চাঁদপুরে আইসিইউ নিয়ে বিভ্রান্তি না ছড়ানোর আহবান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি। একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে প্রচারিত ‘উদ্বোধনের অপেক্ষায় আইসিইউ’ তথ্যে এ বিভ্রান্তি ছড়ায়।
এ বিষয়ে নিজের সংসদীয় এলাকা হিসেবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি এমপি ৬ জুলাই মঙ্গলবার রাতে তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
তিনি জানান, চাঁদপুরে আইসিইউ স্থাপনের চেষ্টা করছি অনেকদিন থেকে। কিছুদিন আগে যখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে চারটি “আইসিইউ বেড” চাঁদপুর সদর হাসপাতালের জন্য পাওয়া গেছে শুনলাম তখন বিপুল উৎসাহে আইসিইউ স্থাপনের জন্য স্থান ঠিক করে সব ব্যবস্থা করে ফেলতে শুরু করলাম সবাই মিলে। যখন বাক্স খুলে শুধু চারটি বেড, চারটি জাজিম/ম্যাট্রেস ও চারটি সাইড ক্যাবিনেট পাওয়া গেল তখন সবাই একটু অবাক হলাম। কারন আইসিইউ এর জন্য প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেটর, মনিটর, এবিজি মেশিনসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি ছাড়া কোন আইসিইউ হতে পারে না।
শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করেছি। মাননীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রী মহোদয় আশ্বাস দিয়েছেন আইসিইউ এর জন্য অত্যাবশ্যকীয় যন্ত্রপাতি পাঠাবেন। জনবল দেবেন বলেছিলেন, প্রক্রিয়া চলছিলো, আজ আদেশ হয়েছে। সেন্ট্রাল লিকুইড অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর কাজও প্রায় নব্বই শতাংশ হয়েছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পেলে আইসিইউ চালু করা যাবে। কারও কোন উদ্বোধনের অপেক্ষায় কোন আইসিইউ বসে নেই। পরিবেশিত তথ্য যদি সত্য না হয় তবে তা অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ায়। সকলেই বিভ্রান্তি ছড়ানো থেকে বিরত থাকবেন এ প্রত্যাশা করি।
মন্ত্রী বলেন, গতবছর করোনার তাণ্ডব শুরুর পরপরই সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্যোগ ও অর্থায়নে চাঁদপুরের মানুষের জন্য সদর হাসপাতালের ৩০ টি বেডের জন্য সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট বসানো ও ভাষাবীর এম এ ওয়াদুদ আরটিপিসিআর ল্যাব স্থাপনের কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছিলো। করোনা শনাক্তকরণের সুবিধা যেন হয় সেজন্যই ল্যাব স্থাপন করা হয়েছিল। কারন সেসময় টেস্টের অপ্রতুলতার কারনে ফলাফল পেতে অনেক বেশী দেরী হয়ে যেতো। যারা এ কাজগুলোতে আমাকে নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
শিক্ষামন্ত্রী ও চাঁদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ডা. দীপু মনি আরও বলেন, চাঁদপুরের মানুষ তাদের প্রতিনিধিত্ব করবার সুযোগ দিয়ে যে সম্মান দিয়েছেন, তাদের যে বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপন করেছেন আমার ওপর, যে অপার ভালোবাসা দিয়েছেন, সে ঋণে আমি তাদের কাছে আবদ্ধ আজীবনের জন্য। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী হিসেবে এবং বঙ্গবন্ধুকন্যার একজন স্নেহধন্য কর্মী হিসেবে চাঁদপুরের মানুষ তথা দেশের জনগণের সেবা, দেশের সেবাই আমার ব্রত। কোন বিভ্রান্তিকর তথ্য সে ব্রত থেকে আমাকে বিচ্যুত করতে পারবে না কখনো, ইনশাআল্লাহ। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের করোনা ইউনিটের প্রধান ও ফোকাল পার্সন ডা. সুজাউদ্দোলা উল্লাহ রুবেল জানান, চাঁদপুর সদর হাসপাতালে আইসিইউ প্রতিস্থাপন করার কাজ চলছে প্রায় দেড় মাস আগে। এর কাজ এখনো ১০ ভাগ বাকী আছে। আইসিইউ তে অক্সিজেন সংযোগের কাজ করছে Spectra oxigen Ltd. তারা বলেছে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ হবে। তারপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আইসিইউ হস্তান্তর করা হবে। এ আইসিইউ এর জন্যে প্রয়োজন হবে জনবল। সেটাও এখনো দেয়া হয়নি। তারপর উদ্বোধনের বিষয় আসে।
তিনি আরও বলেন, যেই মানুষটি (শিক্ষামন্ত্রী) অক্লান্ত পরিশ্রম, চেষ্টা ও তাঁর নিজের সঞ্চয়পত্রের টাকা করোনা ল্যাব স্থাপনে ব্যয় করেন, হাই ফ্লো নেজাল ব্যবস্থা করেন , আইসিইউ ও অক্সিজেন প্ল্যান্ট স্থাপনে উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি এই মহামারি সময়ে উদ্বোধনে দেরী করবেন এটাও কি মানুষকে বিশ্বাস করানো যাবে?