চাঁদপুর জেলার সড়কগুলোকে ট্রাক্টর চলাচলের উপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার জেলার ট্রাক্টর মালিকদের তাঁর কার্যালয়ে ডেকে এনে চূড়ান্ত নিষেধাজ্ঞার কথা জানিয়ে দেন। জেলায় হাজারেরও বেশি ট্রাক্টর রয়েছে। এসব ট্রাক্টর বিভিন্ন মালামাল, বিশেষ করে নির্মাণ সামগ্রী’ই বেশি পরিবহন করে থাকে।
পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার ট্রাক্টর মালিকদের বলেন, ‘ট্রাক্টর শুধুমাত্র কৃষি কাজে ব্যবহারের জন্য সরকার অনুমতি দিয়েছে। এটি রাস্তায় চলাচলের অনুমোদন নেই। তাছাড়া ট্রাক্টরের পিছনে যে বিশাল বডি লাগানো হয় তা সম্পূর্ণ বেআইনী।’
তিনি বলেন, অপ্রশিক্ষিত চালকরা ট্রাক্টর চালিয়ে বছরকে বছর অনেক প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। সব শ্রেণি পেশার মানুষ চায় এটি নিষিদ্ধ করা হোক। তাই সরকার ট্রাক্টর নিষিদ্ধের ব্যাপারে নির্দেশনা দিয়েছেন। কোনোভাবেই এটিকে আমরা সড়কে চলতে দিতে পারি না। আজ বুধবার (৮ জুন) থেকে ট্রাক্টর আর রাস্তায় চলাচল করতে পারবে না।
সোমবার (৭ জুন) বিকেলে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে ট্রাক্টর চলাচলের নিষিধাজ্ঞার কথা জানাতে মালিকদের সাথে প্রশাসনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার।
সভার শুরুতেই সড়কে ট্রাক্টর চলাচলের বিষয় তুলে ধরেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান, ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আব্দুর রহমান ও সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ওয়ালি উল্লাহ্ অলি। পরে ট্রাক্টর মালিক ও চালকদের মতামত নিয়ে চাঁদপুর জেলার সব সড়কগুলোতে সম্পূর্ণভাবে ট্রাক্টর চলাচল নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান জানান, কৃষি কাজের নাম করে বাংলাদেশে ট্রাক্টর আমদানি করা হচ্ছে। এজন্য সরকার ট্রাক্টরের জন্য অল্প টাকা ভ্যাট নিচ্ছে। এটি শহরে বা সড়কে চলাচলের কোনো অনুমতি নেই। এছাড়া শহরের মালামাল পরিবহনের জন্য ছোট পিকআপ ভ্যান ব্যবহার করা যায়।
তিনি জানান, ট্রাক্টর নিষিদ্ধের বিষয়ে একাধিকবার মালিক ও চালকদের সাথে সভা করা হয়েছে। এছাড়া জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায়ও সড়কে ট্রাক্টর চলাচলে নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়। আজ বুধবার (৮ জুন) থেকে জেলার কোন সড়কে ট্রাক্টর চলাচল করলে তা’ জব্দ করা হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ট্রাক্টরে মালামাল না নিয়ে বিকল্প যানবাহনে মালামাল পরিবহনের কথা বলেন। নাহলে যে প্রতিষ্ঠানের মালামাল ট্রাক্টরে পরিবহন করা হবে সেই প্রতিষ্ঠানকেও জরিমানার আওতায় আনা হবে। তিনি জেলার সব নাগরিকদের জান-মালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ে জোর দিয়ে বলেন, ট্রাক্টর না চললে চালক-শ্রমিকরা অন্য কাজ যুগিয়ে নেবে, কিন্তু এই অবৈধ যান রাস্তায় চলাচল করে সাধারণের নির্বিঘেœ চলাচলের গ্যারান্টি তো দিতে পারবো না।
ট্রাক্টর মালিক ও চালকরা জানান, চাঁদপুর জেলায় সর্বমোট ১ হাজার ট্রাক্টর রয়েছে। ১ হাজার ট্রাক্টরের সাথে প্রায় ৮০ হাজার মানুষ জড়িত। আমরা ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে ট্রাক্টরগুলো কিনেছি। এটি হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের রাস্তায় নামতে হবে।
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৭:২৯ পিএম, ৮ জুন ২০১৬, বুধবার
ডিএইচ