Home / চাঁদপুর / চাঁদপুরের কৃতীসন্তান ইকবাল মাহমুদ দুদক চেয়ারম্যান
Ikbal Mahmud

চাঁদপুরের কৃতীসন্তান ইকবাল মাহমুদ দুদক চেয়ারম্যান

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন চাঁদপুরের কৃতীসন্তান প্রাক্তন সিনিয়র সচিব ইকবাল মাহমুদ। গত বৃহস্পতিবার (১০মার্চ, ২০১৬ খ্রিস্টাব্দ) দুপুরে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এ নিয়োগপত্রে স্বাক্ষর করেন।

রাষ্ট্রপতি একই সাথে অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ এএফএম আমিনুল ইসলামকে দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ৫(১) ধারার বিধান মতে জনাব ইকবাল মাহমুদ, কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশনকে কমিশনের চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়।

এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ১৩ ধারার বিধান মতে কমিশনের চেয়ারম্যান জনাব ইকবাল মাহমুদের বেতন, ভাতা, অন্যান্য সুবিধা ও পদমর্যাদা সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের একজন বিচারকের এবং কমিশনার জনাব এ,এফ,এম আমিনুল ইসলামের বেতন, ভাতা, অন্যান্য সুবিধা ও পদমর্যাদা সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একজন বিচারকের সমরুপ নির্ধারণ করা হয়।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম গত বৃহস্পতিবারই এ প্রজ্ঞাপন জারি করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের বাড়ি চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ উপজেলাধীন চরহোগলা গ্রামে। তাঁর পিতার নাম মোঃ আবদুল লতিফ (৯৮) এবং মাতা মাহফুজা বেগম (৯০)। তাঁর পিতা টানা ৬৪ বছর শিক্ষকতার পেশায় নিয়োজিত থেকে এলাকায় একজন আদর্শ শিক্ষক হিসেবে সমধিক পরিচিত। তিনি তাঁর পিতার একজন সুযোগ্য সন্তান। প্রশাসনের ক্যাডার সার্ভিসের চাকুরি জীবনে তিনি অত্যন্ত দক্ষ, কর্মঠ, সুযোগ্য ও দায়িত্বশীল হিসেবে সর্বজনস্বীকৃত এবং সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব। তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব থাকাকালে দেশের বিভিন্ন জেলা প্রশাসকগণকে মাঠ পর্যায়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতকরণে বিশেষ ভূমিকা রাখেন।

দুদক চেয়ারম্যান জনাব ইকবাল মাহমুদ ৩০ জানুয়ারি ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে বিসিএস (প্রশাসন) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরি জীবন শুরু করেন। তিনি যথাক্রমে ঢাকা, নোয়াখালী ও খুলনায় সহকারী কমিশনার, ঝালকাঠিতে ম্যাজিস্ট্রেট, নোয়াখালীর সদর উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট, ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট, নোয়াখালী সদর থানা নির্বাহী কর্মকর্তা, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম সেনানিবাসের সিভিল এফেয়ার্স কর্মকর্তা, চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মহাব্যবস্থাপক, বিসিএস প্রশাসন একাডেমীর উপ-পরিচালক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের পরিচালক, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব, গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের উপ-সচিব, জাপান আন্তর্জাতিক করপোরেশন এজেন্সির উপদেষ্টা, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব, মৎস্য ও পশু সম্পদ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব এবং যথাক্রমে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, যোগাযোগ মন্ত্রণালয়, সংস্থাপন মন্ত্রণালয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের পূর্ণ সচিবসহ সিনিয়র সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সিনিয়র সচিব এবং সর্বশেষ এশিয় উন্নয়ন ব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি তাঁর দীর্ঘ চাকুরি জীবনে দেশে-বিদেশে অসংখ্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। এর মধ্যে স্থানীয় প্রশিক্ষণ কোর্স সমূহের শিরোনামগুলো হচ্ছে যথাক্রমে- ফাউন্ডেশন ট্রেনিং, স্পেশাল বেসিক টাইপিং , ল’ এন্ড এডমিনেস্ট্রেশন, লাইব্রেরী ম্যানেজমেন্ট ট্রেনিং, সার্ভে এন্ড সেটেলমেন্ট ট্রেনিং, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট, টেনথ্ কন্ডাক্ট এন্ড ডিসিপ্লিন কোর্স, কম্পিউটার কোর্স অন এডমিনেষ্ট্রেশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট, ট্রেনিং অফ ট্রেইনার্স, সিনিয়র ষ্টাফ কোর্স, ম্যানেজিং এ্যাট দ্যা টপ-টু (ব্যাচ-ওয়ান)।

১৯৮১ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২০০৬ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি এসব প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দ থেকে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত বিদেশী প্রশিক্ষণ কোর্স সমূহের শিরোনামগুলো হচ্ছে যথাক্রমে- জাপানে দুর্যোগ প্রতিরোধ প্রযুক্তি, সুইডেনে সার্বিক যোগ্যতা ব্যবস্থাপনা, জাপানে বেসরকারিকরণ, অষ্ট্রেলিয়ায় নীতি নির্ধারণী দক্ষতা, চীনে অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের জন্য চীন উন্নয়নশীল দেশসমূহের সেমিনার, জাপানে দক্ষতা উন্নয়ন ও কার্যকর সহযোগিতা, সিঙ্গাপুরে জ্ঞান ব্যবস্থাপনা, সিঙ্গাপুরে সিভিল সার্ভিস কলেজে প্রশিক্ষণ, অষ্ট্রেলিয়ায় সপ্তম গ্লোবাল রি-ইনভেন্টিং গর্ভণমেন্ট ফোরাম, আমেরিকায় যোগাযোগ কাঠামো অর্থনৈতিক এবং নিয়মিতকরণ।

দুদকের চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দে জনপ্রশাসন বিষয়ে এমএসএস এবং ২০০১খ্রিস্টাব্দে নীতি এবং ব্যবস্থাপনা বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেন। তাঁর স্ত্রী ডাঃ খাদিজা বেগম পিএইচডি ডিগ্রীধারী। ব্যক্তিজীবনে তিনি এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক।

তাঁর কন্যা ডাঃ আমিনা মাহমুদ এমবিবিএস ডিগ্রীধারী এবং পুত্র ইকবাল আমিন কানাডায় অর্থনীতি বিষয়ে উচ্চ শিক্ষায় অধ্যয়নরত। সততা, ন্যায়নিষ্ঠা এবং নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দুদককে একটি কার্যকর, গতিশীল ও শক্তিশালী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার জন্য তিনি চাঁদপুরবাসীসহ দেশবাসীর কাছে দোয়া প্রার্থী।

: আপডেট ৩:১৬ এএম, ১৩ মার্চ ২০১৬, রোববার

ডিএইচ