মেঘনায় ধরা পড়ছে ডিমওয়ালা ইলিশ : প্রশ্নবিদ্ধ অভয়াশ্রম সময়সীমা

চাঁদপুর নৌ-সীমানার পদ্মা-মেঘনা নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে ডিমওয়ালঅ ইলিশ ধরা পড়ছে ও জেলেদের মাধ্যমে চাঁদপুরের মৎস্য আড়তগুলোতে আসছে। জেলে ও ব্যবসায়ীরা অভয়াশ্রম সময়সীমা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাদের দাবি মা ইলিশ এখনো ডিম ছাড়েনি।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একদিনে প্রায় ১০ হাজার মন ইলিশ আমদানী হয়েছে বলে চাঁদপুর মৎস্য বনিক সমিতির সাধারন সম্পাদক মো. শবেবরাত কোম্পানী জানিয়েছেন।

এর মধ্যে বেশির ভাগই ডিমওয়ালা মা’ ইলিশ বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

ইলিশ প্রজনন এর সময় হিসেবে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে ৭ অক্টোবর থেকে ২৮অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন নির্ধারন করে দেওয়া হয়। সরকার এ ২২ দিন চাঁদপুর নৌ-সীমানার ষাটনল থেকে লক্ষীপুর জেলার চরআলেকজান্ডার পর্যন্ত ১শ’ কিলোমিটার এলাকায় কোন প্রকার মাছ আহরন, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন করা নিষিদ্ব করা হয়।

গত সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মৎস্য আড়ৎ গুলোতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায় চাঁদপুরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে যে ইলিশ আড়তে আসছে তার শত করা ৬০ ভাগ ইলিশের পেটে ডিম রয়েছে।

চাঁদপুর নৌ-সীমানার পদ্মা-মেঘনা নদীতে প্রচুর পরিমানে ইলিশ ধরা পড়ছ্ েএ সব ইলিশের প্রতি মন ৬শ’ গ্রামের ২০ হাজার টাকা, প্রতি কেজি ৫২০টাকা, ৭শ’ গ্রামের ইলিশ প্রতিমন ২২ হাজার থেকে ২৪ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে।

প্রতিকেজি ৬৩০ টাকা, ৭/৮শ’ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে প্রতিমন ২৭ হাজার টাকা, প্রতিকেজি ৭শ’ টাকা। ১ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিমন ৩২ হাজার টাকা, প্রতিকেজি ৮০০ টাকা থেকে ৮২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বর্মমানে প্রচুর ইলিশ আমদানী হচেছ,ক্রেতা তাদের ইচছা মত ইলিশ ক্রয় করতে দেখা যাচ্ছে।

অপরদিকে জেলে ও আড়ৎদাররা চাঁদপুর মাছ ঘাটের ৫০টির মত আড়তে প্রচুর পরিমানে ইলিশ নিয়ে আসছে। এতে করে মাছঘাট ও আড়ৎ সরগরম াহয়ে উঠেছে।

ক্রেতারা জানান, বিগত বছর এ ধরনের দামে ক্রেতারা ইলিশ ক্রয় করেনি। যার ফলে চাঁদপুর মাছ ঘাটে চঁদপুরসহ বিভিন্ন স্থানের মানুষ এসে ভিড় করতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

এদিকে নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়ে ৪ দিন অতিবাহিত হলেও ইলিশের পেটে প্রচুর পরিমানে ডিম পাওয়া যাচ্ছে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারি সত্ত্বেও মা’ ইলিশ নিধন হওয়ায় এবার ইলিশ উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্র ব্যহত হওয়ার আশংকা করছেন ব্যবসায়ীরা।

তার মধ্যে এবার জাটকা মৌসুমে জাটকা রক্ষা না হয়ে জাটকা নিধন হলে ইলিশ উৎপাদন বিগত বছরের তুলনায় অনেক গুন হ্রাস পাওয়া সম্বাবনা রয়েছে বলে ব্যবসায়ী নেতারা জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে প্রবীন ইলিশ ব্যবসায়ী মো. সিরাজ চোকদার জানান, আমার ব্যবসায়ী বয়সে চাঁদপুর নদীতে এত ইলিশ নিধন হতে দেখিনি। তবে যে পরিমান ইলিশ এ বছর পদ্মা ও মেঘনায় ডিম ছাড়তে এসেছে, সে ইলিশ ডিম চাড়ায় বাধাগ্রস্থ না হলে এ বছর ইলিশ প্রচুর উৎপাদন হতো,এবং এ ইলিশ মানুষ কম দামে খেতে পারতো।

তাঁর মতে মা’ ইলিশ ডিম ছাড়ার সময় সঠিক হয়নি। সরকারের ২২দিন নিষেধাজ্ঞার পর ও মা’ইলিশ পাওয়া যাচেছ,তাতে মনে হচেছ,সময় আরো বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর মৎস্য বনিক সমিতির সভাপতি আবদুল খালেক মাল জানান,এ বছর অবৈধ ভাবে প্রচুর মা’ইলিশ নিধন হয়েছে, প্রশাসনের অভিযান থেকে বুঝা যায়। মা’ ইলিশ লোনা পানির ও গভীর জলের মাছ। এ মা’ইলিশ ডিম ছাড়ার পূর্বেই ধরা পড়ে যাওয়ায় ডিম ছাড়তে পারেনি। এতে করে ইলিশ উৎপাদন আগামীতে কম হওয়ায় সম্বাবনা রয়েছে। তবে এখন ও মা’ইলিশ প্রচুর পাওয়া যাচেছ।

তাঁর ধারণা ইলিশ ডিম ছাড়ার সময় পায়নি। এতে করে ইলিশের প্রজনন তথা অভয়াশ্রম সময় আরো বৃদ্বি করা প্রয়োজন বলে আমি সরকারের দৃস্টি আর্কষন করছি।

প্রতিবেদক- শরীফুল ইসলাম
৩১ অক্টোবর, ২০১৮

Share