চার নদীর আশির্বাদপুষ্ট জল-জোছনার অনন্য নগর ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর। শত বছরের সমৃদ্ধ ইতিহাস- ঐতিহ্যকে ধারণ করে এই জনপদের পথচলা। এই উর্ভরভূমির সোনালী ফসল শত-সহম্র সূর্যসন্তান। যাঁদের জীবন ও কর্মের আলোয় আলোকিত হয়েছে জাতীয় সীমানা এমনকি উপমহাদেশের ভূ-ভাগও।
সুদীর্ঘ কালের পরিক্রমায় তাঁদের কারো কারো স্মৃতিময় জীবনপাতা বিস্মৃতির আস্তরণে মলিন হতে শুরু করেছে। অথচ তাদের সুকৃতি হতে পারে আমাদের পথ ও পাথেয়।
চাঁদপুরের শতাধিক গুণি মানুষের বর্ণিল জীবনের কিছু বর্ণচ্ছটা এক মলাটে বন্দী করে প্রকাশিত হলো গবেষণালব্ধ বই ‘চাঁদপুরের চাঁদমুখ’। তরুণ লেখক ও সাংবাদিক আশিক বিন রহিমের তৃতীয় গ্রন্থ ‘চাঁদপুরের চাঁদমুখ’। বইটিতে চাঁদমুখদের জীবন ও কর্ম নিয়ে লেখার পাশাপাশি সংক্ষিপ্তভাবে চাঁদপুরের পরিচিতি, ইতিহাস, পরিচিতি, ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধসহ নানান তথ্য-উপাত্থ তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে জেলার ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থানসহ দুর্লভ কিছু ছবি।
চমৎকার প্রচ্ছদে ‘চাঁদপুরের চাঁদমুখ’ প্রকাশ করেছে দেশের অন্যতম খ্যাতনামা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান পরিবার পাবলিকেসন্স। ১৮০ পৃষ্ঠার বইটির মূল্য ধরা হয়েছে ৪০০ টাকা। ঘরে বসে ‘চাঁদপুরের চাঁদমুখ’ সংগ্রহ করা যাবে বইপরিবার, রকমারি ডটকম সহ দেশের সকল অনলাইন বুকসপে।
বইটির বিষয়ে লেখক আশিক বিন রহিম বলেন- চাঁদপুরের আলোকিত মানুষদের সম্পর্কে জানার আগ্রহ থেকেই ‘চাদপুরের চাঁদমুখ’ গ্রন্থটি প্রকাশের প্রয়াস। বইটি পাঠে বিদগ্ধ পাঠক চাঁদপুরকে জানবার অগ্রহ অনেকটাই মেটাতে পারবেন। সেই সাথে এখানকার দীর্ঘকালের ইতিহাস-ঐতিহ্য, শিল্প-সংস্কৃতির বিষয়ে সম্যক ধারণা লাভ করবেন এবং এই শ্যামলা ভূমিতে জন্ম নেয়া সকল আলোকোজ্জ্বল ব্যক্তির বৈচিত্র্যময় জীবন ও কর্ম সম্পর্কে অবগত হবেন।
নানান সীমাবদ্ধতার কারনে ইচ্ছে থাকলেও আরো অনেক কৃতিজনের জীবন ও কর্মকতা এখানে তুলে ধরা সম্ভব হয়নি। তবে পরবর্তী সংস্করণ বা খণ্ডে সে প্রয়াশকে জিইয়ে রাখছি। গ্রন্থটির প্রচ্ছদ লেখাগুলো প্রত্যেকের জন্ম তারিখের ক্রমানুসারে সাজানো হয়েছে।
আশিক বিন রহিম বলেন, গ্রন্থটি প্রকাশে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত পরিবার পাবলিকেসন্স এর কর্ণধার সোহানুর রহিম শাওন, প্রয়াত লেখক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রকৌ. মো. দেলোয়ার হোসেন, সর্বজন শ্রদ্ধেয় মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক জীবন কানাই চক্রবর্তী, সাহিত্য মঞ্চে’র সভাপতি মাইনুল ইসলাম মানিকসহ যারা নানান ভাবে আমাকে তথ্য, বুদ্ধি-পরামর্শ, সাহস এবং শ্রম দিয়ে সহযোগিতা করেছেন তাদের সকলের প্রতি আমি চির কৃতজ্ঞ।
উল্লেখ: কবি ও গল্পকার আশিক বিন রহিম ১৯৮৭ সালে চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আব্দুর রহিম, মা বেগম ফয়জুননেছা। প্রায় দেড়যুগ ধরে লেখালেখির সাথে সম্পৃক্ত। দেশের বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক, অনলাইন জার্নাল ও ছোটকাগজে নিয়মিত লিখছেন।সম্পাদনা করছেন কবিতার কাজগ ‘তরী নাম লিটলম্যাগ। চাঁদপুরের শিল্প- ও সাহিত্যের সংগঠন ‘সাহিত্য মঞ্চ’র প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক তিনি। প্রকাশিত গ্রন্থ: পদ্মপ্রয়াণ (কাব্য, ২০১৯), জাল ও জলের আখ্যান (তারুণ্যের সন্ধানে পাণ্ডুলিপি পুরস্কারপ্রাপ্ত)।
আশিক বিন রহিম সাহিত্যকর্মের স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন, চাঁদপুর সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার, চতুরঙ্গ ইলিশ উৎসব পুরস্কার, ফরিদগঞ্জ লেখক ফোরাম পুরস্কার, নাগরীক বার্তা লেখক সম্মাননা, নতুন কুঁড়ি লেখক সম্মাননা। ২০১৯ সালে ভারতের নয়াদিল্লীতে অনুষ্ঠিত সার্ক সাহিত্য সম্মেলনে যোগদান করেন।
স্টাফ করেসপন্ডেট,১৯ মার্চ ২০২১