চাঁদপুর

চাঁদপুরে শহরতলীর বিভিন্ন ফার্মেসিতে দেদারছে সরকারি ঔষধ বিক্রি

সরকারি ঔষধ ক্রয়-বিক্রয় দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে প্রশাসসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চাঁদপুর শহরতলীর বিভিন্ন নামে-বেনামে ফার্মেসিতে দেদারছে বিক্রি হচ্ছে সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর জন্যে নির্ধারিত সরকারি ঔষধ।

রাষ্ট্রিয় সম্পদ এসব ঔষধ শুধুমাত্র বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থসেবা কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসকের ব্যবহার করার নিয়ম থাকলেও কিছু অসাধু চক্র থেকে অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব ঔষধ গোপনে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রয় করে তা সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করছেন।

সংশ্লিষ্ট বিভাগের নিয়মিত মনিটরিং না করার কারনে আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে জেলার এমন অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানেই সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে সসরকারি ঔষধ বিক্রি করা হচ্ছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে।

অনুসন্ধানে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসসপাতালে গিয়ে জানা যায়, শহরতলীর শিলন্দীয়া এলাকা থেকে সজিব নামের এক রোগী জ্বরে অসুস্থ্ হয়ে হাসপাতালের আবাসিসক মেডিকেল অফিসসার (আরএমও) ডাঃ আসিবুল আহসান চৌধুরীর কাছে যান।

সেখানে ডাঃ তাদের প্রশ্ন করেন আগে কোন ঔষধ খাওয়ানো হয়েছে কিনা। তখন তারা এজিথ্রোমাইসিন ৫,শ মিলি, নামের লাল সবুজ রঙের একটি এন্টিবাইটিক সরকারি ঔষধ দেখান। আর সেটির গায়ে লেখা রয়েছে সসরকারি ঔষধ ক্রয়-বিক্রয় দন্ডনীয় অপরাধ।

রোগী সজিবের অভিবাবক সাফিয়া বেগম জানান, ওই ঔষধগুলো তিনি বাবুরহাট স্কুল সংলগ্ন বাজারের প্রবেশ মুখের পূর্ব পাশে বিসসমিল্লাহ ফার্মেসীর (জীবন ফার্মেসী) বিল্লাল শেখের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছেন।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে এরকম সসরকারি ঔষধ দেয়া অনেক রোগী প্রায়ই হাসসপাতালের চিকিৎসকের কাছে আসেন বলে ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন।

খবর নিয়ে জানা যায় বিসমিল্লাহ ফার্মেসীর প্রোপাইটর বিল্লাল শেখ এরকম আরো অনেক বিভিন্ন ধরনের সরকারি ঔষধ গোপনে বিক্রি করে থাকেন।

অনুসন্ধানের স্বার্থে পরিচয় গোপন রেখে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে ঔষধ ক্রয় করে অভিযোগের সত্যতা মিলে।

এ বিষয়ে বিল্লাল শেখের সাথে কথা হলে তিনি এর সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘আমি এগুলো ঢাকা মিডফোর্ট ঔষধ মার্কেট থেকে ক্রয় করে এনেছি। ৫০ পিস এনেছিলাম তা শেষ হয়ে গেছে। এখন আর আমার দোকানে তা নেই।’

এভাবেই চাঁদপুরের অনেক অসাধু ঔষধ ব্যবসায়ী সসরকারি সম্পদ প্রাইভেট ভাবে সাধারন মানুষের কাছে বিক্রি করছেন।

এ ব্যাপারে কেমিস্ট এন্ড ডাগ্রিস্ট চাঁদপুর জেলা শাখারর সভাপতি মোস্তফা রুহুল আনোয়ার চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘আমাদের সমিতিতে সার্কুলার রয়েছে যদি কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠান সরকারি ঔষধ ক্রয় বিক্রয় করে তার জন্য সমিতি দায়ী থাকবে না। সরকারি ঔষধ বিক্রি করার অপরাধে যদি কেউ আটক হন সে ব্যাপারে সমিতির পক্ষ থেকে কোন প্রকার তদবির বা সহযোগিতা করা হবে না।’

চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসসার (আরএমও) ডাঃ আসিবুল আহসসান চৌধুরীর চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘সরকারি ঔষধ তো বিক্রি করা তো দুরের কথা তা ক্রয় করাটাও অপরাধ। সে যেখান থেকেই সরকারি ঔষধ ক্রয় করে আনুক না কেনো, তা তদন্ত করে দেখা উচিত কোথা থেকে কে বা কারা এসব অপরাধ করছে।’

তিনি বলেন, ‘আমি এর আগেও কয়েকজন রোগীর কাছে জেনেছি তাদের কে ফার্মেসি থেকে সরকারি ঔষধ গুলো দেয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্র্রে আমি মনে করি রোগীদের কোন দোষ নেই। কারন তারা হয়তো জানেন না ব্যবসসায়ী ব্যাক্তি তাকে কোন ঔষধ দিচ্ছেন।’

তিনি আরো জানান, এসসব বিষয়ে আমি সিভিণ সার্জন বরাবর চিঠি লিখবো, যেসব ঔষধ ব্যবসায়ী এমন অপরাধের সাথে জড়িত, কর্তৃপক্ষ যেনো তাদের লাইন্সেস বাতিল করেন।’

প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি

Share