চাঁদপুরে পারিবারিক কলহের জের ধরে ‘গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে ৩ তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে স্বপ্না (৩২) নামে ২ সন্তানের জননীর আত্মহত্যার’ খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) দিবাগত রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশকে না জানিয়ে এবং পোস্টমর্টেম ছাড়াই তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করতে যাওয়ায় এ নিয়ে ব্যপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা এ মৃত্যুতে রহস্যজনক বলে স্বামীকে অভিযুক্ত করেছেন।
এলাকাবাসীর ধারণা স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গৃহবধু স্বপ্না বেগম আত্মহত্যা করেছে। এ ঘটনার রেশ ধরেই গায়ে কেরোসিন ঢেলে তাকে ছাদ থেকে ফেলে আত্মহত্যার নাটক সাজনো হয়েছ।
তবে স্বপ্নার স্বামী অ্যাম্বুল্যান্স চালক মনির হোসেন পলাতক থাকায় ঘটনার রহস্য এখনো উন্মোচন হচ্ছে না। খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ নিহতের স্বজনদের সাথে আলাপ করে লাশ ময়নাতদন্ত্রের জন্য থানায় নিয়ে আসে।
খোজ নিয়ে জানা যায়, চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স চালক মো. মনির হোসেনের সাথে শাহতলি পাটওয়ারী বাড়ীর স্বপ্নার প্রায় ২১ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। তাদের বিবাহিত সংসারে ২টি সন্তান রয়েছে। বড় ছেলে শহরের আল আমিন একাডেমি কলেজে ১ম বর্ষে এবং ছোট ছেলে গনি মডেল স্কুলে ৮ম শ্রেণিতে পড়ে। তারা চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালের উল্টোদিকে সরকারি কোয়ার্টারে বসবাস করতো।
রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে গৃহবধু স্বপ্না গায়ে আগুন লাগিয়ে ৩ তলা ভবন কোয়ার্টারের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টাকরে। খবর পেয়ে তার স্বামী মনির হোসেন স্বপ্নাকে চাঁদপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
স্ত্রীর মৃত্যুর খবর শুনে আইনের ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে স্বামী মনির হোসেন বুদ্ধি খাটিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালে তাকে উন্নত চিকিৎসা করাবে বলে তরিৎ গতিতে স্বপ্না বেগমের লাশ সেখান থেকে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নিয়ে যায়। পরদিন শুক্রবার সকালে প্রশাসনের কাউকে কিছু না জানিয়ে পোস্টমর্টেম ছাড়াই তড়িঘরি করে অনেকটা গোপনে লাশ দাফন করার চেষ্টা চালায়।
পরে শহরের বাসস্ট্যান্ডে কবরস্থানের এনে লাশ দাফন করার সময় খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানার এসআই ত্রিনাথ সাহা, অনুপ চক্রবর্তি, নুরসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নিহতের স্বজনদের সাথে আলাপ করে লাশ থানায় নিয়ে আসে।
এবিষয়ে নিহত স্বপ্নার বড় ছেলে জানায়, ‘আম্মু কি কারণে বাসার ছাদে গিয়ে গায়ে আগুন লাগিয়ে ৩ তলা ভবন কোয়ার্টারের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার করে তা জানি না। আমরা তখন ঘুমে ছিলাম। তবে আব্বু-আম্মুর মাঝে ঝগড়া হতে শুনেছি।’
এ বিষয়ে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়ালি উল্যাহ অলি জানায়, এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
কবির হোসেন মিজি ও আশিক বিন রহিম
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৮:০৩ পিএম, ১৯ জানুয়ারি ২০১৮, শুক্রবার
ডিএইচ