চাঁদপুর হাইমচরের নীলকমল ইউনিয়নের আশ্রায়ন প্রকল্পে সকল অধিবাসীদেরকে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানানো হয়েছে্। যার যার মালামাল ফসল নিজ নিজ দায়িত্বে রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে । নীলকমল ইউনিয়নে ১২টি মৌজার প্রায় ১৫-২০ হাজার মানুষকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় আশ্রায়ন কেন্দ্রে যেতে বলা হয়েছে । বিশেষ করে ঈশানবালা, চরগাজীমনিপুর, মাঝিরবাজার,চেয়ারম্যান বাজার,চররাও এলাকার সবাইকে ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাত থেকে দুরে ও নিরাপদ স্থানে থাকার কথা বলা হয়েছে ।
নীলকমল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সউদ আল নাসের চাঁদপুর টাইমসকে বলেন,‘ সকল চরাঞ্চলবাসীকে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় তাদের গরু,বাছুর,হাঁস,মুরগি ,ফসল ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে উঁচু স্থানে বা আশ্রায়ন প্রকল্পে যেতে বলেছি । সবাইকে ধৈর্য্যধারণ করে প্রাকৃতিক এ বিপদকে মোকাবেলা করতে আহবান জানিয়েছি। তাছাড়াও সার্বক্ষণিক অধিবাসীদের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে । ’
চাঁদপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে-চাঁদপুর জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থপনা ও ত্রাণ শাখার সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী জেলা সদরে ২৯টি, ফরিদগঞ্জে ৩১টি, হাইমচরে ২৪টি, হাজীগঞ্জে ৪৪টি, কচুয়ায় ৫১টি, মতলব উত্তরে ৬২টি, মতলব দক্ষিণে ৮৮টি, শাহরাস্তিতে ২৪টি আশ্রয়ণকেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব আশ্রয়ণ কেন্দ্রে ১লাখ ১৪ হাজার ৫৬৭ জন থাকার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে।
এদিকে চাঁদপুর পদ্মা, মেঘনা,ডাকাতিয়া নদী উপকূলীয় এলাকায় সচেতনতামূলক মাইকিং অব্যাহত রেখেছে কোস্টগার্ড চাঁদপুর স্টেশন। একই সঙ্গে শহর ও আশপাশে ঘূর্ণিঝড় মোখা সম্পর্কে সর্বসাধারণকে সতর্ক থাকার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স চাঁদপুর।
নৌ-পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা পূর্ব এবং পরবর্তী সময়ের সতর্কতা বিষয়ে আমাদের নৌ-অঞ্চলে মাইকিং করে প্রচারণা চলছে। চাঁদপুর,শরীয়তপুর, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লা জেলার যেসব থানা ও পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে জনগণের জান-মালের নিরাপত্তার জন্য কাজ করছি এবং করব। বিশেষ করে লঞ্চঘাট ও ছোট নৌযানগুলো নিরাপদে রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, চাঁদপুরসহ উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম,ফেনী,নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। বলে আবহাওয়া বিভাগ জানান।
ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮-১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা চাঁদপুর,ফেনী,নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর,বরিশাল, ভোলা,পটুয়াখালী,ঝালকাঠি,পিরোজপুর,বরগুনা এবং এসব এলাকার অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
আবদুল গনি
১৩ মে ২০২৩
এজি