চাঁদপুর

চলতি মাসেই চাঁদপুরের যেসব গাড়ির রেকর্ড মুছে ফেলবে বিআরটিএ

চাঁদপুর জেলায় বিগত ১০ বছর কিংবা বা তার বেশি সময় ধরে যেসকল গাড়ি ফিটনেস পরীক্ষা করানো হয়নি, সেসব গাড়ির অস্তিত্ব তালিকা থেকে চলতি মাসের মধ্যেই মুছে ফেলবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

এতে করে গাড়িগুলো তাদের কোনো কাগজপত্রই আর নবায়ন করতে পারবে না। চাঁদপুর জেলা বিআরটিএ কার্যালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে ১০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছেন এমন ফিটনেস সনদহীন গাড়ি রাস্তায় যাতে চলাচল করতে না পারে সে জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে।

সংস্থাটির কাছ থেকে পাওয়া তথ্যমতে ফিটনেস খেলাপি এসব গাড়ির তালিকায় সরকারি -বেসরকারি গাড়ি রয়েছে ৩শ’ ও অধিক ।ি বভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের জন্য ক্রয় করা হয়েছিল এসব গাড়ি। ১০ বছর বা তারো বেশি সময় ধরে বেসরকারি ফিটনেসহীন গাড়ির মধ্যে রয়েছে যাত্রীবাহী বাস, মিনিবাস, পণ্যবাহী গাড়ি।

বিআরটিএ’র সহকারি পরিচালক শেখ ইমরান বলেন, ১০ বছর বা তার অধিক সময় ধরে যেসব মোটরযানের মালিক ফিটনেস না নিয়ে এসব গাড়ি চালাচ্ছেন তাঁদের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে ফিটনেস নবায়ন করতে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় তাঁদের মোটরযান রাইড অফ ঘোষণা করা হবে।

তিনি আরো বলেন, ‘এসব গাড়ির ফিটনেস নবায়ন করা না হলে এগুলো আমাদের রেকর্ড থেকে মুছে ফেলা হবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এসব গাড়ি আটক করতে বলা হবে। বিআরটিএতে মোটরসাইকেল ছাড়া অন্যান্য গাড়ির নিয়মিত ফিটনেস পরীক্ষা করিয়ে সনদ নিতে হয়। তা না থাকলে গাড়ি রাস্তায় চালানো আইনসম্মত নয়।

বিআরটিএ এত বছর এ নিয়ে নিরব ছিল। দেশে সড়ক দুর্ঘটনার বড় কারণগুলোর একটি চলাচলের অনুপযোগী গাড়ি। সড়কে দুর্ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় সামাজিক চাপে পড়ে বিআরটিএ এবার এসব অনুপযোগী গাড়ি চলতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

চাঁদপুর জেলা বিআরটিএ’র অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলা ৩শ’র বেশি ফিটনেসহীন গাড়ী । পরিবহন মালিকদের চাপে পড়ে এসব গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে পারে না বিআরটিএ ।

বাসের আয়ুস্কাল ২০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে বহু বছর আগে। বিভিন্ন পরিবহনের বাসে যাত্রী পরিবহন করা হচ্ছে ঝুঁকি নিয়ে। ফিটনেসহীন এসব বাস রেষারেষি করে চালান চালকরা। মালিকরাও আয়ু ফুরানো গাড়ির আর খেয়াল নেন না। তাঁরা ভরসা রাখেন চালকদের ওপর। এসব বাসের সিংহভাগ চালকের সঙ্গে চুক্তিতে চালাচ্ছেন মালিকরা।

বিআরটিএর মোটরযান পরিদর্শক জিয়া উদ্দিন জানান, গাড়ির চেসিস নম্বর ঠিক আছে কি না, গাড়ির রং, লাইট, আসনের অবস্থা পরীক্ষা করে গাড়ি চলাচলের উপযুক্ততার সনদ দেওয়া হয়। খালি চোখে মোটরযান পরিদর্শকরা ফিটনেস দেখেন।

জেলা বিআরটিএ’র সহকারি পরিচালক শেখ ইমরান জানান , এসম্পর্কে মালিকদের নোটিশ পাঠানো হয়েছে । মাইকিং , লিফলেট ,ফেস্টুন বিতরণ ও বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন সভা, সম্মেলন, সেমিনারে জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট তাদের গবেষণার একটি সূত্রে জানাযায়, ১৯৯৮ থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে সংঘটিত দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ৬০ হাজার ৬৬১টি গাড়ি ত্রুটিপূর্ণ ছিল। দুর্ঘটনায় নষ্ট হয় কমপক্ষে ৬৬ হাজার ৮১৮টি গাড়ি। তবে এই পরিসংখ্যান থানায় মামলার ভিত্তিতে করা। এ পরিসংখ্যানের বাইরে ত্রুটিপূর্ণ ও ক্ষতিগ্রস্ত অনেক গাড়ি রয়েছে।

প্রতিবেদক- আনোয়ারুল হক
আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১০:১৫ পিএম, ৯ এপ্রিল ২০১৮, সোমবার
ডিএইচ

Share