ঈদ মানে অনন্দ, ঈদ মানে খুশি। খুশির দিনে নতুন পোশাক না হলে কি চলে?। একটি নতুন পোশাকের খোঁজে দুই ঘন্টা ধরে শহরের বেশ কয়েকটি মার্কেট চষে বেড়িয়েছেন এক নারী।
ভারতীয় টিভি চ্যানেলে দেখা ‘বাজিরাও মাস্তানি’ নামের পোশাকটি তার আগে থেকেই নির্ধারণ করা। দীর্ঘক্ষণ বিভিন্ন মার্কেটে ঘুরে অবশেষে শহরের হাকিম প্লাজার দ্বিতীয় তলার একটি দোকানে গিয়ে পেলেন কাঙ্খিত সে পোশাক। প্রতিটি ‘বাজিারাও মাস্তানি’র মূল ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা।
ইন্ডিয়ান পোশাক বলে কথা, ‘দাম একটু বেশিই হবে’ এটাইতো স্বাভাবিক। তাই কিছুটা দামাদামি করে ৪ হাজার ৫শ’ টাকায় কিনে ফেললেন লং গাউনের মতো সখের পোশাকটি।
এভাবেই গেলো বছরগুলোর মতো দেশের অন্যান্য জেলার ন্যায় চাঁদপুরের নারীরাও ভারতীয় পোশাকে মাতাল হয়ে আছেন।
অপরদিকে নি¤œ আয়ের ক্রেতারা ভারতীয় টিভি সিরিয়ালের নামানুসারে অনেকটা প্রতারিত হয়ে কিনে নিচ্ছেন দেশি পোশাক।
সোমবার (২৭ জুন) চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন ঈদ বাজারে ঘুরে ভারতীয় পোশাকের একক আধিপত্য লক্ষ্য করা গেছে।
শহরের এসব বিপণী বিতানগুলো ‘পাখি ’ ‘কিরণামালা’র খুব একটা খোঁজ পাওয়া না গেলেও ভারতীয় পোশাক বাজিরাও মাস্তানি, ইশিতা, ফ্লোর টার্চ, জল পরী, ইচ্ছে নদী, জল নুপুর, লাবন্য, নন্দীনি ইত্যাদি পোশাকের চাহিদা লক্ষ্য করা গেছে।
আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কিছু সংখ্যক দোকানিরা যে কোনো পোশাকে মুহূর্তেই ভারতীয় বাংলা চ্যানেলের সিরিয়ালের নায়িকাদের নামানুসারে চালিয়ে দিচ্ছেন।
এতে করে কোনটা ফ্লোর টার্চ আর কোনটা বাজিরাও মাস্তানি তার বুজে উঠতে পারছে না গ্রাম থেকে আসা সাধারণ ক্রেতারা।
এদিকে আসন্ন ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে রমজানের শুরুতেই শহরের মার্কেটগুলো বির্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে। শুরুতে বেচা-বিক্রি খুব একটা না থাকলেও রোজার মধ্যভাগ থেকে প্রতিটি বিপণী বিতানে এখন ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়।
শহরের রেলওয়ে হর্কাস মার্কেটের প্রসিদ্ধ একটি বিতানের মালিক শাহজালাল চাঁদপুর টাইমসকে জানায় ‘১৫ রমজানের পর থেকে শহরের ঈদ বাজারগুলো জমে উঠছে। মূলত সকাল থেকে বিকেল ও বিকেল থেকে রাত এই দু’ভাগে ক্রেতাদের উপস্থিতি পাওয়া যায়।’
তিনি আরো জানান, ‘প্রথমভাগে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ক্রেতার আসেন এব দ্বিতীয়ভাবে শহর বা শহরতলীর ক্রেতারা ভিড় জমায়।’
চাঁদপুর বস্ত্র ব্যবসায়ী সমিতির সধারণ সম্পাদক আব্দুল মোতালেব মিলন চাঁদপুর টাইমসকে জানায়, ‘তার দোকানের শহরের উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের উপস্থিতিই মূলত বেশি। ক্রেতাদের হাতে মানসম্মত পোশাক তুলে দিতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারো তিনি ভারতীয় দেশি-বিদেশি উন্নত পোশাক বিক্রি করছেন। অল্প টাকায় ভালো পোশাক বিক্রি করায় প্রতিনিয়তই তার দোকানে ক্রেতাদের আনাগোনা বাড়ছে।’
অপরদিকে জমে উঠা ঈদ বাজারে ক্রেতাদের নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় প্রতিটি মার্কেটে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। এসকল মার্কেটগুলোতে পুরুষ পুলিশ সদস্যের পাশাপাশি নারী সদস্যদেরও নিরাপত্তা দিতে দেখা গেছে।
ক্রেতাদের অভিমত মার্কেটগুলো পাশাপশি সড়কগুলোতেও যেনো পুলিশের নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়। এতে করে তারা কেনাকাটা শেষ নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছতে পারবে।
প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম