চাঁদপুরের সব পৌরসভার শতভাগ স্যানিটেশন গড় অর্জনে আরোও ১২ ভাগ পিছিয়ে রয়েছে । জাতীয়ভাবে সর্বপ্রথমে ২০০৩ সালের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর দেশব্যাপি একটি জরিপ কাজ পরিচালনা করে।
ঔ জরিপের রিপোর্ট মতে, চাঁদপুরের ৬ পৌরসভার তখন পরিবারের সংখ্যা ছিল ৪৪ হাজার ৪ শ’ ৯০ টি। তখন স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারী সংখ্যা ছিল ২৭ হাজার ৭ শ’ ৬১ টি পরিবার।
পরবর্তীতে ২০১১ সালের জাতীয় আদমশুমারি অনুযায়ী চাঁদপুরের সব পৌরসভার পরিবারের সংখ্যা ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ৮৯ হাজার ৮ শ’ ২৪ টি পরিবার । যার হার ৮৮ % ।
২০১১ সাল থেকে পৌরসভার নিজস্ব তহবিল ও সরকারি উন্নয়ন কাজের ২০% তহবিল কর্তৃক ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সহায়তায় ডিপিএইচ ই, এনজিও, পারিবারিক বা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ও কমিউনিটি কর্তৃক স্থাপিত বা নির্মিত স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৯ বছরের মাথায় ৫৩ হাজার ৪ শ’ ৮৯ টি পরিবার বৃদ্ধি পেয়ে সাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা দাঁড়ায় ৭৯ হাজার ৭ শ’ ২০ টি।
প্রাপ্ত পরিসংখ্যান মতে, আরো ১০ হাজার ১০ শ’ ৪ পরিবারের মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারের হাওয়া এখনো লাগে নি। যার হার ১২ % সবচাইতে পিছিয়ে রয়েছে চাঁদপুর পৌরসভা।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর চাদঁপুরের দেয়া তথ্য মতে, ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত চাঁদপুর পৌরসভার পরিবারের সংখ্যা ছিল ২৫ হাজার ৭ শ ৪৮ টি । এর মধ্যে সাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা হলো ২১ হাজার ২ শ ৭৫ টি পরিবার । যার অর্জনের হার ৮২ %।
কচুয়া পৌরসভার পরিবারের সংখ্যা ৫ হাজার ১শ’ ২৫ টি । এর মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা হলো ৫ হাজার ১শ’ পরিবার । যার অর্জনের হার ৯৯ %।
শাহরাস্তি পৌরসভার পরিবারের সংখ্যা ৫ হাজার ৮ শ’ ২৮ টি । এর মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা ৫ হাজার ৭শ ‘ ৫৭ টি পরিবার। যার হার ৯৮ %।
হাজীগঞ্জ পৌরসভার পরিবারের সংখ্যা ১২ হাজার ৬ শ’ ৭৯ টি। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা ১১ হাজার ৮ শ’ ৩৭ টি পরিবার । যার হার ৯৩ %।
মতলব পৌরসভার পরিবারের সংখ্যা ২১ হাজার ৯ শ’ ২৪ টি। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা ১৭ হাজার ৭ শ’ ১৯ টি পরিবার । যার হার ৮০ %।
ছেঙ্গারচর পৌরসভার পরিবারের সংখ্যা ১৮ হাজার ৫ শ’ ২০ টি। এর মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারকারী পরিবারের সংখ্যা ১৬ হাজার ৮ শ ১২ টি পরিবার । যার হার ৯০ %।
পৌরসভাগুলোর শহরতলি বা পল্লী এলাকায় স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারে কিছুটা নাজুক পরিস্থিতিতে বিরাজ করছে । এ ছাড়াও যৌথ পরিবারগুলো পারিবারিক কারণে একান্নভুক্ত পরিবারে পরিণত হওয়ায় দিন দিন স্যানিটেশন পরিসংখ্যানের পরিবর্তনও হচ্ছে।
চাঁদপুরের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ কবির চৌধুরী চাঁদপুর টাইমসকে জানান , ‘ স্যানিটেশনের ক্ষেত্রে আমাদের অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে । পরিবেশগত দিকে তাকালে আমরা দেখতে পাই উম্মুক্ত স্থানে মলমূত্র ত্যাগ করার প্রবণতা মানুষের ভেতর এখন আর নেই । ’
তিনি আরো বলেন , ‘ সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন ব্যবহারে ব্যাপক সচেতনতা বেড়েছে। পানিবাহিত রোগ ডায়রিয়া ও ডিসেন্ট্রি দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে । গ্রামের বাড়িতে নিজ নিজ পরিবারের ভেতর একটি স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন পারিবারিক মার্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছে ।’
জাতীয়ভাবে ২০১৮ সালের মধ্যে সারা দেশে শতভাগ স্যানিটেশন অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। বিশ্বে ২০৩০ সালের মধ্যেই হয়ে যাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
আবদুল গনি , ১৯ জানুয়ারি ২০২০ ।