জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার এখলাছপুর ইউনিয়নের চরকাশিম (পাতনাকান্দি) গ্রামের মনজিল বকাউলের কলেজ পড়ুয়া ছেলে মো. সাদ্দাম হোসেন (২২)কে বুধবার (০৪ মে) পিটিয়ে হত্যা করেছে তার প্রতিপক্ষরা।
এ ঘটনায় নিহত সাদ্দামের পিতা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার (৫ মে) সকালে মতলব উত্তর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মতলব উত্তর থানা সূত্রে জানা যায়, সকালে শসা ও করলা ক্ষেতে বাঁেশর খুটি দিয়ে ঝাড় নির্মাণ করতে গেলে সাদ্দাম হোসেনের সাথে প্রতিপক্ষ জামাল ও তার সহযোগীদের সাথে জমির সীমানা নিয়ে কথা কাটা-কাটি হয়। একপর্যায়ে এ ঘটনা এলাকার শালিশগনের মাধ্যমে বুধবার সকালের ঘটনা মিমাংশা করা হয়।
এরপর ওই দিনই সাদ্দাম হোসেন বিকেলে শসা ক্ষেতে কাজ করতে গেলে একই গ্রামের প্রভাবশালী রুস্তম আলীর নির্দেশে হাতেম মোল্লার ছেলে ও তার সঙ্গপঙ্গ নিয়ে সাদ্দামের উপর অতর্কিত হামলা দেয় এবং লাঠি-সোটা ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে এলোপাথারি মারধর করে।
একপর্যায়ে সাদ্দামের মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করলে মুহুর্তের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সাদ্দাম। পরে পাশের জমিতে কর্মরত সাদ্দামের চাচা এসে তাকে উদ্ধার করেন। এরপর চিকিৎসার জন্য তাকে ট্রলার যোগে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে উন্নত চিকিৎসার জন্য কর্মরত ডাক্তার তাকে ঢাকা প্রেরণ করেন। ঢাকা নেওয়ার পথে মতলব ফেরীঘাটে মৃত্যুবরণ করে সাদ্দাম।
মতলব ডিগ্রি কলেজে পড়–য়া এই ছাত্রে মৃত্যুতে এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া। সাদ্দামের পিতা মাতা, ভাই বোন ও আত্মীয়-স্বজনেরা শোকের মাতমে দিশেহারা।
এলাকাবাসী জানায়, রুস্তম আলী সবসময়ই এলাকায় প্রভাব বিস্তার করে থাকে। তার কথা মত না চললে সবাইকে গুনতে হয় মোটা অংকের জরিমানা। রুস্তমের অনুমতি ছাড়া ছেলে মেয়েদের বিবাহ পর্যন্ত হয়না। এমনকি বাচ্চাদের মুসলমানী করাতে হলেও তার অনুমতি শতভাগ প্রযোজ্য। এমন সব নিয়মেই চলছে চরকাশিমপুর পাতনাকান্দি গ্রাম। রুস্তমের এসব অত্যাচার ও নির্যাতন থেকে বাঁচতে চায় স্থানীয় এলাকার নিরীহ জনগণ। উর্ধতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ও সাদ্দাম হত্যার সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানান এলাকাবাসী।
সরেজমিনে গিয়ে রুস্তমের বাড়িতে গিয়ে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। বুধবার রাতে তাদের বাড়ি থেকে গরু-বাছুরসহ সকল গবাদি পশু ও আসবাবপত্র সরিয়ে নিয়েছে। এতে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে স্থানীয় এলাকায়।
মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.আলমগীর হোসেন মজুমদার ও ইউপি চেয়ারম্যান মুছাদ্দেক হোসেন মুরাদ বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ওসি আলমগীর হোসেন মজুমদার বলেন, লাশ উদ্ধার করে ইতিমধ্যে বৃহস্পতিবার ভোরেই ময়না তদন্তের জন্য মৃতদেহ পোস্টমের্টমে পাঠানো হয়েছে।
দ্রুত আসামীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি এলাকাবাসীকে জানান। উত্তেজিত না হওয়ার জন্য স্থানীয়দের প্রতি অনুরোধ জানান ওসি।
মতলব উত্তর করেসপন্ডেন্ট : আপডেট ২:০০ এএম, ০৬ মে ২০১৬, শুক্রবার
ডিএইচ