চট্টগ্রামের ৩০ ইউপির মধ্যে ২৮টিতেই বিএনপির বর্জন

কেন্দ্র দখল, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও এজেন্টদের বের করে দেয়ার অভিযোগ এনে দ্বিতীয় ধাপে চট্টগ্রামের তিন উপজেলার ৩০ ইউনিয়নের মধ্যে ২৮ ইউনিয়নে পুনর্নিবাচনের দাবি করেছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক মো.আসলাম চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে সীতকুণ্ড উপজেলার ফৌজদার হাটের নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানান তিনি।

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছিলাম, এটি কোনো নির্বাচন না, এটি সরকারের একটি তামাশা। নির্বাচনের আগ থেকে মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও সন্ধীপের বিএনপি প্রার্থী ও সমর্থকদের প্রতিনিয়ত মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছিল সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা। এমনকি নির্বাচনী প্রচারণার ব্যবহৃত বিভিন্ন ব্যানার, পোস্টার পুলিশের সহযোগিতায় ছিঁড়ে ফেলা হয়।’

‘আজ সকাল থেকে তারা সবগুলো ভোট কেন্দ্রের দখল নিয়েছে। এসময় ব্যালট পেপার ছিনতাই ও এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়। অথচ বিষয় গুলো প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় নতুন তফসীল ঘোষণার মাধ্যমে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য পুনর্নিবাচনের দাবি জানাচ্ছি।’- বলেন উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক মো.আসলাম চৌধুরী।

মিরসরাইয়ে ভোটার শূন্য একটি ভোট কেন্দ্র
এর আগে সকালে সীতাকুণ্ড উপজেলার তিন ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থীরা ভোট বর্জন করেন। তারা হলেন- কুমিরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. হেলাল উদ্দিন, বাড়বকুণ্ড ইউনিয়নের আবুল কালাম আজাদ ও সোনাইছড়ি ইউনিয়নের নুরুদ্দিন মো.জাহাঙ্গীর চৌধুরী।

এছাড়া সন্দ্বীপ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বিচ্ছিন্ন সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বাউরিয়া ইউনিয়ন, রহমতপুর ইউনিয়ন, মুছাপুর ও মগধারা ইউনিয়নে সরকার দলীয় প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে একাধিক কেন্দ্র দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নির্বাচন কমিশন সূত্র জানিয়েছে, জেলার মিরসরাই, সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ উপজেলার ৩০ ইউনিয়নে ৫ লাখ ৪৪ হাজার ৩৮৭ জন ভোটারাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ৭৯ হাজার ৭৩৯ ও মহিলা ভোটার ২ লাখ ৬৪ হাজার ৬৪৮ জন।

মিরসরাই উপজেলায় ৯ ইউনিয়নে ভোটার রয়েছেন এক লাখ ৫১ হাজার ৭৩৮ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৭৬ হাজার ৪৭৪ ও মহিলা ভোটার ৭৫ হাজার ২৬৪ জন। ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৮১টি ভোটকেন্দ্র। ভোটকক্ষ রয়েছে ৩৭১টি। অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র ৪ ও অস্থায়ী ভোটকক্ষ ৮৯টি। সীতাকুণ্ড- উপজেলার ৯ ইউনিয়নে ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৪৭ হাজার ৫৮৬ জন। পুরুষ ভোটার ১ লাখ ৩১ হাজার ৯২৩ ও মহিলা ভোটার এক লাখ ১৫ হাজার ৬৬৩ জন।

ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৮৮টি। ভোটকক্ষ রয়েছে ৫০৭টি। অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র ২০টি ও অস্থায়ী ভোটকক্ষ ৮৪টি। সন্দ্বীপ উপজেলায় ১২ ইউনিয়নে ভোটার রয়েছেন সন্দ্বীপের মোট ভোটার ১ লাখ ৪৪ হাজার ৯০৬ জন। পুরুষ ভোটার ৭০ হাজার ৯৮২ ও মহিলার ভোটার ৭৩ হাজার ৯২৪ জন। ভোটকেন্দ্র ১২২টি ও ভোটকক্ষ ৬১২টি। অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র ৪ ও অস্থায়ী ভোটকক্ষ ২৪টি। মোট ভোটকেন্দ্র ১৪৯০টি। অস্থায়ী ভোটকেন্দ্র ২৮টি ও অস্থায়ী ভোটকক্ষ ১৯৭টি।

আওয়ামীলীগ বিএনপির বাইরে জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট এবং ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোট ৫জন প্রার্থী ৩টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতায় আছেন।

চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিসার খোরশেদ আলম জানান, চট্টগ্রামের তিন উপজেলায় মোট ৫১ জন সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। ৩০টি ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৮৩ জন, সংরক্ষিত ওয়ার্ড সদস্য (নারী) পদে ২০৮ জন ও সাধারণ সদস্য পদে ৭৯৪ জনসহ সর্বমোট ১০৩৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

||আপডেট: ০২:৪০  অপরাহ্ন, ৩১ মার্চ ২০১৬, বৃহস্পতিবার

চাঁদপুর টাইমস /এমআরআর

Share