্যর্থ হই। আমরা বাংলাদেশকে শ্রেষ্টত্বের জায়গায় দেখতে চাই। আসুন আমরা এমন একটি বাংলাদেশ বির্নিমানে কাজ করি।
বিকেল ৪টায় চাঁদপুর সার্কিট হাউসে উৎসব উপলক্ষে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে কবিতা, ছড়া আবৃত্তি ও পাঠ করেন, পশ্চিম বঙ্গের কবি, আমৃত মইতি, কাজল চক্রবর্তী, আনসার উল-হক, অজিত ত্রিবেদী, নৃপেন চক্রবর্তী, মণিশংকর রায়, তন্দ্রা ভট্টাচার্য্য, শান্তিময় মুখোপধ্যায়, শান্তা চক্রবর্তী, নীপা চক্রবর্তী, বাংলাদেশের কবি ইসহাক খান, আসলাম সানী, শাকিল আহমেদ, জগলু হায়দার, ডা. পীযূষ কান্তি বড়–য়া, পীযূষ কান্তি রায় চৌধুরী, রফিকুজ্জামান রণি, আশিক বিন রহিম, শাহমুব জুয়েল, খান-ই আজম প্রমুখ। গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন জেলা শিশু একাডেমীর শিশু শিল্পীরা। এসময় আগত অতিথিদের চাঁদপুর চতুরঙ্গের আয়োজনে ইলিশ উৎসবের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেয়া হয়। এছাড়াও আগত লেখক, কবি ও সাহিত্যিকদের হাতে চাঁদপুর থেকে প্রকাশিত কবিতার কাগজ তুলে দেয়া হয়
প্রসঙ্গত, গত ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা পূর্বাণী ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড এ ৩ দিনব্যাপী আন্তজার্তিক ইলিশ, পর্যটন ও উন্নয়ন উৎসবের উদ্বোধন হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণীসম্পাদ মন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ। ২৮ সেপ্টেম্বর নৌ-বিহার বাংলা মায়ের রূপ-বৈচিত্র্যে পরিভ্রমণ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে কবিতা পাঠ। ২৯ সেপ্টেম্বর উৎসব সমাপন অনুষ্ঠান চাঁদপুর মোলহেড বড় স্টেশনে হওয়ার কথা ছিলো।
প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur