দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম নৌ-পথ। চাঁদপুর নৌ-সীমানার ৭শ’ কিলোমিটার নৌ-পথ দিয়ে ৫০ লাখ মানুষ লঞ্চযোগে দক্ষিণাঞ্চলে যাতায়াত করে থাকে।
গুরুত্বপূর্ণ এ পথের বিভিন্ন স্থানে পথ নির্দেশক বয়া ও বিকন বাতি না থাকায় প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে চলছে যাত্রী বাহি লঞ্চসহ বিভিন্ন নৌ-যান।
শুধুমাত্র চাঁদরপুর-ঢাকা, চাঁদপুর-নারায়ণগঞ্জ নৌ-পথে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলে অর্ধশত। এছাড়া ষাটনল থেকে আজাদ বাজার, চাঁদপুর-হিজলা, চাঁদপুর-নন্দির বাজার, চাঁদপুর-মাদারীপুর, চাঁদপুর-মাওয়াসহ বেশকিছু ছোট-ছোট শাখা নদী রয়েছে এর সাথে।
বয়া ও বিকন বাতি না থাকায় মাঝে মাঝে দুর্ঘটনার কবলেও পড়তে হচ্ছে নৌযানগুলোকে। নৌ-পথের চাঁদপুর অংশে প্রয়োজনের তুলনায় বয়া ও বিকন বাতি অনেক কম রয়েছে।
চাঁদপুর অংশের ৭শ’ কিলোমিটার নৌ-পথে ১শ’ বয়া ও বিকন বাতি রয়েছে যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম।
যা রয়েছে তার মধ্যে আবার অনেক বিকন ও বয়া বাতি দীর্ঘদিন যাবৎ বিকল হয়ে আছে। এতে করে নৌপথে চলতে গিয়ে নদীতে পানি এবং পথের বিভিন্ন সমস্যা নির্ধারণে বিশেষ করে ডুবোচরের কারণে লঞ্চের সাড়েংরা পড়েন মহাবিপাকে।
অনুমান কিংবা ধারণার উপর ভর করেই নৌযান পরিচালনা করেছেন চালকরা। নৌ-সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগ চাঁদপুরের উপ-পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান জানান, বয়া ও বিকন বাতি এগুলো অনেক মূল্যবান জিনিস। দেশের বাহির থেকে আমদানি করা একটি বিকন বাতির দাম ৬০/৭০ হাজার টাকা। এসব বাতিগুলোর বিভিন্ন প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ যেমন-সোলার, ব্যাটারি ও বাতি চুরি হয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, নদীতে বর্তমানে এত বলগেট চলছে এই বলগেটের ধাক্কায় এসব বাতীসহ এর যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যায়। প্রতি মাসে নষ্ট হওয়া প্রায় ৩০টি বয়া ও বিকন বাতি মেরামত করতে হচ্ছে।’
এ বিষয়ে দাফতরিক সমস্যা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের স্থানীয়ভাবে মাত্র ১হাজার টাকা খরচ করার অনুমতি রয়েছে, এর বেশি খরচ করতে হলে হেড অফিসের অনুমতির প্রয়োজন হয়। আর যেগুলো চুরি হয়ে যাচ্ছে, নতুন করে স্থাপনের জন্য হেড অফিসে লেখা লেখি করে আনতে একটু দেরি হয়। বয়া ও বিকন বাতি চুরি হলে অথবা নষ্ট হয়ে গেলে নৌ-পথে নৌ-যান চলাচল সম্পূর্ণ অচল হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে পড়ে।’
নিরাপত্তাসহ এর রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বয়া ও বিকন বাতির, সোলার এবং এর যন্ত্রাংশ চুরি হওয়া নৌ-যানের ধাক্কায় নষ্ট হয়ে যাওয়াই মূল কারন।
তবে ধারণা করা হচ্ছে, জেলেরা এসব বয়া ও বিকন বাতির প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ চুরি করে নিয়ে যায় বলে তিনি জানান।
এসব ঘটনা প্রতিরোধে নৌ-পুলিশ, কোস্টগার্ডসহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর একটু তৎপরতা বৃদ্ধি হলে কিছুটা হলেও চুরি প্রতিরোধ করা যাবে।
তিনি আরো জানান, এছাড়া আমাদের নদীর সীমানায় নাব্যতার কারনে ৪০ থেকে ৫০টি ডুবোচর রয়েছে। ডুবোচর নির্ধারণ করতে আমরা বাঁশ ব্যবহার করে থাকি। ঠিকাদারদের মাধ্যমে প্রতিমাসে ১শ’ ২০টি বাঁশ বিভিন্ন জায়গায় স্থাপন করছি।
.
বিশেষ করে নদীর যে সকল অংশে নাব্যতা সঙ্কট রয়েছে সে সকল জায়গায় বাঁশ পুঁতে নব্যতার মার্কা দেয়া হয়। যাতে করে নৌ-যান চালকরা সঠিক পথ নির্ধারণ করতে পারে দেখা যায়, এই বাঁশগুলি চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকি ও চাহিদামত সঠিক সময়ে সরবরাহ করা হলে এই সমস্যা থাকবে না বলে তিনি দাবি করেন।
প্রতিবেদক- মাজহারুল ইসলাম অনিক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১:০৩ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, শনিবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur