বিভিন্ন জায়গা থেকে ঋণ করে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার মুন্সিরহাট বাজারে মুদির দোকান দিয়েছিলেন তফাজ্জল হোসেন। গত ২৮ আগস্ট এক অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে যায় তাঁর দোকান। ওই অগ্নিকাণ্ডে বাজারের সালাউদ্দিনের লেপ–তোশকের দোকান, আবদুল মতিনের চায়ের দোকান ও নাসির উদ্দিনের কাঁচামালের আড়ত পুড়ে যাওয়ায় ১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা।
চাঁদপুরে মতলব দক্ষিণ ও মতলব উত্তর উপজেলায় প্রায়ই এ ধরনের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। এতে ক্ষয়ক্ষতিও হচ্ছে প্রচুর।
ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে এ বছরের আগস্ট পর্যন্ত ২০ মাসে ২ উপজেলায় ১০১টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
এতে দেড় কোটি টাকার মালামাল পুড়ে যায়। মারা যান একজন। এর মধ্যে ৭৯টি অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস বিভাগ। বাকি ২২টি অগ্নিকাণ্ডের খবর পাননি ফায়ার সার্ভিসের লোকজন। স্থানীয় ব্যক্তিরাই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে অধিকাংশ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
মোট অগ্নিকাণ্ড: ১০১টি,ফায়ার সার্ভিস খবর পায়: ৭৯টি,বসতবাড়িতে আগুন: ৫৩টি,বাজারে আগুন: ১৪টি,খড়ের গাদায় আগুন: ১২টি,মোট ক্ষয়ক্ষতি: দেড় কোটি টাকা,মৃত্যু: একজন
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ মাসে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস বিভাগের লোকজন মতলব দক্ষিণের ৬৩টি এবং মতলব উত্তরের ১৬টি অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনেন। গত বছর ৩৮টি এবং এ বছর ৪১টি ঘটনায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন তাঁরা। ১২টি খড়ের গাদা, ১৪টি বাজার ও ৫৩টি বাড়িতে এসব অগ্নিকাণ্ড ঘটে। এতে পুড়ে ছাই হয় ৪০টি দোকান ও শতাধিক বসতঘর।
২৮ আগস্ট মতলব দক্ষিণ উপজেলার মুন্সিরহাট বাজারে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত দোকানি তফাজ্জল হোসেন বলেন, অগ্নিকাণ্ডে তাঁর দোকানের প্রায় আট লাখ টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। তাঁকেসহ চার দোকানির ১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঋণ করে দোকান দিয়েছিলেন। এখন তাঁরা সর্বস্বান্ত। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন লেগেছে বলে ধারণা করছেন।
উপজেলা ফায়ার সার্ভিস বিভাগের স্টেশন প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সবগুলো অগ্নিকাণ্ডের খবর তাঁদের জানানো হয় না।
কেউ কেউ অনেক বিলম্বে জানান। তখন তাঁদের কিছুই করার থাকে না। এ কারণে মতলবের ২ উপজেলায় গত ২০ মাসে কতটি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান জানা নেই। তবে ওই সময়ে তিনি ও তাঁর বিভাগের লোকজন ৭৯টি অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে এনেছেন।
এসব ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ৮৪ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা করেছেন ৩ কোটি ১২ লাখ ২১ হাজার টাকার মালামাল।
তিনি আরও বলেন, অধিকাংশ অগ্নিকাণ্ডই ঘটছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে। বাকিগুলোর উৎপত্তি নানা কারণে।
করেসপন্ডেট,২০ সেপেটম্বর ২০২০