২০০২ সালে মামার হাত ধরে দুবাইয়ে আসেন চাঁদপুরের বিল্লাল হোসেন। তবে মামার ব্যবসায় তাঁর মন বসেনি। নিজের কিছু করার ইচ্ছা তাঁকে বারবার তাড়না দিচ্ছিল। কিন্তু ব্যাটে-বলে হচ্ছিল না। বছর ছয়েক পর নিম্ন পদে যোগ দেন দুবাইয়ের আল মিনা রোডের ইরানি ব্যবসায়ীর গড়া ভিআইপি জিম বা ব্যায়ামাগারে। এর মধ্যে বিল্লাল হোসেন নিজেও ব্যায়ামাগারের ওপর প্রশিক্ষণ নেন। ধীরে ধীরে ভিআইপি জিমে জ্যেষ্ঠ প্রশিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পান। এখন ভিআইপি জিমের পুরো মালিকানা তাঁর হাতে। সঙ্গে গড়ে তুলেছেন শরীর গঠনে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্যপণ্য সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠান, যা মূলত জিম ব্যবহারকারী ও স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ ব্যবহার করেন।
ভিআইপি ব্যায়ামাগারে কাজ করছেন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ১৮ জন। বাংলাদেশের বডি বিল্ডার মাকসুদা আক্তার মৌ এখন তাঁর অন্যতম কর্মী। আর ভিআইপি ব্যায়ামাগারেন গ্রাহক তালিকায় রয়েছেন দুবাইয়ের মন্ত্রী, এমিরেটস এয়ারলাইনসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরাও। দুবাইয়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের অনেক ব্যবসা গড়ে উঠলেও ব্যায়ামাগার এই একটিই।
২০০২ সালে মামার হাত ধরে দুবাইয়ে আসেন চাঁদপুরের বিল্লাল হোসেন। তবে মামার ব্যবসায় তাঁর মন বসেনি। নিজের কিছু করার ইচ্ছা তাঁকে বারবার তাড়না দিচ্ছিল। কিন্তু ব্যাটে-বলে হচ্ছিল না। বছর ছয়েক পর নিম্ন পদে যোগ দেন দুবাইয়ের আল মিনা রোডের ইরানি ব্যবসায়ীর গড়া ভিআইপি জিম বা ব্যায়ামাগারে। এর মধ্যে বিল্লাল হোসেন নিজেও ব্যায়ামাগারের ওপর প্রশিক্ষণ নেন। ধীরে ধীরে ভিআইপি জিমে জ্যেষ্ঠ প্রশিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পান। এখন ভিআইপি জিমের পুরো মালিকানা তাঁর হাতে। সঙ্গে গড়ে তুলেছেন শরীর গঠনে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্যপণ্য সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠান, যা মূলত জিম ব্যবহারকারী ও স্বাস্থ্যসচেতন মানুষ ব্যবহার করেন।
ভিআইপি ব্যায়ামাগারে কাজ করছেন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের ১৮ জন। বাংলাদেশের বডি বিল্ডার মাকসুদা আক্তার মৌ এখন তাঁর অন্যতম কর্মী। আর ভিআইপি ব্যায়ামাগারেন গ্রাহক তালিকায় রয়েছেন দুবাইয়ের মন্ত্রী, এমিরেটস এয়ারলাইনসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, স্থানীয় ব্যবসায়ীসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরাও। দুবাইয়ে বাংলাদেশের নাগরিকদের অনেক ব্যবসা গড়ে উঠলেও ব্যায়ামাগার এই একটিই।
যেভাবে মালিকানা
বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানা গেল, ভিআইপি ব্যায়ামাগার প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে। ইরানি বংশোদ্ভূত আমেরিকান নাগরিক এই ব্যায়ামাগার গড়ে তোলেন। এটির গ্রাহক তালিকায় রয়েছেন দুবাইয়ের ধনী ও প্রভাবশালীরা। দুবাইয়ের মন্ত্রীর পাশাপাশি রোলেক্স পরিবারও এই জিমের গ্রাহক।
