চাঁদপুর

দিনের বেলা চাঁদপুর শহরে বাড়ছে চুরি : আতংকে ব্যবসায়ী ও শহরবাসী

নদীর তীরবর্তী নিরবতার অন্যতম শহর চাঁদপুরে গত ক’য়েক মাস থেকে দিনের বেলা ব্যাপক হারে বেড়েছে চোরের উপদ্রব। সম্প্রতিক সময়ে জেলার ব্যস্ততম এই শহরের বিভিন্ন বাসা-বাড়ি এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে একের পর এক দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেই চলেছে।

আর প্রতিটি ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও ব্যবসায়ীকে প্রায় সর্বস্বান্ত করে দেয়া হচ্ছে। চুরি থেকে বাদ যাচ্ছে না মসজিদ-মন্দির এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। ফলে শহরবাসী তথা ব্যবসায়ীরা প্রচুর পরিমানে ভয়ার্ত আর চিন্তিত হয়ে পড়েছে।

স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ সূত্রে দেখা যায় গেল কয়েক মাসে ছোট-বড় বহু চুরির ঘটনা সংর্ঘটিত হয়েছে। তবে সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হলো সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার বেশীরভাগই ঘটছে দিনে-দুপুরে।

এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চুরির ঘটনাটি ঘটে গত ১৮ ডিসেম্বর শহরের মাদ্রাসা রোড়ের নিঝুম ভিলার ভাড়াটিয়া সাইফুল ইসলামের ফ্লাটে। ঘটনার দিন দুপরে চোরের দল জানালার গ্রিল কেটে নগদ ২লাঘ টাকা ও ২০ ভরী স্বর্ণালংকারসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে গেছে। এই ঘটনায় চাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারিনি পুলিশ।

৬ নভেম্বর রাতের আঁধারে পুরাণবাজার মার্চেন্ট একাডেমী থেকেও পানির পাম্পটি খুলে নিয়ে যায় চেরের দল। ১৩ নভেম্বর দিনগত রাতে পুরাণবাজার ২নং বালক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণীকক্ষ থেকে ৩টি সিলিং ফ্যান নিয়ে গেছে চোরের দল।

১১ সেপ্টেম্বর চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে একটি অটোরিক্সা চুরি হয়। এই ঘটনায় জহির ছৈয়াল ও বাদশা ছৈয়ালসহ ২যুবককে আটক করে পুলিশ।

২৫ ডিসেম্বর ঠিক দুপুরে শহরের গুয়াখোলা এলাকায় প্রাবাসীর বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় সোহেল নামের এক যুবকে হাতে নাতে আটক করা হয়। আটক সোহেল চট্টগ্রামের বাসীন্দা।

সর্বশেষ ৪ জানুয়ারি সকালে শহরে কালিবাড়ি এলাকায় একই সাথে জনতা ফার্মেসি ও নোকিয়া টেলিকম মোবাইল নামে দুটি দোকানে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত ঘটনা দেখা যায়, চুরির মিশনে প্রায় ১০ জনেন একটি সংখ্যবদ্ধ চোর চক্র অংশগ্রহণ করে। তারা ক্যাসবাক্সের ড্রয়ার খুলে নগদ টাকা ও মোইল ফোন নিয়ে গেছে।

সিসি ক্যামেরা থেকে ধারণকৃত

জেলার সচেতন মহল ধারণা করছেন, অন্য জেলার বেশ কিছু চোরচক্রের সাথে চাঁদপুরের একটি চোরচক্র জড়িত রয়েছে। তাছাড়া শহরের বিভিন্ন স্পটে এসব চোরদের হোতাও রয়েছে। তারা প্রথমে ছদ্মবেশে হকার কিংবা পথচারি হয়ে ঘুরে ঘুরে শহরের পাড়া মহল্লা আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে খোঁজ-খবর নেয়। পরে সুযোগ-সময় মতো সংখ্যবদ্ধভাবে চুরির ঘটনা ঘটায়।

এছাড়াও চাঁদপুরের স্থানীয় একটি চক্র ছোট-ছোট শিশু-কিশোরদের দিয়ে চুরির ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। পরে তারাই আবার সামান্য টাকা দিয়ে চুরিকৃত পণ্য ক্রয় করে থাকে।

ক্ষতিগ্রস্তদের ধারণা চোরের দল বিভিন্ন ফ্লাট-বাড়ির দাড়োয়ানদের টাকার বিনিময়ে নিজেদের আয়ত্বে এনে চুরি করছে। তবে রাতের অন্ধকারে ঘটে যাওয়ার চুরির ঘটনার গন্য অনেকেই আবার তার দ্বায়-ভার কমিউনিটি পুলিশিং এর উপর চাপিয়ে দিচ্ছে।

এ বিষয়টি নজরে এনে দ্রুত কার্যত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলার পুলিশ প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে ভুক্তভোগী শহরবাসী ও ব্যবসায়ী সমাজ।

প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
৫ জানুয়ারি, ২০১৮

Share