আড়াই’শ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে দীর্ঘ ৭ বছর ধরে নেই কোন চক্ষু চিকিৎসক। যার কারনে গত ৭ বছর ধরে হাসপাতালটিতে চক্ষুচিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত সাধারণ রোগীরা। প্রতিদিনই চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সাধারণ রোগীরা চোখের নানা সমস্যা নিয়ে সরকারি এ হাসপাতালটিতে ডাক্তার দেখাতে আসেন। কিন্তু চক্ষু চিকিৎসকের পদ শূন্য থাকায় চিকিৎসা সেবা না পেয়ে ব্যর্থ মনে ফিরে যাচ্ছেন রোগীরা।
জানা যায়, ২০১৫ সাল থেকে হাসপাতালের চোখের ডাক্তারের পদটি শূন্য হয়ে পড়ে। গত ৭ বছর আগে ওই পদে দায়িত্বে থাকা ডাঃ মনোজ কান্তি বড়ুয়া চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর থেকে সে পদটি আজো শূন্য পড়ে রয়েছে। আর স্বাস্থ্য সেবায় এই গুরুত্বপূর্ন পদটি শূন্য থাকায় চোখের চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারন মানুষজন।
সরজমিনে দেখা গেছে প্রতিদিনই জেলার এই সরকারি হাসপাতালটিতে চোখের চিকিৎসাসেবা নেয়ার জন্য চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বহু রোগী হাসপাতালে যান। কিন্তু চোখের ডাক্তার না থাকায় তারা সেই সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে ব্যর্থ মনে ফিরে যেতে হচ্ছে।
আরও পড়ুন… চাঁদপুরে দুই বছর ধরে বন্ধ এক্সরে ও আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগ, রোগীদের ভোগান্তি
ডাক্তার মনোজ কান্তি বড়ুয়া অবসর নেয়ার পর থেকেই এ পদে চিকিৎসক নিয়োগ দেয়ার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করেও কোন কাজ হয়নি বলে জানা গেছে। যদিও ২/৩ বছর পূর্বে একজন নারী চক্ষু চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু তিনি ২/৩ মাস দায়িত্ব পালনের পর সেখান থেকে অনত্র বদলী হয়ে যান। সেই থেকে হাসপাতালে এই চক্ষু চিকিৎসক পদগুলো শূন্য পড়ে থাকে।
তাই সে চক্ষু চিকিৎসক শূন্য পদেই চলছে হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসা সেবা। এছাড়াও আরো বেশ কিছু পদ শূন্য পড়ে আছে বলে জানা গেছে।
শুধু চক্ষু চিকিৎসকই নয়, এর পাশাপাশি গত ৬ বছর ধরে বন্ধ রয়েছে ডিজিটাল এক্সরে ও আল্টাসনোগ্রাম বিভাগটিও। হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ওই বিভাগটিতে রেডিওলজিস্ট ও কনসালটেন্ট পদে দু,চিকিৎসক কর্মরত ছিলো। তাদের পদোন্নতি হওয়ার পর গত ৬ সেপ্টেম্বর থেকে হাসপাতালের নিচতলায় অবস্থিত আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগটির কার্যক্রম সম্পর্ণ ভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
যার ফলে জেলার বিভিন্ন স্থানও জেলার বাইরে থেকে আসা রোগীদের অনেক হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। সরকারি নিদিষ্ট খরছে হাসপাতালে আল্টাসনোগ্রাম করাতে না পেরে অধিক খরচ দিয়েই বাধ্যতামূলকভাবে বাহিরের ডায়াগনস্টিক গুলোতে আল্টাসনোগ্রাম ও ডিজিটাল এক্স-রে করাচ্ছেন রোগীরা।এর জন্যও রোগীদের ওই পরীক্ষাটি করাতে হাসপাতাল থেকে অন্য স্থানে আসা যাওয়ায় অনেক হয়রানির শিকার হচ্ছেন রোগীরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত দেড় বছর পূর্বে একজন চক্ষু চিকিৎসক নিয়োগ হলেও কয়েক মাস পর তিনিও পদোন্নতিলাভ করে অন্য স্থানে চলে যান। একারনে আজও শূন্য রয়েছে সরকারি এ হাসপাতালটির চক্ষু বিশেষজ্ঞ পদটি। এদিকে আল্ট্রাসনোগ্রাম বিভাগটিই নয়, চিকিৎসক সংকটের কারণে হাসপাতালের আরও বেশকিছু চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন না রোগীরা।
কনসালন্টেট ও রেডিওলজিস্টের পাশাপাশি দীর্ঘ ৭ বছর ধরে চক্ষুচিকিৎসকের পদটিও শূন্য পড়ে আছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হাবিব উল করিম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পদটির বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আমরা একাধিক বার লিখিত ভাবে আবেদন করেছি। কিন্তু তাতেও কোন কাজ হয়নি। এ পদে বিশেষজ্ঞ না পাওয়ার কারণে উর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষও এই পদে কোন চিকিৎসক নিয়োগ দিতে পারছেন না। আমরা আবারো নতুন করে এই পদে লোক নিয়োগ দেয়ার জন্য লিখিত আবেদন করবো।
প্রতিবেদক:কবির হোসেন মিজি,২৩ জুন ২০২১