চাঁদপুরের ইউনুসের ব্যতিক্রমী কাজে সাড়া জাগলো মানুষের

১৬ বছর সাইকেলে বহন করে করছে খুচরা যন্ত্রাংশ মেরামত

সাইকেলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মোবাইলের গ্লাস থেকে দাগ তোলা, স্কিন পেপার ও কভার লাগানো, মোটর সাইকেলের হেড লাইটের দাগ উঠানো, ঘড়ি ও চশমাসহ সকল ধরনের গ্লাসের দাগ উঠানোর কাজ করতে করতে জীবনের ৩৭ টি বছর থেকে এ কাজে ১৬ টি বছর অতিক্রমসহ প্রাপ্তি ও ব্যর্থতা নিয়ে ৩ এপ্রিল রোববার বিকেলে আলাপকালে এসব কথা জানালেন ইউনুস পাটওয়ারী।

চাঁদপুর সদর উপজেলা ১২ নং চান্দ্রা ইউনিয়নের মৃত ফজল পাটওয়ারীর দুই ছেলে দুই মেয়ের মধ্যে ২য় ইউনুস পাটওয়ারী (৩৭)। সদর হানারচর ইউনিয়নের প্রায় ৩ একর পৈত্তিক সম্পত্তি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার পর থেকেই চান্দ্রা পাটওয়ারী বাড়িতে বসবাস।

ইউনুস জানায়, ছোট বেলা থেকেই অভাব-অনটনের কারণে পড়ালেখা করতে পারিনি। ঢাকা যাত্রাবাড়ি এলাকায় ধার-দেনা করে ফুটপাতে কাপড় বিক্রয় করি। সেখানে ৪/৫ বছর কাজ করার পর ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় বিকল্প কাজ খুঁজি। বড় ভাই সিলেট নিজের পরিবার নিয়ে বসবাস করায় সংসার আমাকেই চালাতে হত। বড় ভাই সিলেটে ঘড়ি, হেড লাইট, চশমার গ্লাস পরিস্কার ও মেরামত করত। তার কাছ থেকে এ কাজ শিখে সিলেট ও ঢাকায় নিজে কয়েক বছর করতে থাকি।

পরিবারের এক মাত্র উপার্জনকারী ইউনুস জানায়, ২০০০ সালে চাঁদপুরে চলে আসি এবং একটি সাইকেল ক্রয় করি। আগে সাইকেলে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মোটর সাইকেলের হেড লাইটের দাগ উঠানো, ঘড়ি ও চশমাসহ বিভিন্ন গ্লাসের দাগ তোলতাম। বর্তমানে সবার হাতে হাতে মোবাইল থাকায় গলা ফাটিয়ে কাজের কথা কাউকে বলতে হয় না। সবাই এখন আমাকে দেখা মাত্র মোবাইলের গ্লাস থেকে দাগ তোলা, স্কিন পেপার ও কভার লাগানোর জন্য চলে আসে। কিন্তু যে কাজ দিয়ে শিখেছি সেই কাজগুলো মোবাইল ফোনের চাহিদার কারণে কমে গেছে। মোবাইলের গ্লাস থেকে দাগ তোলে, স্কিন পেপার ও কর্ভার লাগালে ৩শ থেকে ৪শ টাকা হয়। বয়স বাড়ছে। এখন আর আগের মত পরিশ্রম কাজ করতে পারি না। কারোও কাছে হাত না পেতে ১৬ টি বছর পার করে ফেললাম।
৪ বছর আগে পিতা মারা যাওয়ায় বর্তমানে স্ত্রী ও ২ কন্যা সন্তান নিয়ে ইউনুসের ৪ জনের পরিবার। বড় মেয়ে স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের রুনা আক্তার ৩য় শ্রেনীতে ও ছোট মেয়ে ১ম শ্রেণিতে পড়ে। এ কাজ করে পরিবারের ও সন্তানদের খরচ যোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

সকলের সহযোগিতা কামনা করে ইউনুস জানায়, সরকার ও সমাজে যারা বড় লোক আছে। তারা যদি আমাদের পাশে দাঁড়ান। তাহলে নিজের ও পরিবারের সমস্যাগুলো সমাধান করে সন্তানদের সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করাতে পারবো।

[aমাজহারুল ইসলাম অনিক [/author]

||আপডেট: ১০:১০  অপরাহ্ন, ০৩ এপ্রিল ২০১৬, রোববার

চাঁদপুর টাইমস /এমআরআর

Share