অতিমারি করোনাভাইরাস বিশ্বের অনেক ব্যবসায়ীর সর্বনাশের কারণ হলেও বিল্লাল হোসেনের কাছে ছিল পৌষ মাস। কারণ, করোনায় ব্যায়ামাগার ব্যবসা বন্ধ হয়ে যায়।
ব্যাংকঋণ নিয়ে দেউলিয়া হওয়ার মুখে পড়ে ভিআইপি ব্যায়ামাগার। এই সুযোগ হাতছাড়া করেননি বিল্লাল হোসেন। নিজের ও পরিবারের সদস্যদের টাকায় ঋণ শোধ করে মালিকানা কিনে নেন ২০২০ সালে। এই সময় বাংলাদেশি টাকায় তাঁর খরচ হয় প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা (১২ লাখ দিরহাম)। এরপর ধীরে ধীরে বিনিয়োগ বাড়ান। গড়ে তোলেন আমানত স্পোর্ট নামে আলাদা কোম্পানি। যে প্রতিষ্ঠান থেকে শরীর গঠনে প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাদ্যপণ্য বিক্রি করা হয়। বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয় এসব পণ্য।
দুবাইয়ে গত শুক্রবার ভিআইপি ব্যায়ামাগার ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন দেশের নাগরিকেরা সেখানে শরীরচর্চা করছেন। অত্যাধুনিক সব যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে ব্যায়ামে। প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করছেন বাংলাদেশ, ভারত, ফিলিপাইন, ক্যামেরুন, যুক্তরাজ্য নাগরিকেরা। যাঁরা সবাই সনদধারী প্রশিক্ষক বলে জানালেন বিল্লাল হোসেন।
শরীরচর্চা করতে আসা রাশিয়ান এক নাগরিক বললেন, ‘ব্যায়ামাগারের পরিবেশ, উপকরণ ও প্রশিক্ষক সবই উন্নত মানের। এ জন্য আমার মতো অনেকেই এই জিমের নিয়মিত গ্রাহক।’
ব্যবসা যেমন
ভিআইপি ব্যায়ামাগারে রয়েছে ২০০ নিয়মিত ভিআইপি গ্রাহক। এ ছাড়া দৈনিক ও মাসিক ভিত্তিতে রয়েছে আরও গ্রাহক। করোনার সময়ে ব্যায়ামাগারের মালিকানা পেলেও লাভের মুখ দেখতে কিছুটা অপেক্ষা করতে হয়েছে বিল্লাল হোসেনের। কারণ, করোনার সময় গ্রাহক কম ছিল। তবে ২০২২ সালে মুনাফার দেখা পান প্রবাসী এই ব্যবসায়ী।
বিল্লাল হোসেন জানালেন, গত বছরে তাঁর ব্যায়ামাগার ব্যবসা থেকে আয় হয় ৭৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে নিট মুনাফা ছিল ১৪ শতাংশের বেশি।
বিল্লাল হোসেন বর্তমানে পরিবার নিয়ে থাকেন দুবাইয়ে। তাঁর সন্তানেরা ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলে পড়ছে। তাঁর ইচ্ছা দুবাইয়ের বিভিন্ন এলাকার পাশাপাশি সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্য শহরে ভিআইপি ব্যায়ামাগারের শাখা খোলা, যাতে ভিআইপি ব্যায়ামাগার একটি ব্র্যান্ড হিসেবে খ্যাতি পায়। এ ছাড়া আরব আমিরাতের ১০ শতাংশের বেশি নাগরিক বাংলাদেশের হওয়ায় তাঁদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাওয়ার সুযোগ রয়েছে বলে জানালেন বিল্লাল হোসেন।
বিল্লাল হোসেন বলেন, ‘কতজন মানুষ আমাদের গ্রাহক, সেটা নিয়ে আমার আগ্রহ নেই। আমি চাই মানসম্পন্ন গ্রাহক। সেভাবেই পুরো ব্যায়ামাগারকে নতুন করে সাজানো হয়েছে। দেশের অনেকেই নানা ব্যবসা ও কাজের সঙ্গে যুক্ত হলেও এটা অন্য রকম। এই ব্যবসাটা আমার কাছে নেশার মতো। ভালো থাকতে শরীর গঠন ও মানসম্পন্ন খাবারের বিকল্প নেই।’ ( সূত্র- প্রথম আলো)