আজ বুধবার ৭ জুন থেকে মাধ্যমিক স্তরের ৮ম, ৯ম ও ১০ম শ্রেণির অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা ও নতুন কারিকুলামের ষষ্ঠ-সপ্তম শ্রেণির বিষয়ভিত্তিক ‘ ষান্মমাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন’ নির্দেশিকা মতে মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। ৩১ মে-৬ জুন পর্যন্ত প্রস্তুতি নিয়ে ৭ -১৮ জুন পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করতে শিক্ষকদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
স্ব-স্ব প্রতিষ্ঠানগণের আয়োজনে ও স্ব স্ব বিষয়ভিত্তিক এ ধারাবাহিক মূল্যায়ন ও অন্যান্য শ্রেণির এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এতে জেলার সব উপজেলার মাধ্যমিক স্তরের ২৯৩ টি স্কুলের শিক্ষার্থীগণ সারাদেশের একই নিয়ম-কানুনে চাঁদপুরজেলার এ মূল্যায়ন ও অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষা অংশগ্রহণ করছে ।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা মতে-এ সময়ে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলে পরবর্তীতে তাদের সুবিধা মতো মূল্যায়ন কাজ করতে বলা হয়েছে। এজন্য ৩০ মে অনলাইনে শিক্ষকদের দিকনির্দেশনামূলক কোর্সটি সম্পন্ন করতে হয়েছে। রোববার মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণীত পাঠ্যপুস্তক ও অন্যান্য শিখন সামগ্রীর মাধ্যমে শিখন এবং মূল্যায়ন কার্যক্রম চলমান। শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ এ সকল মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিখনকালীন ও সামষ্টিক মূল্যায়ন পরিচালনার কথা বলা হয়েছে। ইতিমধ্যে এনসিটিবির মাধ্যমে বিষয়ভিত্তিক শিখকালীন মূল্যায়ন নির্দেশিকা মাউশি থেকে স্কুলে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে ১৩টি বিষয়ের ‘ ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন’ গাইডলাইন ও বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন নির্দেশিকা (ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান) প্রকাশ করা হলো।
এতে বলা হয়, আজ ৭ জুন থেকে এক সঙ্গে সংযুক্ত ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের রুটিন এবং মূল্যায়ন গাইডলাইন অনুসরণ করে সকল বিদ্যালয়ে সামষ্টিক মূল্যায়ন বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। সামষ্টিক মূল্যায়নের প্রস্তুতির জন্য ৫ কর্মদিবস আবশ্যক। সকল প্রতিষ্ঠানকে ৩১ মে-৬ জুন পর্যন্ত গাইডলাইন অনুযায়ী সামষ্টিক মূল্যায়নের প্রস্তুতিমূলক সেশন পরিচালনার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে । কোনো বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষা বা অন্য কোনো কারণে রুটিন অনুসরণ করা সম্ভব না হলে স্ব স্ব ব্যবস্থাপনায় মূল্যায়ন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। এ জন্য শিক্ষকদের ৩০ মের মধ্যে অনলাইনে প্রশিক্ষণমূলক কোর্স করতে নির্দেশনা দিয়েছে এনসিটিবি।
রুটিনে দেখা গেছে- ষষ্ঠ শ্রেণির সামষ্টিক মূল্যায়নের ক্ষেত্রে ৭ জুন বাংলা, ৮ জুন ইংরেজি, ১০ জুন গণিত, ১১ জুন ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, ১৩ জুন ডিজিটাল প্রযুক্তি, ১৪ জুন জীবন ও জীবিকা, ১৫ জুন স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ১৭ জুন ধর্ম এবং ১৮ জুন শিল্প ও সংস্কৃতি। সপ্তম শ্রেণির ক্ষেত্রে ৭ জুন ডিজিটাল প্রযুক্তি, ৮ জুন জীবন ও জীবিকা, ১০ জুন স্বাস্থ্য সুরক্ষা, ১১ জুন ধর্ম, ১২ জুন শিল্প ও সংস্কৃতি, ১৩ জুন বাংলা, ১৪ জুন ইংরেজি, ১৫ জুন গণিত,১৭ জুন বিজ্ঞান এবং ১৮ জুন ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বিষয়ের মূল্যায়ন করতে বলা হয়েছে।
এদিকে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণীত পাঠ্যপুস্তক ও অন্যান্য শিখন সামগ্রীর মাধ্যমে শিখন এবং মূল্যায়ন কার্যক্রম চালাতে ’ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ‘পরীক্ষার মত ফি’ কোনো প্রকার ফি আদায় করার নির্দেশনা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নেই।
হাজীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির সামষ্টিক মূল্যায়ন এর ফি সম্পর্কে সোমবার বলেন,‘ সরকারিভাবে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির প্রশিক্ষণের আলোকে শিক্ষার্থীদের ধারাবাহিক মূল্যায়নের নির্দেশ রয়েছে। যেহেতু এটা পরীক্ষা নয়;তাই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এ বাবত ফি এর নামে অর্থ আদায়ের প্রশ্নই উঠে না।’ চাঁদপুর সদরের উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সুমন কুমার দাস বলেন,‘সরকারিভাবে এ ব্যাপারে কোনো চিঠি নেই। তবে কারো কোনো অভিযোগ থাকলে তিনি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিত ভাবে জানাতে পারেন। ’
বলাখাল চন্দ্রবান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মো.দেলোয়ার হোসেন ঐদিন বেলা আড়াইটায় এক প্রশ্নের উত্তরে বলেন ,‘৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির ষাণ¥াসিক মূল্যায়নে শিক্ষার্থীদের ১৩টি বিষয়ে সামষ্ঠিক মূল্যায়ন স্ব-স্ব বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকগণ করবেন এবং এতে সিট বানাতে হবে। এর নানা রকম উপকরণ ক্রয়ে কিছু খরচও আছে- তাই উহা মূল্যায়ন ফি হিসেবে আদায় করতে হবে। বাকিলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.মুজিবুর রহমান বলেন,‘ অর্ধ-বার্ষিকী পরীক্ষার পাশাপাশি সরকারি নির্দেশে ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির সামষ্টিক মূল্যায়ন ৭ জুন শুরু হচ্ছে। পরীক্ষা হবে প্রশ্ন দিয়ে আর মূল্যায়ন হচ্ছে প্রশ্নব্যতীত। তবে বিভিন্ন পদ্ধতিতে তাদের কাজ দেয়া হবে। কেননা এখানে অনেক খরচ আছে।’
বলাখাল জেএন স্কুল এন্ড কারিগরি কলেজের সিনিয়র শিক্ষক নাজমুল সাহাদাত বলেন,‘ ধারাবাহিক মূল্যায়ন এটা একটা উৎসব। মূল্যায়ন ফি নেই। পোস্টার,কাগজ ও অন্যান্য উপকরণ বাবৎ খরচ মিটানোর জন্যে কিছু টাকা নেব।
সদরের নুরুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধানশিক্ষক আহসান আলী বলেন, ‘মূল্যায়নের জন্যে স্কুল থেকে সব উপকরণ দেয়া হবে। এখানে মূল্যায়ন ফি নির্ধারণ করা হয়নি।
সিনিযর করেসপনেন্ডন্ট
৭ জুন ২০২৩