Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরের দুটি ব্রিজ থেকে সরকারের ১০ কোটি টাকা রাজস্ব আয়
ব্রিজ
চাঁদপুর-রায়পুর ব্রিজ

চাঁদপুরের দুটি ব্রিজ থেকে সরকারের ১০ কোটি টাকা রাজস্ব আয়

চাঁদপুরের দুইটি ব্রিজ থেকে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে ১০ কোটি ১ লাখ ৩৬ হাজার টাকার রাজস্ব আদায় করা করেছে সরকারের সড়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রাপ্ত তথ্য মতে, চাঁদপুর জেলায় চারটি বড় রকমের ব্রিজ রয়েছে। এগুলো হলো: চাঁদপুর-রায়পুর ব্রিজ, মতলব ব্রিজ, চাঁদপুর-পুরান বাজার ব্রিজ এবং হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ ব্রিজ। চাঁদপুর-রায়পুর ব্রিজটি ৩ বছর মেয়াদে একটি টোল আদায় প্রতিষ্ঠানের সাথে টোল আদায়ের চুক্তি হয়। তিন বছরে ব্রিজ থেকে সরকারের রাজস্ব আসে ৭ কোটি ৮০ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। যার চুক্তি হয়েছিল ১২ জুলাই ২০১৮ এবং যার মেয়াদ ৩০ জুন ২০২১ শেষ হয়। ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ২৪৮ মিটার। যা ১৮ কোটি ১২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল। চাঁদপুর জেলা সদরের ওয়্যারল্যাস দিয়ে দক্ষিণে চলে যাওয়া ডাকাতিয়া নদীর ওপর ব্রিজটি নির্মিত হয় ।

মতলব উত্তর-দক্ষিণের সাথে সেতুবন্ধন ও ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ তথা কৃষিপণ্য দ্রব্য পাঠাতে, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার সাথে যোগাযোগা করতেই মতলব ব্রিজ নির্মিত হয়। ব্রিজটি টোল আদায়ের চুক্তি হয়েছিল ১ জানুয়ারি ২০১৯ এবং এর মেয়াদ শেষ হয় ২০২১ সালের ৩০ জুন। এ ব্রিজটি থেকে সরকার ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত রাজস্ব পেয়েছে ২ কোটি ২০ লাখ ৮০ হাজার টাকা। ৮৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয়ে মতলবের মেঘনা-ধনাগোদা নদীর ওপর এটি নির্মিত হয়। যার দৈর্ঘ্য ৩০৪.৫১ মিটার। ব্রিজটি বর্তমানে নতুন টোল চলছে।

হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ ব্রিজটি ২০ নভেম্বের ২০০২ সাল পর্যন্ত টোল আদায় চুক্তি হয়েছিল । যার মেয়াদ ৯ নভেম্বর ২০১০ সাল পর্যন্ত ছিল। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী ,পরিবহণ মালিক-শ্রমিকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তৎকালীন সময়ে ২০১০ সালে টোল আদায় মুক্ত ঘোষণা করা হয়। ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ১১৬.৬১ মিটিার। দৈর্ঘ্য সাড়ে ১০ মিটার ।

চাঁদপুর-পুরাণ বাজার ব্রিজটি ১১ মার্চ ২০১০ সালে টোল চুক্তিবদ্ধ হয়েছিল। ১১ মার্চ ২০১১ সালে ব্রিজটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি,চাঁদপুরের ব্যবসায়ীমহল,পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও চাঁদপুরবাসীর আবেদনের ফলে ব্রিজটির টোল মুক্ত ঘোষণা করা হয় । ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ২৬০.৫৯ মিটার ।

সড়ক ও জনপথ বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান,দেশের বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয় নিয়ে একটি ‘ জাতীয় টোল আদায় কমিটি গঠন’ করা হয়। ঐ কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২০১৪ সালে সারাদেশের ব্রিজগুলোর রাজস্ব আদায় নিয়ে একটি জাতীয় টোল আদায় নীতিমালা করা হয়েছে। জাতীয় ঔ নীতিমালায় দেশের সব জেলায় ১৯৯ মিটার দৈর্ঘ্য পর্যন্ত ব্রিজের টোল আদায় যোগ্য নয়। এর ওপরের গুলোতে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ রাজস্ব আদায় করতে পারবে বলে বিবেচিত হবে।

জাতীয় টোল আদায় নীতিমালা অনুযায়ী চাঁদপুরের মতলব ব্রিজ ও চাঁদপুর-রায়পুর এ ব্রিজ দু’টোসহ অপর দুটোও টোল আদায়যোগ্য। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘ চাঁদপুরের অপর দু’টি বড় ধরনের ব্রিজ পুরাণ বাজার-চাদপুর এবং হাজীগঞ্জ-রামগঞ্জ ব্রিজ দু’টোই বর্তমানে ২০১৪ সালের টোল আদায় নীতিমালার পূর্বেই টোলমুক্ত ঘোষণা দেয়া হয়েছে।

সুতরাং এ নীতিমালার আওতায় হলেও টোল আদায় করা সম্ভব হচ্ছে না। ’ অদূর ভবিষ্যতে ব্রিজগুলো টোলের আওতায় আসা সম্ভব কিনা এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,‘আন্ত:মন্ত্রণালয় বৈঠকে জাতীয় নীতিমালা ২০১৪ সালে গৃহীত হয়। এতে সরকারের পরিকল্পনা,যোগাযোগ, সেতু ,অর্থ,সংস্থাপন মন্ত্রণালয়সহ বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত হয়েছে জাতীয় টোল আদায় নীতিমালা ২০১৪। বিষয়টি সম্পূর্ণ কমিটির সিদ্ধান্তের ব্যাপার। সড়ক ও জনপথ বিভাগ ইচ্ছা করলেই ‘টোল আদায় চুক্তি’ বা ‘টোল মুক্ত ঘোষণা করতে পারে না।’

আবদুল গনি
১ মে ২০২৩
এজি