এ সপ্তাহেই ৪ শ’৩২ সদস্যের বিএনপির জাতীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করবেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বিগত সময়ে কয়েকবার কমিটি ঘোষণার ইঙ্গিত পাওয়া গেলেও চলতি সপ্তাহে কমিটি ঘোষণার বিষয়টি প্রায় নিশ্চিত বলে একটি নির্ভরযাগ্য সূত্র দাবি করেছে।
দলীয় প্রধানের ঘনিষ্ঠ সূত্রমতে, আসন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের সফলতার বিষয়কে প্রাধান্য দিয়েই বিএনপি চেয়ারপারসন দলের নতুন জাতীয় নির্বাহী কমিটি গঠন করেছেন।
চেয়ারপারসন গুলশান কার্যালয়ে শেষ মুহূর্তের কাজ সারছেন। আন্দোলন-সংগ্রামে ঝুঁকি নিয়ে যারা কাজ করতে পারবেন এমন নেতাদের দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। দলের চেয়ারপারসনের পরামর্শক্রমে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজে সহযোগিতা করেছেন।
এ ছাড়া জ্যেষ্ঠ নেতা, দল সমর্থক বুদ্ধিজীবীদের পরামর্শ নিয়েছেন। জেলা পর্যায়ের নেতাদের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগের নেতাদের মতামত নেয়া হয়েছে।
১৯ মার্চ দলের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলে স্থায়ী ও নির্বাহী কমিটির নেতা নির্বাচনের একক ক্ষমতা চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেন কাউন্সিলরা। সে ক্ষমতাবলে কাউন্সিলের পরে তিন ধাপে মহাসচিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব, কোষাধ্যক্ষ, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকসহ ৪০টি পদের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে বিএনপি।
এ কমিটি ঘোষণার পরই নতুন নেতা নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক অনিয়মের প্রচারণা শুরু হওয়ায় কমিটি গঠন প্রক্রিয়া থমকে যায়।
দলের সিনিয়র এক নেতা জানান, গত মাসের শুরু তে আরেক ধাপে স্থায়ী কমিটিসহ উল্øেখযোগ্য কয়েকটি পদে কমিটির আরেকটি অংশ ঘোষণার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।
এরই মধ্যে দেশে বড় ধরনের জঙ্গি হামলার কারণে দলীয় বিষয়ের চেয়ে জাতীয় বিষয়কে বেশি গুরুত্ব দিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন জাতীয় ঐক্যের ডাক দেন। ফলে কমিটি ঘোষণায় আরো বিলম্ব হয়।
দলের নীতিনির্ধারণী সূত্র জানিয়েছে, কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি গঠন করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে বেশি। শেষ পর্যন্ত হয়তো এ পদের সংখ্যা ১৯ থেকে বাড়ানো হতে পারে। এ কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম, আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আবদুল আউয়াল মিন্টু এবং সালাহউদ্দিনের আসার সম্ভবনা বেশি।
গত কমিটির যুগ্ম মহাসচিবদের প্রায় সবাই এবার ভাইস চেয়ারম্যান হচ্ছেন। ভাইস চেয়ারম্যানদের কয়েকজন বর্তমান পদেই থাকছেন, বাকিরা হবেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা। এ ছাড়া সম্পাদক ও সহ-সম্পাদক পদে সাবেক ছাত্রনেতারা প্রাধান্য পাচ্ছেন। এত সব পদের মধ্যে তেমন চমক থাকছে না। তবে বিস্মিত হওয়ার মতো কিছু থাকতে পারে।
দলের নীতিনির্ধারণী অপর একটি সূত্র জানায়, কমিটি গঠন হওয়ার পর আগামী সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবিরোধী জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ‘চা-চক্রে’ বসবেন খালেদা জিয়া। তাদের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা সফল হলে জাতীয় কনভেনশন করা হতে পারে।
কমিটি গঠনের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ বলেন, কাউন্সিলররা কমিটি গঠনের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে একক ক্ষমতা ও দায়িত্ব দিয়েছেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদ বলেন, ‘কমিটি গঠন বিশাল কর্মযজ্ঞ। এটি করতে গেলে অনেকের পরামর্শ নিতে হয়। নানা বিষয় চিন্তা করতে হয়। নেতাদের দক্ষতা, যোগ্যতা ও অতীত কার্যক্রমের ব্যাপারে খোঁজ নিতে হয়।
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৭:০০ পিএম, ২ আগস্ট ২০১৬, মঙ্গলবার
এজি/ডিএইচ