চলন্ত লঞ্চে সন্তান প্রসব, আজীবন লঞ্চ ভাড়া ফ্রি ঘোষণা

ঢাকা-ইলিশা রুটের আল ওয়ালিদ-৪ নামের একটি লঞ্চে চলন্ত সন্তান প্রসব করেছেন পারভীন বেগম নামের এক নারী। এ ঘটনায় নবজাতকসহ ওই নারী জন্য আজীবন লঞ্চ ভাড়া ফ্রি করে দিয়েছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ।

৯ সেপ্টেম্বর সোমবার বিকাল ৪ টায় ওই নারী নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান প্রসব করেন। এটি ওই নারীর তৃতীয় সন্তান বলে জানা গেছে।

জানা যায়, সোমবার দুপুর ২টায় ওই নারীর স্বামী সালাউদ্দিন ঢাকার সদরঘাট থেকে লঞ্চে উঠিয়ে দেন স্ত্রী পারভীন বেগমকে। তবে লঞ্চে তিনি একাই ছিলেন। লঞ্চটি সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার ২ ঘন্টা পর মাঝ নদীতে ওই নারীর প্রসব বেদনা ওঠে। লঞ্চটি যেহেতু মাঝ নদীতে ছিল তাই কোন উপায় না থাকায় লঞ্চের স্টাফদের সহযোগীতায় অপর এক নারী সন্তান প্রসবে সহযোগীতা করেন। এক পর্যায়ে ওই নারী চলন্ত লঞ্চেই একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন।

এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে পারভীন বেগমের ভাই জহিরুল সহ আত্নীয় স্বজনরা তাকে অভ্যর্ধনা জানাতে ইলিশা ঘাটে অবস্থান করেন। রাত ৮টার দিকে লঞ্চটি যখন ইলিশা ঘাটে নোঙ্গর দেয় তখন উৎসুক জনতার ভীড় পড়ে।

এদিকে ঝুঁকি থাকলেও নরমাল ডেলিভারিতে সন্তান প্রসব হওয়ায় খুশি পারভীন বেগমের স্বজনরা। তার ভাই জহিরুল মিয়া খবরের কাগজকে বলেন, আমরা অনেক খুশি হয়েছি। বাচ্চা ও মা মোটামুটি সুস্থ আছে।

জানা গেছে, ১৫ দিন পর ওই নারীর ডেলিভারির তারিখ নির্ধারণ ছিল। তৃতীয়বারের মত পুত্র সন্তান জন্মদিয়ে অনেক খুশি প্রসূতি মা পারভীন বেগম।

তিনি বলেন, এ মাসের ৩০ তারিখ ডেলিভারির ডেট ছিল, এভাবে সন্তান জন্ম হবে ভাবিনি। তবে আমি ভীষন খুশি হয়েছি।

অন্যদিকে ডেলিভারিতে সহযোগীতা করা সেই নারী বলেন, কোন সমস্যা হয়নি, সুস্থভাবেই সন্তান হয়েছে। তবে এটা একটা ভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা ছিল।

লঞ্চে প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রী থাকায় ডেলিভারি অনেকটা সহজ হয়েছে বলে জানায় লঞ্চ ইনচার্জ মাকসুদ রহমান। তিনি বলেন, মা ও তার সন্তানের জন্য আজীবন ভাড়া ফ্রি করা হয়েছে। আমরা তাদের শুভেচ্ছা উপহার দিয়েছি।

এদিকে চলন্ত লঞ্চে সন্তান প্রসবের ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে অনেকেই নবজাতকটিকে দেখতে ভীড় জমান। তবে শিশুটি সুস্থ থাকলেও প্রাথমিক চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেন স্থানীয়রা।

পারভীন বেগমের বাড়ি ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার আমিনাবাদ গ্রামে।

চাঁদপুর টাইমস ডেস্ক/ ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