Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরে অটো-সিএনজির নামে কোটি টাকা চাঁদাবাজি : এ অর্থ যায় কোথায়?

চাঁদপুরে অটো-সিএনজির নামে কোটি টাকা চাঁদাবাজি : এ অর্থ যায় কোথায়?

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট :

চাঁদপুর জেলায় বিভিন্ন ফান্ডের নামে অটো রিক্সা-সিএনজি থেকে মাসে কয়েক কোটি টাকা চাঁদা আদায় করছে মালিক সমিতিসহ একটি চক্র। এ চাঁদাবাজির জন্যে বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে অটো রিক্সা-সিএনজি চালকরা।

এ ব্যাপারে সিএনজিচালক জাকির হোসেন জানান, প্রতিদিন হাজীগঞ্জ থেকে চাঁদপুর আসার পথে কমপক্ষে ৭/৮ জায়গা দশ টাকা থেকে শুরু করে বিশ টাকা হারে চাঁদা দিতে হয় বিভিন্ন পয়েন্টে। এভাবে গড়ে একশ’ থেকে দেড়শ’ টাকা চাঁদা দিয়ে এবং মালিকদের দৈনন্দিন ভাড়া দিয়ে আমাদের আর হাতে তেমন একটা কিছু থাকে না। ফলে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমরা খুবই অসহায়ভাবে দিনাতিপাত করছি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাজীগঞ্জ বাজারের অটো-সিএনজির টোল আদায়ের নামে দুটি জায়গায় চাঁদা গ্রহণ করা হয়। এরপর বলাখাল শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডের নামে চাঁদা নেয়া হয়। এরপর বাকিলা, মহামায়া, বাবুরহাট, ওয়ারলেছ, চাঁদপুর বাসস্ট্যান্ড এবং কালীবাড়ি গুয়াখোলার মোড় এলাকায় অটো সিএনজির চালকদের কাছ থেকে চাঁদা গ্রহণ করা হয়।

জানা যায়, শাহরাস্তি আবুল হোসেন নামের জনৈক সিএনজি মালিক নিজেরাই জেলার নামে একটি সিএনজি কমিটি করে বিভিন্ন উপজেলায় কয়েক লাখ টাকায় কমিটি বিক্রয় করছে এবং বিভিন্ন সড়কে সিএনজি চালানোর নামে কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে।

এরা বিভিন্ন মহলেও এ চাঁদার ভাগ দেয় বলে জানা যায়। শুধু তাই নয়, গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো শহরের বিভিন্ন ট্রাফিক পয়েন্টে ট্রাফিকরা ৫০ থেকে ১শ’ টাকা করে বিভিন্ন অজুহাতে চাঁদা গ্রহণ করে থাকে। টাকা দিতে ব্যর্থ হলে তাদের গায়ে পর্যন্ত হাত তোলা হয়। তাতেও ক্ষ্যান্ত না হয়ে ওই চালককে গাড়িসহ থানায় নিয়ে আরো বেশি চার্জ করে গাড়িটি আটকে রাখা হয়।

চাঁদপুর জেলার শুধু কুমিল্লা-চাঁদপুর রুটেই নয়, উপজেলার হাইমচর বাজার, ফরিদগঞ্জ বাজার, মতলব উত্তর, মতলব দক্ষিণ, শাহরাস্তি, কচুয়ার সর্ব জায়গায়ই অটো সিএনজি চালকদের কাছে চাঁদাবাজির মহোৎসব চলছে।

একটি সূত্র জানায়, জেলার বিভিন্নস্থানে সিএনজি অটো রিকশা থেকে উত্তোলনকৃত টাকার ভাগ অনেক উচ্চ পর্যায়ের লোকজনই পেয়ে থাকে বলে এই চাঁদাবাজি বন্ধ করা যাচ্ছে না।

সিএনজি মালিক সমিতির নামে যে টাকা উত্তোলন করা হয় তা অধিকাংশ মালিকের জানার বাইরে থেকে যায়। যদি কোনো সিএনজি চালক এর প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসে তার সিএনজি আটকে রাখাসহ বিভিন্ন হয়রানিমূলক মামলা এবং স্ট্যান্ড থেকে সিএনজি বের করে দেয়ার মতো নজিরও রয়েছে।

যদিও হাজীগঞ্জ উপজেলায় যানবাহন থেকে টাকা উত্তোলনে আদালতের নির্দেশ জারি করা হয়েছে। জেলার অন্যান্য উপজেলাগুলোতে বিভিন্ন পয়েন্টে প্রতিনিয়নত চলছে যানবাহনে চাঁদা আদায়।

সিএনজি চালকরা জানায়, জেলার অন্যান্য উপজেলাগুলোতে যদি অটো-সিএনজি থেকে চাঁদা না তোলার বিষয়ে আদালতের নির্দেশ জারি করা হতো তা হলে হয়রানি থেকে মুক্তি পেতাম।

আপডেট:   বাংলাদেশ সময় : ১১ আষাঢ় ১৪২২ বঙ্গাব্দ, বুধবার ২৪ জুন ২০১৫ খ্রিস্টাব্দ, ০৯:৫৬ অপরাহ্ন

চাঁদপুর টাইমস : প্রতিনিধি/এমআরআর/২০১৫

চাঁদপুর টাইমস ডট কম-এ প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না