চাঁদপুরের তিন উপজেলা ভূমিহীন-গৃহহীন মুক্ত হচ্ছে: জেলা প্রশাসক

চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমি ও গৃহ প্রদান কার্যক্রমের ৩য় পর্যায়ের অবশিষ্ট ও ৪র্থ পর্যায়ের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠান উপলক্ষে সাংবাদিকদের সাথে প্রেস ব্রিফিং ও মতবিনিময় সভা হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান বলেন, “বাংলাদেশের একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না” প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজ বুধবার সারাদেশের ন্যায় চাঁদপুর জেলার তিন উপজেলায় গৃহহীন মুক্ত হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই মানবিক উদ্যোগকে সফল করার জন্য আমি সকলের সহযোগিতা কামনা করছি। এছাড়াও তিনি বলেন, তাদেরকে পরবর্তীতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, ঋণ ও প্র্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার ২২ মার্চ ৪র্থ পর্যায়ে ৩৯,৩৬৫ টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ প্রদান কার্যক্রমের শুভ উদ্বোধন করবেন।

২১ মার্চ মঙ্গলবার প্রেস কনফারেন্সে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আরডিসি শারমিন আক্তার, এডিসি জেনারেল রাশিদা আক্তার, এডিসি (আইসিটি ও শিক্ষা) বশির হোসেন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সানজিদা শাহনাজ, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সোহেল রুশদী, সাবেক সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটওয়ারী, দৈনিক প্রভাতী কাগজের সম্পাদক ও প্রকাশক আবদুল আউয়াল রুবেল সহ অন্যান্য প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসকের এক প্রেস রিলিজের তথ্য মতে, চাঁদপুর জেলার ১৫৯৯ টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের মধ্যে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ৫৬ টি, মতলব উত্তর উপজেলায় ১৮৫ টি ও শাহরাস্তি উপজেলায় ৫৮ টি হালনাগাদকৃত ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারের সকলকে পুনর্বাসন করায় আপাতত এ তিন উপজেলায় কোন ভূমিহীন নেই। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর ও শাহরাস্তি উপজেলাকে এ পর্যায়ে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন।

সারাদেশে ১ম পর্যায়ে ৬৩,১৯৯, ২য় পর্যায়ে ৫৩,৩৩০ ও ৩য় পর্যায়ে ৫৯,১৩৩ ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে জমিসহ গৃহ প্রদান করা হয়েছে। ১ম,২য়,৩য় ও ৪র্থ পর্যায়ে হস্তান্তরিত গৃহের সংখ্যা ২,১৫,৮২৭ টি। সর্বশেষ হালনাগাদকৃত তালিকা অনুযায়ী চাঁদপুর জেলায় ‘ক’ শ্রেণির ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার এর সংখ্যা ১৫৯৯ টি। ১ম পর্যায়ে একক গৃহের মাধ্যমে ১৩৫ টি পরিবারকে, ২য় পর্যায়ে ১০৯টি পরিবারকে এবং ৩য় পর্যায়ে ১২৩ টি পরিবারকে অর্থাৎ ৩ পর্যায়ে সর্বমোট ৩৬৭ টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে, ব্যারাকে ৯১৪ টি পরিবার ও অন্যান্যভাবে ১৫ টি পরিবারকে অর্থাৎ মোট ১২৯৬ টি পরিবারকে ইতোমধ্যে পুনর্বাসন করা হয়েছে এবং ৪র্থ পর্যায়ে বরাদ্দপ্রাপ্ত ১৯৮টি গৃহের মধ্যে ৫৩ টি গৃহ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে এবং ১৪৫ টি গৃহের কাজ চলমান। অবশিষ্ট গৃহের কাজ দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এ পর্যায়ে ২২ মার্চ ২০২৩ তারিখে উদ্বোধনযোগ্য ৬০টি গৃহের মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলায় ৪টি, ফরিদগঞ্জ উপজেলায় ৩১টি, কচুয়া উপজেলায় ১৮টি, হাজীগঞ্জ উপজেলায় ৫টি ও শাহরাস্তি উপজেলায় ২টি গৃহ সম্পূর্ণরূপে উদ্বোধনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

এ সকল পরিবারকে এক টাকা সেলামীতে দুই শতক জমি বন্দোবস্ত প্রদান করা হয়েছে। উক্ত ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মধ্যে কবুলিয়ত রেজিস্ট্রেশন, নামজারী ও জমাখারিজ খতিয়ান সৃজন, সনদপত্র প্রদানসহ সকল কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। সরকার কর্তৃক কবুলিয়ত দলিলের জন্য পরিবার প্রতি ২৫৮/- টাকা, নামজারী ও খতিয়ান প্রদান বাবদ ১১৭০/- টাকা প্রদান করা হয়েছে। এতে নামজারী, জমি রেজিস্ট্রেশন ও আনুসাঙ্গিক খরচ বাবদ তাদের কোন টাকা ব্যয় করতে হয়না। প্রতিটি একক গৃহের আয়তন ৪০০ বর্গফুট। দুই কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা গৃহে একটি টয়লেট, একটি রান্নার কক্ষ ও একটি ইউটিলিটি স্পেস রয়েছে।

৬০টি গৃহের মধ্যে চাঁদপুর সদরে ৪টি, হাজীগঞ্জে ৫টি, কচুয়াতে ৬টি পরিবারকে অবৈধ দখল উচ্ছেদের মাধ্যমে খাস জমিতে পুনর্বাসন করা হচ্ছে এবং অবশিষ্ট ৪৫টি পরিবারকে জমি ক্রয়ের মাধ্যমে পুনর্বাসন করা হবে।

প্রতিবেদক: আবদুল গনি, ২১ মার্চ ২০২৩

Share