চাঁদপুরের আন্দোলনরত মাধ্যমিক শিক্ষকগণ এখন ঢাকার অভিমুখে

চাঁদপুরে মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষক আন্দোলনের কর্মসূচি চলমান থাকায় সকল শিক্ষকগণ এখন ঢাকার অভিমুখে রয়েছে বলে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি ও সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক প্রধানশিক্ষক মো.আব্বাস উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক ও সদস্য-সচিব প্রধানশিক্ষক মোহাম্মদ হোসেন আজ ১৯ জুলাই বুধবার দুপুরে এ তথ্য জানিয়েছেন।

চাঁদপুরের এ শিক্ষক নেতৃবৃন্দ যৌথভাবে জানান, সারাদেশে মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে রোববার ১৬ জুলাই থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি রয়েছেন্।

বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রিয় কর্মসূচির আলোকে চাঁদপুর জেলার মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির ডাকে চাঁদপুর পৌরসভাসহ উপজেলাগুলোর অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এ কর্মসূচি পালন অংশগ্রহণ করছে। ১৯ জুলাই থেকে বাকি স্কুলগুলো স্কুলে তালা ঝুলানো কর্মসূচি পালন করবে বলে চাঁদপুর জেলার নেতৃবৃন্দ জানান। এ কর্মসূচির আলোকে ঢাকার প্রেসক্লাবের সামনে সারা দেশের শিক্ষকগণের অবস্থান কর্মসূচি ৯ম দিনের মত অব্যাহত রয়েছে। যে সব শিক্ষকগণ এ কর্মসূচির অংশগ্রহণ করছে না-তাদেরকে আগামিকালের মধ্যে কর্মসূচিতে যোগদান করার জন্যে চাঁদপুর জেলার সব উপজেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।

চাঁদপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হোসেন আরো বলেন, ‘ আজ ১৯ জুলাই বিকেলে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি এমপি’র সাথে কেন্দ্রিয় শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দের সাথে মিটিং হবে। দাবি’র ব্যাপারে সম্মানজনক কোনো সিদ্ধান্ত না হলে কর্মসূচি চলবে। চাঁদপুরের শতভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই এ কর্মসূচি পালন করছে।’

চাঁদপুর সদর মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির চলমান আন্দোলনে যোগদানের একাত্মতা ঘোষণা করেছেন সংগঠনের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক মো. ইলিয়াছ মিয়া। ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় লেডী দেহলভী উচ্চ বিদ্যালয়ে এক জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান শিক্ষক মো. ইলিয়াস মিয়া ও সভা সঞ্চালনা করেন প্রধানশিক্ষক মো.আবুল কাসেম।

চাঁদপুর সদরের মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো.ইলিয়াছ মিঞা বলেন,‘ আমাদের এ সংগঠনভুক্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধানশিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকগণ এখন চলমান আন্দোলনে আগামিকাল বৃহস্পতিবার ২০ জুলাই সকাল ৭ টায় চাঁদপুর থেকে লঞ্চ যোগে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের কর্মসূচিতে যোগদান করবে। আমরা ঢাকা রওয়ানার সকল প্রস্তুতি নিচ্ছি। সুতরাং আমাদের এ সংগঠনভুক্ত শিক্ষকরা বর্তমান চলমান আন্দোলনের সাথে আছে ও থাকবে। কেননা আমাদের দাবি এক ও অভিন্ন। তাই দাবিসমূহ সরকারকে মেনে নিতে আহবান জানাচ্ছি।’

চাঁদপুর সদরের মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি মো.গোফরান হোসেন বলেন,‘ এমপিওভুক্ত শিক্ষকগণ বাড়িভাড়া পান ১ হাজার টাকা, মেডিক্যাল ৫শ টাকা এবং উৎসবভাতা পাচ্ছেন মূল বেতনের ২৫ ভাগ। ১৯ বছর আগে ২০০৪ সালে শিক্ষকদেরকে ২৫% উৎসব ভাতা দেয়া হয়েছে। যা আজো পরিবর্তন হয়নি। এছাড়াও সহকারী প্রধান শিক্ষক ও সিনিয়র সহকারী শিক্ষকদের স্কেল বৈষম্যে শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। সব মিলিয়ে যে বেতন-ভাতা পান, তা দিয়ে বর্তমানে চলতে খুবই কষ্ট হয়।’

চাঁদপুর মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো.বিলাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রিয় সদস্য-সচিব জাহাঙ্গীর হোসেন যৌথভাবে আজ ১৯ জুলাই দুপুরে জানান, মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতির মূল লক্ষ্য ও শ্লোগানই হলো ‘ শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ’। তাই আমাদের সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ঘোষিত কর্মসুচি ও বর্তমান চলমান আন্দোলনের সাথে প্রথম থেকেই সমর্থন করে আসছে। চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেরা-উপজেলার এ সংগঠনের হাজার হাজার শিক্ষক বর্তমানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। বাকিরা ২০ জুলাই থেকে অংশগ্রহণ করবে।

এদিকে ২০ জুলাই বৃহস্পতিবার থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত দেশের মাধ্যমিক স্কুল ও কলেজসমুহ গ্রীষ্মকালীন অবকাশ,আশুরা ও হিজরি নববর্ষ উপলক্ষে সরকারি ভাবে বন্ধ। তাই শতভাগ শিক্ষকই ঢাকার কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করার একটি অপূর্ব সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে বলে শিক্ষকগণ মনে করছেন ।

আবদুল গনি
১৯ জুলাই ২০২৩

Share