চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের আয়োজনে ১০ম প্রাণ ফ্রুটিক্স ইলিশ উৎসবের ২য় দিন সন্ধ্যায় ইলিশ বিষয়ক ভাবনা গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ইলিশ উৎসবের আহ্বায়ক রোটাঃ কাজী শাহাদাতের সভাপতিত্বে ও চতুরঙ্গ মহাসচিব হারুন আল-রশীদের উপস্থাপনায় ইলিশ গোল টেবিল বৈঠকে প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার মোঃ জিহাদুল কবির পিপিএম।
এ সময় তিনি বলেন, আমি অনেক উৎসব দেখেছি কিন্তু চাঁদপুরে এসে ব্যাতিক্রম উৎসব দেখলাম ইলিশ উৎসব। প্রথমেই আমি চমকে গিয়েছি। চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠন আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন যখন তখন আমি ইলিশ উৎসব সম্পর্কে অনেক কিছুই ভেবেছি।
তিনি বলেন, চাঁদপুর মানেই ইলিশ, ইলিশ মানেই চাঁদপুর। চাকরির সুবাদে চাঁদপুর এসেছি। আমার আত্মীয় স্বজন ও বন্ধুবান্ধব সহ অনেকেই বলছে একা একা ইলিশ খেয়ো না। আমাদেরকেও দিও। চাঁদপুরে নিজস্ব কোন ইলিশ নেই। হাতিয়া, স্বন্দ্বিপ ও দক্ষিন অঞ্চল থেকে ইলিশ এখানে আসে। বাহিরে গেলে যেন বুঝতে পারে এটি চাঁদপুরের ইলিশ মাছ এমন কিছু একটা ব্যবহার করা প্রয়োজন।
আগামী ৬ অক্টোবর থেকে ২২ দিনব্যাপি মা ইলিশ রক্ষায় আমরা পুলিশ প্রশাসন যেমনিভাবে ইলিশ সম্পদ রক্ষায় কাজ করবে আপনারও এই ইলিশ সম্পদ রক্ষায় কাজ করতে হবে। গত বছর ইলিশ সম্পদ রক্ষা পাওয়ায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের দূর-দূরান্তের নদীতে ইলিশ মাছ পাওয়া গিয়েছে। আর তা সম্ভব হয়েছে মা ইলিশ রক্ষা করার কারণে।
আয়োজকদের উদ্দেশ্যে বলেন, চাঁদপুরে ইলিশ উৎসব হচ্ছে, এই উৎসব যেন দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে। তবেই এই উৎসবের স্বার্থকতা আসবে। এটি হবে জাতীয় উৎসব। চাঁদপুরে ইলিশ উৎসবে শিশুদেরকে সম্পৃক্ত করা হচেছ। শিশুরা ইলিশ সম্পর্কে অনেক কিছু শিখছে। চতুরঙ্গের সাথে আমি সম্পৃক্ত হয়েছি। আপনাদের প্রতিটি ভালো কাজে আমাকে ও আমার পুলিশ বাহিনীকে কাছে পাবেন।
আলোচকের বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের সবাই জানে ইলিশ মানে চাঁদপুরকে বুঝানো হয়। আমরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় সবসময় কাজ করছি। মা ইলিশ রক্ষায় আমরা কাজ করে যাব। চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠন যে ৮ দিন ব্যাপী প্রাণ ফুটিক্স ইলিশ উৎসব করছে আজ তার ২য় দিন অতিবাহিত হয়েছে। ইলিশ উৎসবটি আজ প্রাণের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে, এটি যেন জাতীয় উৎসব হয়। চতুরঙ্গকে স্বাগত জানাই, এই ইলিশ উৎসব করার জন্য।
শুধু জেলাতেই নয়, প্রতিটি ইউনিয়নে যেন এই উৎসব করা হয়। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোঃ জামাল হোসেন বলেন, ব্যান্ডিং করার জন্য যা যা করা হচ্ছে তাতে চতুরঙ্গ সাংস্কৃতিক সংগঠনের ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করি। কেননা চাঁদপুরকে ইলিশের জন্য ব্যান্ডিং ঘোষনা করা হয়েছে। ফেস্টুবয়েল, কার্নিবেল, সবকিছুতেই ইলিশের ছোঁয়া রয়েছে। ইলিশকে কেন্দ্র করে চাঁদপুর বিশ্বজুড়ে খ্যাতি রয়েছে। তাই চতুরঙ্গের এই আয়োজনকে স্বাগত জানাই।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলন, চতুরঙ্গের চেয়ারম্যান অ্যাড. বিনয় ভূষণ মজুমদার, প্রবীণ আইনজীবী অ্যাড. মনোয়ারুল ইসলাম, পৌর কাউন্সিলর ফরিদা ইলিয়াছ প্রমুখ।
বিকেল ৩টায় ইলিশ উৎসবের সেরা ও ক্ষুদে নাচিয়েদের অডিশন পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এই অডিশন পর্ব শেষে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রীতি বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। ইলিশ উৎপাদন বৃদ্ধিতে মা ইলিশের নিধন রোধের চেয়ে নদী দূষণ রোধ করা জরুরী।
এ বিষয়ের উপর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পক্ষদল হিসেবে বির্তক করেন আব্দুল্লাহ আল হাসিব, হোসাইন আহমেদ, দলনেতা আনন্দলোধ। বিপক্ষ দলে অবস্থান করেন পুরাণবাজার মধুসুদন উচ্চ বিদ্যালয়। বিতর্কে অংশগ্রহণ করেন তাসনুর আক্তার, উম্মে সায়মা ও দলনেতা পাপন ত্রিপুরা।
সভা প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন পুরাণবাজার ডিগ্রি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোঃ হাবিবুর রহমান পাটওয়ারী, মডারেটর দায়িত্ব পালন করেন মোঃ আবু সালেহ।
সবশেষে সুরধ্বনি সঙ্গীত একাডেমি ও সপ্তরূপা নৃত্য শিক্ষালয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সুরধ্বনি সঙ্গীত একাডেমির অধ্যক্ষ অনিতা কর্মকারের পরিচালনায় যন্ত্র সঙ্গীত ছিলেন পরিমল দাস নুপুর ।
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট,
২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur